Published : 12 May 2025, 01:20 PM
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে টানা তিনদিন ঢাকার শাহবাগ মোড় অবরোধ থাকার পর কোনো আন্দোলনের জন্য সড়ক বন্ধ না করতে অনুরোধ করেছে পুলিশ।
সোমবার ঢাকা মহানগর পুলিশ এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, বিভিন্ন দাবি-দাওয়া আদায়, প্রতিবাদ কর্মসূচি ইত্যাদি নামে রাজধানীতে সম্প্রতি যখন-তখন সড়ক অবরোধের কারণে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে করে স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী ও অফিসগামী যাত্রীরা নানা ‘বিড়ম্বনার’ পড়ছেন এবং বিদেশগামী যাত্রী ও জরুরি প্রয়োজনে অসুস্থ রোগী পরিবহনে ‘মারাত্মক ব্যাঘাত’ সৃষ্টি হচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “যানজট কমানোর জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ প্রাণান্তকর চেষ্টা করছে, তথাপি, কারণে-অকারণে রাস্তা অবরোধ করার মতো ঘটনায় সৃষ্টি হচ্ছে ব্যাপক জনদুর্ভোগ।
নগরবাসীর ‘বৃহত্তর স্বার্থে’ এবং ‘সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার’ জন্য ‘অহেতুক’ সড়ক অবরোধ করা থেকে বিরত থাকতে সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে ডিএমপি।
এরমধ্যেই সোমবারও শাহবাগ মোড় অবরোধ হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন শাহবাগ থানার ওসি মো. খালিদ মনসুর।
তিনি বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বলেন, “এখন পর্যন্ত শাহবাগ মোড়ে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। কিন্তু জুলাই আন্দোলনে আহতদের একটি গ্রুপ শাহবাগ জাদুঘরের সামনে অবস্থানে রয়েছেন। তারা মোড়ে যেতে পারেন, আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলছি।”
সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশত্যাগের খবর নিয়ে আলোচনার মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ ডাকে সরকারপ্রধানের বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান নেন একদল বিক্ষোভকারী।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ডাকা এ কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে জামায়াতে ইসলামী, এবি পার্টি, ইসলামী ছাত্রশিবির, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, হেফাজতে ইসলাম ও বৈষম্যবিরোধী অভ্যুত্থানে সম্পৃক্ত বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
শুক্রবার জুমার পর তারা মিন্টো রোডের প্রবেশ মুখে মঞ্চ বানিয়ে সেখানে সমাবেশ করেন। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন হাতে তাতে অংশ নেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।
সেখান থেকে এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ শাহবাগ অবরোধের ঘোষণা দেওয়ার পর বিকাল থেকেই বিক্ষোভকারী শাহবাগে অবস্থান নেন।
শনিবার বিকালে সেখানে গণজমায়েত থেকে আবারও ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানানো হয়।
শাহবাগে গণজমায়েত কর্মসূচি চলার মধ্যে মিরপুর সড়কের শিশুমেলা মোড়ে সড়ক অবরোধ করেন জুলাই আন্দোলনে আহতরা।
শনির আখড়াতেও একই দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীরা।
রাতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক থেকে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত আসে।
এরপর জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি, জামায়াতে ইসলাম, আপ বাংলাদেশসহ জুলাই আন্দোলনে সম্পৃক্ত সংগঠনগুলো শাহবাগ ছেড়ে গেলেও জুলাই আন্দোলনের আহতদের একটি দল রোববার শাহবাগ মোড়ে অবরোধ অব্যাহত রাখে।
আওয়ামী লীগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ, জুলাই সনদ প্রকাশ ও আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার দাবিতে সোমবারও শাহবাগ এলাকায় তাদের উপস্থিতি রয়েছে।