Published : 27 May 2025, 12:18 PM
যুদ্ধাপরাধ মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিল করে জামায়াতে ইসলামীর নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের বেকসুর খালাস পাওয়ার ঘটনায় ‘ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত’ হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
সুযোগ তৈরির এই কৃতিত্ব ‘জুলাই আন্দোলনের নেতাদের’ মন্তব্য করে মঙ্গলবার ফেইসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন আইন উপদেষ্টা।
আসিফ বলছেন, “নির্দোষ প্রমাণ হওয়ায় মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে খালাস পেয়েছেন জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম। দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে তাঁর করা রিভিউ সর্বসম্মতিতে মঞ্জুর করেছেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগ। আজহারুলকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় এবং মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে এর আগে আপিল বিভাগের দেওয়া রায় বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে আজকের রায়ে।"
আসিফ নজরুল বলেছেন ‘ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত’ হওয়ার যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, সেটি রক্ষা করার দায় এখন ‘সবার’।
ছয় বছরের ব্যবধানে দ্বিতীয়বার আজহারের আপিল শুনে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের সাত বিচারকের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ মঙ্গলবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে তাকে বেকসুর খালাস দিয়ে এ রায় দেয়।
জুলাই অভ্যুত্থানে সরকার বদলের পর পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে এই রায় এল। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের কোনো মামলায় রিভিউ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপিলে এই প্রথম কেউ খালাস পেলেন।
রায়ের পর আদালত প্রাঙ্গণে উল্লাস প্রকাশ করেন আইনজীবীরা। শোনা যায় জামায়াতে ইসলামীর নারায়ে তাকবির ধ্বনী।
আজহারের আইনজীবী মো শিশির মনির তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “এই রায়ের মধ্য দিয়ে সত্য জয়ী হয়েছে, মিথ্যা পরাজিত হয়েছে।”
রায়ের সময় রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক। রায়ের পর তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা, হত্যা, অপহরণ, নির্যাতনের ছয় ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করে ২০১৪ সালে আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ২০১৯ সালে প্রথমবার আপিল শুনানি করে সেই রায় বহাল রেখেছিল তখনকার আপিল বেঞ্চ।
ওই দুই রায় বাতিল করে এখনকার আপিল বিভাগ বলেছে, যে সমস্ত তথ্য প্রমাণ এই মামলায় ছিল, তা অতীতের আপিল বিভাগ ‘সঠিকভাবে বিবেচনা করতে ব্যর্থ হয়েছে’।
২০১২ সালের ২২ অগাস্ট মগবাজারের বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন জামায়াতে ইসলামীর তখনকার সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলাম। তখন থেকেই তিনি কারাগারে আছেন।
আপিল বিভাগের রায়ে এ টি এম আজহারকে তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অন্য কোনো মামলা না থাকলে তাকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে বলেছে সর্বোচ্চ আদালত।