Published : 07 Jun 2025, 06:47 PM
রাজধানীতে কোরবানি হওয়া পশু চামড়া নিয়ে বিভিন্ন এতিমখানার প্রতিনিধি ও ফড়িয়াদের মধ্যে দর কষাকষি চলছে।
ঢাকার গুলশান-২, সায়েন্স ল্যাবসহ বিভিন্ন স্থান থেকে চামড়া সংগ্রহ করে থাকেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। এসব স্থানে ঈদের দুপুর থেকে চামড়া আসতে শুরু করে।
বিকালে গুলশান-২ মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, ট্রাকের পর ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে। এখান থেকে চামড়া যাচ্ছে পোস্তার আড়তে।
গরুর বড় চামড়া ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকা দরে কেনা হচ্ছে। বিভিন্ন এতিমখানার লোকজন ঠেলাগাড়িতে করে গুলশানের মোড়ে চামড়া এনে জড়ো করছে। দামাদামিতে বনিবনা হচ্ছে না বলে ট্রাকেও উঠছে না চামড়া।
১৫টি চামড়া বেচতে আসা আনসার আলী সিকদার বলেন, “বড় সাইজের একটা চামড়া আমরা কিনে এনেছি ৮০০ টাকায়। এখন যদি কিছু লাভ না হয়, তাহলে এখানে বিক্রি করে কী হবে?”
গরুর চামড়া মানভেদে ৬০০-৭৫০ টাকা দাম হাঁকছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। তবে তারা ছাগলের চামড়া নিতে চাইছেন না। কেউ কিনলে দাম হাঁকছেন ২৫-৫০ টাকা।
পোস্তাসহ বিভিন্ন স্থানের আড়তদার চামড়া সংগ্রহ করে লবণ মিশিয়ে তা সংরক্ষণ করেন। এরপর লবণ মেশানো চামড়া যায় ট্যানারিতে।
ট্যানারি ব্যবসায়ীরা এবার ঢাকায় লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় কিনবেন; গত বছর এই দাম ছিল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা।
আর ঢাকার বাইরে লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম হবে ৫৫ টাকা ৬০ টাকা গতবছর যা ৫০ থেকে ৫৫ টাকা ছিল।
এছাড়া সারা দেশে লবণযুক্ত খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ২২ থেকে ২৭ টাকা দরে বিক্রি হবে ট্যানারিতে, যা গত বছর ছিল ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা। আর বকরির চামড়া প্রতি বর্গফুটের দাম ২০ থেকে ২২ টাকা, যা আগের বছর ছিল ১৮ টাকা থেকে ২০ টাকা।
ঈদে প্রতিটি চামড়া সংরক্ষণে ৬-৭ কেজি লবণ ব্যবহৃত হয়; এই সময়ে অপেশাদার শ্রমিক কাজ করায় লবণের পরিমাণ তুলনামূলক বেশি লাগে। চামড়া ট্রাক থেকে নামানো, আড়তে পৌঁছে দেওয়া বাবদ শ্রমিকরা প্রতি চামড়ায় ১০-১৫ টাকা পান।
গুলশানের মোড়ে একটি এতিমখানা থেকে এসেছে গরুর ১৫০টি চামড়া। পোস্তা থেকে যেসব ট্রাক এসেছে চামড়া নিতে, তারা বলছে, ৭০০-৭৫০ টাকার উপরে চামড়া নিয়ে পোস্তার আড়তে বিক্রি করা কষ্টকর হয়ে পড়ে।
এতিমখানার প্রতিনিধি জোনাব আলী বলেন, “বিকাল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত পোস্তায় নেওয়ার জন্য ট্রাকগুলো ৬০০-৬৫০ টাকায় চামড়া কিনেছে। এক ঘণ্টার ব্যবধানে এখন ৭০০-৭৫০ টাকায় দাম উঠেছে।
“অপেক্ষায় আছি সন্ধ্যায় দাম ৮০০-৮৫০ টাকা হয় কিনা। একটু লাভ হলে এতিমখানারই লাভ। সেজন্য এখন চামড়া ছাড়ছি না।
বাংলাদেশে সারা বছর যে সংখ্যক পশু জবাই হয়, তার মোটামুটি অর্ধেক হয় এই কোরবানির মৌসুমে। কোরবানি যারা দেন, তাদের কাছ থেকে কাঁচা চামড়া কিনে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বিক্রি করেন পাইকারদের কাছে।
পাইকাররা সেই চামড়ায় লবণ দিয়ে সংরক্ষণের প্রাথমিক কাজটি সেরে বিক্রি করেন ট্যানারিতে। ট্যানারি কেমন দামে চামড়া কিনবে, তা প্রতিবছর নির্ধারণ করে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।