Published : 22 May 2025, 12:16 AM
গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে ‘পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দিতে চাপ দেওয়ার’ যে অভিযোগ এনেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি), সেটি অস্বীকার করা হয়েছে দলটির পক্ষ থেকে।
বুধবার ডিএনসিসির ওই অভিযোগ তোলার পর রাতে পাল্টা অভিযোগ করে গণ অধিকার পরিষদ বলছে, “কমিশন ও পছন্দের লোক ব্যতীত ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ অন্য কাউকে কোনো ধরনের কাজ দেন না। মূলত নিজের অভিযোগ আড়াল করে অন্যত্র জনদৃষ্টি ঘোরাতেই তিনি গণ অধিকার পরিষদ সভাপতির বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর বার্তা ছড়াচ্ছেন।”
দলটির দপ্তর সম্পাদক শাকিল উজ্জামান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নুরের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে ‘অসত্য, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট’ দাবি করে নিন্দা জানানো হয়েছে।
ডিএনসিসির প্রশাসককে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহরীরের নেতা আখ্যা দিয়ে তার অপসারণের দাবিতে মঙ্গলবার গুলশানে ডিএনসিসির সামনে বিক্ষোভ-সমাবেশ করে গণ অধিকার পরিষদ। বৃহস্পতিবারের মোহাম্মদ এজাজকে অপসারণ ও গ্রেপ্তারের দাবি জানান সংগঠনের নেতারা। সেটি নাহলে আগামী শনিবার থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দেয় দলটি।
এর পরদিন বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিএনসিসি বলেছে, ‘নিজের পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ না দেওয়ায়’ নুরের কর্মীরা নগরভবনের সামনে মঙ্গলবার বিশৃঙ্খলা করেন। এক প্রকৌশলীকে কল করে ‘চাপ ও হুমকি’ দেওয়ার অভিযোগও করা হয় নুরের বিরুদ্ধে।
তবে নুরের গণ অধিকার পরিষদের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “ডিএনসিসির অভিযোগ বানোয়াট। বরং দরপত্রে অংশগ্রহণ করে সর্বোচ্চ দরদাতা হয়েও গণ অধিকার পরিষদের একজন সদস্যকে কমিশন ব্যতীত কাজ না দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজকে অবহিত করা হয়। তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীকে অবহিত করতে বলেন।
“মোহাম্মদ এজাজের পরামর্শেই নুরুল হক নুর তাকে বিষয়টি তাকে জানান। গণ অধিকার পরিষদের কর্মসূচি স্থগিত করার জন্য তিনি ‘আর্থিক অফারের মাধ্যমে সমঝোতা’ করতে চেয়েছেন।”
মোহাম্মদ এজাজকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে গণ অধিকার পরিষদের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “এজাজ নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন হিজবুত তাহরীরের নেতা। তিনি জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত। স্পষ্ট তথ্য-প্রমাণের পর প্রশাসকের মত গুরুত্বপূর্ণ পদে তিনি থাকতে পারেন না।
“এজাজের হিযবুত তাহরীর ও জঙ্গিবাদের কার্যক্রমে যুক্ত থাকা ও একই অভিযোগে ২০১৫ সালে গ্রেপ্তার হওয়ার বিষয়টি সম্প্রতি আল জাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়েরের ফেসবুক পোস্টেও উঠে এসেছে। যে কারণে সুস্পষ্ট তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই মুহাম্মদ এজাজকে প্রশাসক পদ থেকে অপসারণ ও গ্রেপ্তারের দাবিতে ঢাকা মহানগর উত্তর গণ অধিকার পরিষদ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে ৪৮ ঘণ্টা আল্টিমেটাম দেয়।”
গণ অধিকার পরিষদ বলছে, “বিক্ষোভ কর্মসূচি স্থগিতের জন্য নিজের মামাসহ বেশ কয়েকজনকে পাঠিয়ে আর্থিক অফারের মাধ্যমে সমঝোতা করতে চেয়েছেন এজাজ। নিজেও গণ অধিকার পরিষদের নেতাদের অসংখ্যবার কল করেছেন। কিন্তু গণ অধিকার পরিষদ কর্মসূচি স্থগিত করেনি।”
আরও পড়ুন-
'পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ না দেওয়ায়' বিশৃঙ্খলা করেছেন নুরের কর্মীরা