Published : 29 May 2025, 10:29 PM
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানকে রাজস্ব ভবনে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেছে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’।
চেয়ারম্যানকে সরাতে বেঁধে দেওয়া তিন দিনের মধ্যেও সেটি না করায় বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তাকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণার কথা বলেছে ঐক্য পরিষদ।
এনবিআরকে দুই ভাগ করার অধ্যাদেশ নিয়ে আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবি জানিয়ে আসছেন। দাবি আদায়ে তার সঙ্গে ‘অসহযোগ’ কর্মসূচি পালন করছেন। সবশেষ ২৬ মে থেকে তিন দিনের মধ্যে তাকে অপসারণে সময় বেঁধে দেন তারা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “আমাদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে প্রতি পদে পদে বাধা সৃষ্টিকারী, প্রসেস টেম্পারিং ও সকলের অগোচরে রাষ্ট্রীয় রাজস্ব ব্যবস্থাপনার মূল কাঠামো ধ্বংসের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী এই চেয়ারম্যানের হাতে প্রকৃত সংস্কার কার্যক্রম হুমকির মুখে, বিধায় আমরা আশা করছি সরকার অবিলম্বে এ বিষয়ে (অপসারণের) চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।”
চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ তুলে ধরে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “বর্তমান চেয়ারম্যানের প্রতি বিশ্বাস ও আস্থার চরম সংকট সৃষ্টি হওয়ায় তাকে অপসারণের দাবি ধারাবাহিকতায় ইতোপূর্বে ঘোষিত লাগাতার অসহযোগ কর্মসূচি যথারীতি অব্যাহত আছে ও থাকবে। আপনারা ইতোমধ্যে অবগত আছেন যে, জারিকৃত অধ্যাদেশের খসড়া প্রস্তুতির প্রক্রিয়ার শুরু থেকে প্রতিটি ধাপে এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যান লুকোচুরির আশ্রয় নিয়েছেন ও চরম অসহযোগিতা করেছেন। সরকারকে ভবিষ্যৎ রাজস্ব কাঠামো নিয়ে এনবিআরের কর্মকর্তাদের আশা ও আকাঙ্ক্ষার কথা জানানোর ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন।
“বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে সুবিধাভোগী প্রশাসনের এই কর্মকর্তা তার পূর্ববর্তী পদে থাকা অবস্থায় ব্যাংকিং খাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিসহ জুলাই পরবর্তী সময়ে নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে কর ফাঁকি বিষয়ে সহযোগিতা করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অডিট কার্যক্রম বন্ধ করেন। এছাড়া নজিরবিহীনভাবে অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে অযৌক্তিক ও অপরিকল্পিতভাবে ভ্যাট হার বৃদ্ধির মাধ্যমে তিনি দেশের অর্থনীতিতে অস্থিতিশীলতা তৈরি করেন।”
গত ১২ মে রাতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) ভাগ করে ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। পরদিন থেকে তা বাতিলের দাবিতে অবস্থান ও কলমবিরতি কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন দেশের প্রধান রাজস্ব আহরণকারী সংস্থাটির কর্মীরা।
তাদের আন্দোলনের মুখে অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, এনবিআর বিলুপ্ত নয়, বরং এ প্রতিষ্ঠানকে ‘স্বাধীন ও বিশেষায়িত’ বিভাগের মর্যাদায় উন্নীত করা হবে।
সেজন্য ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ওই অধ্যাদেশে সংশোধন করা হবে। এনবিআর, রাজস্ব সংস্কার বিষয়ক পরামর্শক কমিটি এবং ‘গুরুত্বপূর্ণ’ অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা মাধ্যমে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে বলে মন্ত্রণালয় প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
সরকার দাবি মানার আশ্বাস দিলে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতিসহ সকল কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন। তবে এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে তারা সময় বেঁধে দেন।