Published : 22 Oct 2024, 01:32 PM
নিজের মধ্যে ডুবে থাকি, ব্রহ্মাণ্ডকে মনে হয় এক বিশাল আয়না, অনন্ত এক মহাশূন্যের সামনে কোনো দৃশ্য নেই, যেন অকূল অতল এক সমুদ্র, পাল তোলা সারি সারি জ্যোতিষ্ক ভাসে ঢেউয়ের তালে তালে, দূর এক দ্বীপ বলে মনে হয় পৃথিবীকে, কিছুটা সবুজ প্রাণের স্পন্দন কোলাহল নারকেল বাগানে বাতাস বয়ে যাওয়ার ন্যায়;
আকাশ আলো
আঁধার দূরে
আদ্যন্ত
নিঃশব্দ
ছুটছে তারা
যাদুর ঘোড়া
অথৈ শূন্যতার মাঝে ছোটো এক দ্বীপ, ঝড়ের আগে সব বাসিন্দা চলে গেছে, মহাজাগতিক যান আমাকে একা ফেলে রেখে গেছে, নাকি আমিই থেকে গেলাম এই মায়াবি পৃথিবীর টানে? মহুয়া ফুলের ঘ্রাণে যেমন নবীন মৌমাছি ছোটে দিশাহীন;
আয় ঝড় আয়
আন সব ভাং
পান কর পান
তিন তাল ধায়
ভাঙ মন ভাঙ
ঘর খান খান
এসো হে ধ্বংসকারী মহাশক্তিধর, কেটে যাক নেশার ঘুম, ধারাল আঘাত হোক আরশ-আসনে, কাপালিক জাগে দেখো কুমারী শবের উপাসনায়, মৃত আকাঙ্ক্ষা অগোচরে নতুন পাতা গজানো কোনো মুহূর্ত দেখে জেগেছিল যে, সেই অরূপ ফিরেছে কুরূপে, তবে তো বিফল এই শবসাধনা, দ্বীপে কি একা সেই অভিশপ্ত কাপালিক?
ক্ষণিক বাঁচা
তড়িৎ আঁকা
মনন মেশা
সৃজন নেশা
অমর তৃষা
আমি কাপালিক আবার আমিই শব, আমারই উপাসনা করি আমি, জ্ঞানবৃক্ষের ধোঁয়া মেশে ধূপের ধূম্রে, কোথা সে অবিরল বর্ষা ধারা, প্রচণ্ড খরায় মাটি ফেটে খা খা, পতঙ্গ উড়ে যায় আলোর লোভে লোভে, হান তবে মা কালী খড়্গ আঘাত, আমারেই বধ করে রক্ত ঝরনা নামা পর্বতে;
মরণ হরণ
তাড়ণ কারণ
ধরন ধারণ
পাষাণ হৃদয়
স্বরূপ কুরূপ
আসুক রক্ত ঝড় দক্ষিণের বাতাসে, গজাক নতুন বৃক্ষ নরম মাটিতে, শাখায় শাখায় ফুটুক ফুলফল, শস্যে ভরে যাক দ্বীপের আলো ছায়, নতুন দিন তবু নতুন দিন, আসুক আসে যদি আত্ম বিসর্জনে, আমি তো চেয়েছি সামান্য দান, মহাশূন্যের কোলে একটু ঠাঁই, যদি তা না পাই, তবে তো মিছে সব, কি আর হবে বলো মিথ্যা প্রার্থনায়?
কিশোরী কুমারী
ললাটে সিঁথিতে
রক্ত লালিমা
যদিও আসেনা
তীব্র ঘ্রাণেতে
ওঠ মা, ওঠ শব ছেড়ে, জেগে দেখ অপরূপ দিদ্ধেশ্বরী, কাপালিক তোরই সাধক, বধ করে অমর কর, মরেই তো অমর সব, যদি না কৃপা করো, সুখ চাই না মা, দুঃখের আগুনে পুড়িয়ে ছাই বানাও, সেই তো সারাৎসার, হাজার কথার ভিরে একটি বাক্য যেমন, কবিতা- সেই তো সত্যিকার, সেই যে গিলগামেশ, পিছন ফিরেই তো মরে অমর;
নানান কথায়
হাজার ভাষায়
বিবিধ জনায়
পরাল গলায়
কুসুম কোমল
কবিতা সুঘ্রাণ
এই তো এলো ঝড়, তীব্র ঢেউ ভেঙে তীরে আছড়ে পড়ে, ঠাণ্ডা বাতাসে গরম গন্ধ, বজ্র মেঘ বুঝি আঘাত করে, শক্তি হানে যুদ্ধের শেল সম, ভাঙে সব দীর্ঘ বৃক্ষ, উড়ে যায় যত তৃণলতা, পাখপাখালি সব মরে ছাড়খাড়, আকাশে চোখ এক রাগত নরকের, কাঁপল দ্বীপ শুধু ভয়ে ভয়ে, মরল নাকি সব জীবপ্রাণ;
মত্ত মাতা
রক্ত ছায়া
শক্ত বাসা
পোক্ত নেশা
ভক্ত ধাঁধা
তবু তো কাপালিক রইল বেঁচে একা; মারণ নেশা তার ঘুচল না, বৃষ্টি থেমে গেলে ফিরল উল্কাযান, দ্বীপের মানুষেরা গড়ল নতুন ঘর, পুষল নতুন পাখি গৃহের নতুন খাঁচা, কাপালিক ছাড়ল দ্বীপ নুতন গ্রহের খোঁজে, সাঁতরে সাঁতরে মহাশূন্যে ক্লান্ত শরীর ডুবল অনন্তে;
কালো কৃষ্ণ
গভীর গর্ত
মহা শক্তি
বজ্র ভীষণ
তবু আঁধার
এলো শুধু
পিশাচ দানব
ফিনিক্স পাখি তবু রইল বেঁচে, হাইড্রা সেও টিকে থাকে, মাকড়সা খোলস ভেঙে নতুন জীবন পায়, তিথোনস আজো গান গেয়ে চলে, গাছের বীজ থেকে গজায় নতুন চারা, শুঁয়োপোকা মরতে গিয়ে উড়তে শেখে, গালাতেয়া সেও প্রাণ পেয়ে হেসে ওঠে, শুধু সময় একবার মুঠ খুললে আর ফিরে আসে না;
জ্যোতিষ্ক
ছায়াপথ
রঙিন
বুদবুদ
নিষ্প্রভ
নিশ্চল