Published : 14 Jun 2025, 01:31 AM
চার দিনের সফর শেষে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস দেশের পথে লন্ডন ছেড়েছেন।
শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে তিনি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন বলে তার দপ্তর জানিয়েছে।
লন্ডনে তার সফরের শেষ দিন শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টা বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন।
এ বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নির্বাচন এপ্রিলে থেকে এগিয়ে রোজার আগের করার বিষয়ে মত দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
বিবৃতিতে বলা হয়, ”তারেক রহমানের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ড. ইউনূস বলেছেন, প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালে রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহে দেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। তবে সেক্ষেত্রে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে যথেষ্ট অগ্রগতি অর্জন করা প্রয়োজন হবে।”
এ ব্ঠৈকের পর আগের সূচি অনুযায়ী যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়ন কার্যালয়ের (এফসিডিও) দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক বিভাগের প্রধান লেসলি ক্রেইগ তার সঙ্গে দেখা করেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বৃহস্পতিবার বিফ্রিংয়ে এ সফরের বিষয়ে বলেছেন, পাচার হওয়া অর্থ পুনরুদ্ধার এবার যুক্তরাজ্য সফরে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে।
এছাড়া সফরকালে মুহাম্মদ ইউনূস বৃহস্পতিবার 'কিং চার্লস তৃতীয় হারমনি অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ সম্মাননা গ্রহণ করেন। সারাজীবন মানুষের কল্যাণে কাজ করার স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে এই অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। এর আগে তিনি ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে বৈঠক করেন।
এছাড়া সরকারি এ সফরে প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাজ্যের হাউস অব কমন্সের স্পিকার ছাড়াও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করেন।
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে এ সফরের অর্জনের বলা হয়েছে, সফরকালে যুক্তরাজ্যের এনসিএ (ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি) ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একজন শীর্ষ সহযোগীর (সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ) ৩২০টি সম্পত্তি জব্দ করেছে। এনসিএ জানিয়েছে, এটি তাদের ইতিহাসে এককভাবে সবচেয়ে বড় সম্পদ জব্দের ঘটনা। এটি দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদদের জন্য একটি কড়া বার্তা। একইসাথে, এটি অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার যেভাবে বিদেশে লুন্ঠিত সম্পদ উদ্ধার করছে, তার একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত।
এছাড়া সফরকালে ব্রিটিশ মন্ত্রী, এমপি এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানসহ বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের একাধিক ফলপ্রসু বৈঠক হয়েছে।
এসব বৈঠক বৈশ্বিকভাবে সম্পদ পুনরুদ্ধারে আরও গভীর সহযোগিতার পথ খুলে দেবে বলে আশা করছে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর।