Published : 27 May 2025, 11:53 AM
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে ‘অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্রের’ মামলায় সাত বছরের সাজার রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলের রায়ে খালাস পেয়েছেন দৈনিক যায়যায়দিনের সম্পাদক শফিক রেহমান।
ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ তারিক এজাজ মঙ্গলবার এ রায় ঘোষণা করেন বলে শফিক রেহমানের আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ জানান।
সাংবাদিক শফিক রেহমান এদিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন; তার উপস্থিতিতে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
২০২৩ সালের অগাস্টে এ মামলার রায়ে যায়যায়দিন সম্পাদক শফিক রেহমান, আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানসহ পাঁচজনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
তাদের মধ্যে মাহমুদুর রহমান গত ১০ ফেব্রুয়ারি খালাস পেয়েছিলেন। এবার শফিক রেহমানকেও খালাস দেওয়া হল।
বাকি তিনজন হলেন– জাতীয়তাবাদী সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সহসভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুন, তার ছেলে রিজভী আহাম্মেদ ওরফে সিজার এবং যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ভূঁইয়া।
জয়ের গোপন তথ্যের জন্য এফবিআইএর এক কর্মকর্তাকে ঘুষ দেওয়ার অপরাধে আট বছর আগে সিজারকে সাজা দেয় নিউ ইয়র্কের একটি আদালত। এরপর ২০১৫ সালের ৩ অগাস্ট পল্টন মডেল থানায় এ মামলা করেন ডিবি পুলিশের তৎকালীন পরিদর্শক ফজলুর রহমান।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরের আগে থেকে মামলা হওয়ার সময় পর্যন্ত জাসাসের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনসহ বিএনপি ও দলটির নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত অন্য দলগুলোর উচ্চপর্যায়ের নেতারা রাজধানীর পল্টনের জাসাস কার্যালয়ে, যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরে, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় একত্রিত হয়ে সজীব ওয়াজেদ জয়কে ‘অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্র’ করেন।
তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১২ জন আদালতে এসে সাক্ষ্য দেন।
২০২৩ সালের ১৭ অগাস্ট ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আসাদুজ্জামান নুর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে শফিক রেহমানসহ পাঁচজনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত।
এ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর ২০১৬ সালে পাঁচ মাস কারাগারেও থাকতে হয়েছিল শফিক রেহমানকে। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর ২০১৮ সালে যুক্তরাজ্যে চলে যান তিনি।
ছয় বছর পর যুক্তরাজ্য থেকে গত ১৮ অগাস্ট দেশে ফেরেন শফিক রেহমান। ২২ সেপ্টেম্বর শফিক রেহমান ও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ভূঁইয়ার সাজা এক বছরের জন্য স্থগিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এরপর ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন শফিক রেহমান। সাজার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়েরের শর্তে আদালত তার বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহার করে নেয়। সেইসঙ্গে সাজা পরোয়ানাও স্থগিত করা হয়।
এরপর ২১ নভেম্বর আত্মসমর্পণ করে জামিন পান শফিক রেহমান। গত ২৭ এপ্রিল আপিল শুনানি শেষে আদালত রায়ের জন্য ২৭ মে দিন ধার্য করে দেয়।
সেদিন শফিক রেহমানের পক্ষে শুনানি করেন সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ। এ মামলাকে ‘মিথ্যা ও হয়রানিমূলক’ হিসেবে বর্ণনা করে তার মক্কেলের খালাস চান তিনি।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মদ খলিলুর রহমান (খলিল) বলেন, “রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা। তিনি (শফিক রেহমান) একজন প্রথিতযশা সাংবাদিক। খালাস দিলে আমাদের আপত্তি নেই।”
পুরনো খবর
জয়কে অপহরণ-হত্যাচেষ্টা মামলা: শফিক রেহমানের খালাসে ‘আপত্তি নেই’ রাষ্ট্রপক্ষের
হাসিনাপুত্র জয়কে 'হত্যাচেষ্টার' মামলায় শফিক রেহমানের জামিন
জয়কে 'হত্যার ষড়যন্ত্র': শফিক রেহমান, মাহমুদুর রহমানের ৭ বছরের সাজা