Published : 20 May 2025, 07:27 PM
বিগত ১৫ বছরে দেশের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার ভিত্তি ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
তিনি বলেন, “সরকারি-বেসরকারি সব ক্ষেত্রেই সেটা করা হয়েছে। স্থানীয় শিল্পের উন্নয়ন দারুণভাবে বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে; নষ্ট করা হয়েছে বাজারের স্বাভাবিক প্রতিযোগিতার সক্ষমতা।”
মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে 'বাংলাদেশে প্রতিযোগিতা নীতি: সম্ভাবনা, প্রতিবন্ধকতা এবং এগিয়ে যাওয়ার পথ' শীর্ষক সেমিনারে কথা বলছিলেন তিনি।
বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) যৌথভাবে এ সেমিনার আয়োজন করে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “গত ১৫ বছরে ব্যাংক লুট এবং বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে অনিয়মের কারণে অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ ভঙ্গুর জায়গায় চলে গিয়েছিল। অন্তর্বর্তী সরকারকে এরই মধ্যে অনেক প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করতে হয়েছে।
“সৌভাগ্যবশত প্রধান উপদেষ্টার অধীনে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়ায় অর্থনীতি আবারও তার নির্দিষ্ট গতিপথে ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে অনেক সমস্যার পরও।"
উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, “আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো এমনভাবে ধ্বংস হয়েছে গত ১৫ বছরে, যে বায়তুল মোকাররমের খতিবকে পালাতে হয়েছিল। এটা প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস হওয়ার একটা স্পষ্ট প্রতিফলন। কেন খতিবকে পালাতে হবে?"
অন্যান্য ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “তাহলে প্রতিযোগিতা কমিশনের কী অবস্থা হয়েছে, আমাদের জুডিশিয়ারির কী অবস্থা হয়েছে, আমাদের ব্যুরোক্রেসির কী অবস্থা হয়েছে?"
“১৫ বছরের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা ধ্বংস হয়ে যাওয়ার ফলে আমাদের অর্থনীতিতে সম্পদের অসম্ভব রকমের অসম বন্টণ তৈরি হয়েছে। এর ফলে এমন কিছু গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে, যারা মার্কেটে আজ নতুন কোনো প্লেয়ারকে ঢুকতেও বাধা দিচ্ছে। যারা কম মূল্যে বিক্রি করছে, তাদেরকেও শাস্তি দেওয়া প্রতিযোগিতা কমিশনের কাজ।”
তিনি বলেন, “অন্য সব প্রতিষ্ঠানের মতো প্রতিযোগিতা কমিশনের সক্ষমতাও ধ্বংস করা হয়েছে। যে কারণে সাধারণ মানুষ এর খুব বেশি সুফল পায়নি। মানুষ চায় তাদের প্রাত্যহিক জীবনে প্রতিযোগিতার সুফল। এ কমিশনকে সে জায়গায় যেতে হবে।”
সেমিনারে প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান বলেন, “প্রতিযোগিতা কমিশন শুধু কোম্পানিগুলোকে জরিমানা করে না, সুরক্ষাও দেয়। ছোট ছোট প্রতিষ্ঠান, যারা বাজারে অসম প্রতিযোগিতায় পড়ছে, তাদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য আমরা কাজ করছি।
“গুটিকয়েক কোম্পানির সিন্ডিকেট ভেঙে সব কোম্পানিকে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার সুযোগ করে দেওয়া আমাদের সবচেয়ে বড় লক্ষ্য।”
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন কমিশন ফর ডেভেলপমেন্টের চেয়ারম্যান এম এ রাজ্জাক।
প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) পরিচালক এ কে এনামুল হক, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সদস্য (আইন) আফরোজা বিলকিস, ফরেন কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট অফিসের ইকনোমিক অ্যাডভাইজর ইসাম মোসাদ্দেক ও মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি কামরান টি রহমান।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মইনুল খান ও ইউএনডিপি বাংলাদেশের উপ আবাসিক প্রতিনিধি সোনালী দয়ারাত্নে।