Published : 07 Apr 2025, 07:59 PM
যুদ্ধাপরাধের দায়ে ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আইনে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর দাবি জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
সোমবার বিকালে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন ও ভারতের পার্লামেন্টে ওয়াকফ সংশোধনী বিল প্রস্তাবের বিরুদ্ধে’ বিক্ষোভ মিছিলের আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
এনসিপির ঢাকা মহানগর ইউনিট আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলটি সমাবেশের পরে জাদুঘর থেকে শুরু হয়ে বাংলামোটরে এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে আখতার বলেন, “প্যালেস্টাইন রাষ্ট্রকে আন্তর্জাতিকভাবে মুক্ত, স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে যেন স্বীকৃতি দেওয়া হয়, এই আহ্বান আমরা বিশ্বের সবকয়টি দেশ এবং সম্প্রদায়ের কাছে রাখতে চাই। আমরা বিশ্বাস করি, বিশ্বের প্রত্যেকটি মানবতাবাদী শক্তি প্যালেস্টাইনের যে স্বাধীনতা সংগ্রাম, সেই সংগ্রামের প্রতি তাদের অকুণ্ঠ সমর্থন ব্যক্ত করবে।”
তিনি বলেন, “বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় মানবতা আজ যখন ভূলুণ্ঠিত, ঠিক সেই সময়ে বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ হয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি রাজপথে এসে দাঁড়িয়েছে।
“আমরা খেয়াল করে দেখেছি, সম্প্রতি ভারতে যে ওয়াকফ সংশোধনী বিল পাস করা হয়েছে, সেই সংশোধনীর ভেতর দিয়ে ভারতের মুসলমানদের সম্পত্তি এবং দাতব্য সম্পত্তিগুলোকে রাষ্ট্রীয়ভাবে মুসলমানদের হাত থেকে কেড়ে নিয়ে সেগুলোকে মুসলমানদের লাঞ্চনার, নিপীড়নের ক্ষেত্র হিসেবে তৈরি করেছে ভারত সরকার।
এনসিপির সদস্য সচিবের অভিযোগ, “বিশ্ববাসী আপনারা দেখুন, ভারতে যে সংখ্যালঘু মুসলমান আছে, তাদের উপর ভারতের সরকারি দলের যে নিপীড়ন চলছে, এই নিপীড়ন যদি চলতে থাকে, পৃথিবীর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা কোনোভাবেই শান্তি ফিরে পাবে না।”
বিশ্বের মুসলমানদের এক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “রাখাইনে মুসলমানদের উপর যে নির্যাতন চলেছে, ভারতে, ফিলিস্তিনে চলেছে, এই নির্যাতন সারা বিশ্বের মুসলিমদের এক হওয়ার বার্তা দেয়।”
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি গণহত্যার কথা তুলে ধরে এনসিপির এই নেতা বলেন, “বর্তমানে সবচাইতে বেশি মানবতাবিরোধী কার্যক্রম এবং ধ্বংসজজ্ঞ আমরা খেয়াল করেছি, তা সংঘটিত হচ্ছে পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মুসলিম জনগোষ্ঠী–ফিলিস্তিনের মাটিতে। আমরা দেখি, মধ্যপ্রাচ্যে… ইসরায়েল মানবতাবিরোধী অপরাধের চূড়ান্ত সীমা লঙ্ঘন করেছে। সেখানকার স্কুল, কলেজে, সেখানকার হসপিটালগুলোতেও তারা হামলা করেছে।
“আমরা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বলতে চাই, যতদিন পর্যন্ত না প্যালেস্টাইনের স্বাধীনতা আসে, স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া না হয়, সেখানের মানুষ গণহত্যা থেকে মুক্তি না পায়, ততদিন পর্যন্ত আমাদের স্বাধীনতার শপথ-ইসরায়েলের সাথে বাংলাদেশের কোনো বন্ধুত্ব হতে পারে না।”
আখতার হোসেন বলেন, “ইসরায়েলের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে বাংলাদেশে গোয়েন্দা তৎপরতার জন্য যেসব যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছে, আমরা মনে করি, এসব যন্ত্রপাতি বাংলাদেশের স্বার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকিস্বরুপ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতি চূড়ান্ত অসম্মান ব্যক্ত করে।
“গোপনে হোক বা প্রকাশ্যে হোক, পতিত শেখ হাসিনা সরকার ইসরায়েলের সঙ্গে যে ধরনের চুক্তি করে থাকুক না কেন, প্রত্যেকটি চুক্তিকে অনতিবিলম্বে বাতিল ঘোষণা করতে হবে।”