Published : 25 Oct 2024, 01:07 AM
রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিনিয়োগে স্থবিরতাসহ নানা কারণে চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে ঋণপত্রের নিষ্পত্তি কমলেও সেপ্টেম্বরে তা আগের অর্থবছরের একই মাসের চেয়ে ২৪ শতাংশের বেশি বেড়েছে।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সেপ্টেম্বরে আমদানি করা পণ্যের ঋণপত্রের (এলসি) দেনা পরিশোধ বা নিষ্পত্তি করা হয়েছে ৫ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলার। ২০২৩-২৪ গতবছরের সেপ্টেম্বরে যা ছিল ৪ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার। এ হিসাবে বেড়েছে প্রায় ১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার বা ২৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংক বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এলসির হালনাগাদ তথ্য তুলে ধরে।
এ বিষয়ে পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "জুলাই মাসে ইন্টারনেট বন্ধ থাকা ও ব্যাংকের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় আমদানির পেমেন্ট করা যায়নি। অগাস্ট মাসের বেশ কিছুদিন অস্থিরতা থাকাসহ নানা কারণেও তা ঠিকমত করতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। তাই সেপ্টেম্বরে এই দুই মাসের কিছু ওভারডিউ পেমেন্ট করতে হয়েছে। সেটেলমেন্ট বেড়ে যাওয়ার এটিই মূল কারণ।"
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রথম তিন মাসে আমদানি নিষ্পত্তি করা হয়েছে ১৬ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময় যা ছিল ১৬ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার।
সরকারি আমদানির বকেয়া পরিশোধের চাপ আগের তুলনায় কমে আসার তথ্য দিয়ে একটি বেসরকারি ব্যাংকের ডেপুটি ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, নতুন গভর্নর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে সরকারি এলসির বকেয়া প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার পরিশোধের উগ্যোগ নেন। এখন সেটি ১ বিলিয়নের নিচে নেমে এসেছে।
আগামী কয়েকমাসের মধ্যে এগুলো পরিশোধ কমে এলে ডলারের উপর চাপ আরও কমে আসবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত সেপ্টেম্বরে এলসি খোলাও আগের অর্থবছরের তুলনায় কিছুটা বেড়ে হয়েছে ৫ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার। আগের বছর সেপ্টেম্বরে যা ছিল ৫ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ একই সময় বেড়েছে ৭ দশমিক ১১ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, আমদানি নির্ভর দেশ হিসেবে প্রতি মাসে আমদানি কমপক্ষে ৫-৬ বিলিয়ন হওয়া উচিত। অর্থনীতির আকার অনুযায়ী আরো বেশি আমদানির প্রয়োজন। ফলে সামনের দিনগুলোতে আমদানি এলসি খোলা বাড়াটা অর্থনীতির জন্য ভালো হবে।
তবে নানা কারণে এলসি খোলার পরিমাণ চলতি মাসেও কম।
বেশ কয়েকটি সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের নীতিনির্ধারণী কর্মকর্তারা বলেন, চলতি অক্টোবর মাসে আমদানি এলসি খোলার চাপ খুব বেশি দেখা যাচ্ছে না। কারণ, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখনও পুরোপুরি স্থিতিশীল হয়নি। ফলে ব্যবসায়ীরা এখন নতুন ধরনের বিনিয়োগে যেতে চাচ্ছেন না বলে আমদানিও খুব বেশি বাড়ছে না।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রথম তিন মাসে ঋণপত্র খোলা হয়েছে ১৫ দশমিক ৫৯ বিকিয়ন ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময় যা ছিল ১৬ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার।
ব্যাংকগুলো জানিয়েছে, রেমিটেন্সের ডলার কেনায় বেশির ভাগ ব্যাংক এখন ১২০-১২১ টাকা দর দিচ্ছে। আর আমদানিতে ডলারের দর পড়ছে ১২১ থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সা।