Published : 01 Jun 2025, 08:00 PM
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের উৎসব ভাতা বাড়ানো হলেও কর্মচারীদের ভাতা বাড়ানো হয়নি; এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন তারা।
রোববার রাজধানীর আবদুল গণি রোডে শিক্ষা ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে তারা উৎসব ভাতা না বাড়ানোর প্রতিবাদ ও তাদের মূল বেতনের শতভাগ উৎসব ভাতা দেওয়ার দাবি জানান।
গত ২৬ মে অর্থ বিভাগের এক আদেশে বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের উৎসব ভাতা বাড়ানোর ঘোষণা আসে। এখন শিক্ষকরা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ উৎসব ভাতা পাবেন।
২০০৪ সাল থেকে তারা মূল বেতনের ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা পেয়ে আসছিলেন। তবে এমপিওভুক্ত কর্মচারী যারা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ উৎসব ভাতা পাচ্ছেন, তাদেরটা বাড়ানো হয়নি।
এর প্রতিবাদে রোববার শিক্ষা ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করে বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী পরিষদ।
পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান ওরফে আদনান হাবিব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সরকারি কর্মচারী তার মূল বেতনের শতভাগ উৎসব ভাতা পান। আর একজন এমপিওভুক্ত কর্মচারী তার মূল বেতনের মাত্র ৫০ শতাংশ বা অর্ধেক উৎসব ভাতা পান।
“২০০৪ সালে চারদলীয় জোট সরকারের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এমপিওভুক্ত কর্মচারীদের বেতন কম হওয়ায় মানবিক দিক বিবেচনা করে শিক্ষকদের মূল বেতনের ২৫ এবং কর্মচারীদের মূল বেতনের ৫০ শতাংশ উৎসব ভাতা দেওয়া শুরু করেছিলেন, যাতে কম বেতন পাওয়া এমপিওভুক্ত কর্মচারীরা উৎসব ভাতা একটু বেশি পেয়ে পুষিয়ে নিতে পারেন। কিন্তু এবার এমপিওভুক্ত কর্মচারীরা সেখানেও বৈষম্যের শিকার হয়েছেন।”
তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ১৬ হাজার টাকা ও ২২ হাজার টাকা স্কেলে বেতন পাওয়া শিক্ষকদের উৎসব ভাতা মূল বেতনের ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করেছে। তাতে করে শিক্ষক মহোদয়দের ঈদ উৎসবের কষ্ট অন্তত একটু হলেও লাঘব হয়েছে, কিন্তু দুঃখ ও ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলতে হচ্ছে, আমরা কি ঈদ উৎসব করব না?
“৮২৫০ থেকে ৯৩০০ টাকা বেতনে কর্মরত দুই লক্ষাধিক কর্মচারী বর্তমান বাজারে মূল বেতনের ৫০ শতাংশ উৎসব ভাতা দিয়ে কীভাবে ঈদ করবেন? নিম্ন গ্রেডে বেতনভুক্ত এমপিওভুক্ত কর্মচারীরা ২১ বছর ধরে পাওয়া ৫০ শতাংশ উৎসব ভাতা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কেন বৃদ্ধি করল না? তাহলে কি ধরে নেব আমরা এদেশের নাগরিক না?”
অবস্থান কর্মসূচিতে পরিষদের পক্ষ থেকে এমপিওভুক্ত কর্মচারীদের মূল বেতনের শতভাগ উৎসব ভাতা দেওয়ার দাবি জানানো হয়। একইসঙ্গে বেতন বাড়ানো, চিকিৎসা ভাতা, বাড়িভাড়া বাড়ানোর দাবিও তোলা হয়।
মো. হাবিবুর রহমান বলেন, “আমাদের দাবি ন্যায্য না হলে, দয়া করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে এমপিওভুক্ত কর্মচারীদের খবর নিন; তারা কী মানবেতর জীবন যাপন করছে তা অনুধাবন করুন।”
অবস্থান কর্মসূচি শেষে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী পরিষদের পক্ষ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।