Published : 18 Jun 2025, 12:58 AM
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের জুলাই-অগাস্টের গণ অভ্যুত্থানের নামে মিথ্যা তথ্য দিয়ে কেউ ‘শহীদ’ পরিবার বা আহতদের প্রাপ্য সুবিধা নিলে জেল ও জরিমানার বিধান রেখে অধ্যাদেশ জারি করেছে সরকার।
মঙ্গলবার রাতে জারি করা এ অধ্যাদেশে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড এবং দুই লাখ টাকা জরিমানা বা নেওয়া সুবিধা বা আর্থিক সহায়তার দ্বিগুণ পরিমাণ জরিমানা করার বিধান রাখা হয়েছে।
অপরদিকে অধ্যাদেশে আহত ও ‘শহীদদের’ এককালীন ও মাসিক আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি পুনর্বাসনের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
আর আহত ব্যক্তি ও ‘শহীদ’ পরিবারগুলোর কল্যাণ ও পুনর্বাসনের জন্য প্রতিষ্ঠিত ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তরকে’ এ অধ্যাদেশের অধীনে আনা হয়েছে।
সরকারি চাকরির কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জুলাইয়ের শেষ দিকে সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় প্রবল গণ আন্দোলনের মুখে গত ৫ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান; আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে।
এর তিন দিনের মাথায় ৮ অগাস্ট মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেয়। এর পর আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা, হতাহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নেয় সরকার।
‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ শিরোনামে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ অধ্যাদেশ জারি করে।
এর আগে গত ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জুলাই অধিদপ্তর করার উদ্দেশ্য তুলে ধরে সরকার। এরপর ১২ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর’ করে গেজেট প্রকাশ করা হয়।
অধ্যাদেশের ১৫ ধারায় বলা হয়েছে, “যদি কোনো ব্যক্তি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য বা যে কোনো শ্রেণির আহত জুলাই যোদ্ধা না হওয়া সত্ত্বেও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা জ্ঞাতসারে কোনো মিথ্যা বা বিকৃত তথ্য প্রদান বা তথ্য গোপন করে বা বিভ্রান্তিকর কাগজাদি দাখিল করে নিজেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য বা আহত জুলাই যোদ্ধা দাবি করে কোনো চিকিৎসা সুবিধা বা আর্থিক সহায়তা বা পুনর্বাসন সুবিধা দাবি করেন বা গ্রহণ করেন- তাহলে তিনি অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবে। এক্ষেত্রে তাকে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড এবং দুই লাখ টাকা জরিমানা বা নেওয়া সুবিধাবা আর্থিক সহায়তার দ্বিগুণ পরিমাণ জরিমানা দিতে হবে।”
তবে এই আইনের অপরাধ ’অ-আমলযোগ্য (নন-কগনিজিবল) ও জামিনযোগ্য’ বলে অধ্যাদেশের ১৬ ধারায় বলা হয়েছে।
অধ্যাদেশের ১৩ ধারায় বলা হয়েছে, ”জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য এবং সব শ্রেণীর আহতরা নির্ধারিত হারে এককালীন ও মাসিক আর্থিক সহায়তা পাওয়ার অধিকারী হবেন। তাদের পুনর্বাসনের বিষয়টিও অনুরূপ বিধি দ্বারা নির্ধারিত হবে।”
অধ্যাদেশে, জুলাই আহতদের অতি গুরুতর, গুরুতর ও আহত–এই তিন ক্যাটেগরিতে ভাগ করার কথা বলা হয়েছে।