Published : 16 Jun 2025, 09:30 PM
সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যাপক বিরোধিতার মুখে পড়া সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ পর্যালোচনা করে দেখেছে মন্ত্রিপরিষদ গঠিত কমিটি।
সোমবার আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে কমিটির সদস্যরা মিলিত হন। সেখানে প্রায় এক ঘন্টা আলোচনা শেষে আরও কিছু অংশীজনের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার মধ্য দিয়ে বৈঠক শেষ হয়।
রাতে বৈঠকের বিষয়ে পর্যালোচনা কমিটির সদস্য বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এখন আমরা চিন্তা করেছি যে, এটা নিয়ে কর্মচারী প্রতিনিধিদের সঙ্গে আরেকটু আলাপ করবো। তারপর আমরা কী পদক্ষেপ নিচ্ছি সেটা জানাবো।”
এদিন সচিবালয়ে সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরাম। মঙ্গলবার সচিবালয়ে বড় আকারে জমায়েতের ডাক দিয়েছেন ফোরামের নেতারা।
উপদেষ্টা পরিষদ গেল ২২ মে সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ আকারে জারি করার প্রস্তাবে সায় দেয়।
এর প্রতিবাদে ২৪ মে সকাল থেকে দিনভর সচিবালয়ে বিক্ষোভ করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের আপত্তির মধ্যেই রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ২৫ মে রাতে অধ্যাদেশ জারি করা হয়।
সেখানে পুরনো আইনের সঙ্গে ‘৩৭ক’ নামের আরেকটি ধারা সংযোজন করা হয়।
নতুন ধারায় একজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে দুই দফায় সাত দিন করে নোটিসের পর, দায়ী হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা রাখার বিধান রাখা হয়েছে।
নতুন এই অধ্যাদেশকে আন্দোলনকারীরা বলছেন ‘নিবর্তনমূলক কালো আইন’।
এর পর সচিবালয়ে আন্দোলন বিক্ষোভ আরো জোরদার করেন কর্মচারীরা। ওই সময়ে অধ্যাদেশ সংশোধন নয়, পুরোপুরি বাতিলের দাবি তোলেন আন্দোলনকারীরা।
এই আইন বাতিল না হলে সারাদেশের সরকারি দপ্তরগুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলেও আন্দোলনকারীরা হুমকি দেন।
এই পরিস্থিতিতে ৪ জুন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে প্রধান করে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’ নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি পর্যালোচনায় একটি কমিটি করা হয়।
এই কমিটিতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদকে সদস্য রাখা হয়েছে। এছাড়া ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব ও পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা সচিব এই কমিটির সাচিবিক দায়িত্বে রয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সকালে সংবাদিকদের বলেন, “এই আইনের মাধ্যমে সরকারি চাকুরেরা ‘বিড়ম্বনা বা হয়রানির শিকার’ হতে পারেন। এ পরিস্থিতিতে কিছু জায়গায় এই অধ্যাদেশটির পুনর্বিবেচনার সুযোগ রয়েছে।”
এদিকে বিষয়টি নিয়ে এদিন সকালেই জনপ্রশাসন সচিব মোখলেছুর রহমানের সঙ্গে দেখা করে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা। সেখানে দীর্ঘক্ষণ এই অধ্যাদেশ নিয়ে আলোকপাত করেন তারা।
এ বিষয়ে জনপ্রশাসন সচিব মোখলেছুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রশাসনের গতিশীলতা আনতে কীভাবে কী করা যায় এসব বিষয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মঙ্গলবার সচিবালয়ে বড় জমায়েতের ডাক কর্মচারী নেতাদের
বিক্ষোভের মধ্যেই সরকারি চাকরি আইন সংশোধনের অধ্যাদেশ জারি
সচিবালয়ের কর্মচারীরা বললেন, অধ্যাদেশ বাতিল না হলে আন্দোলন চলবেই