Published : 19 Jun 2025, 05:20 PM
সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দেশের শিক্ষাখাতে যে অবদান রেখেছেন তা নিয়ে পিএইচডি গবেষণা হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান।
তিনি বলেছেন, “জিয়াউর রহমানের শিক্ষাদর্শন ও কর্মসূচি নিয়ে পিএইচডি গবেষণা হতে পারে। তিনি যে শিক্ষানুরাগী ছিলেন, সেটি তার হিযবুল বাহারে (জাহাজ) মেধাবীদের নিয়ে যে সমুদ্র যাত্রায় গিয়েছিলেন তা প্রমাণ করে।
“অনেকেই বলে শহীদ জিয়াউর রহমান ক্যান্টনমেন্ট থেকে দল প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি দেশের মানুষকে সুশিক্ষা দেওয়ার জন্য বহুমুখী উদ্যোগ নিয়েছিলেন। অন্যদিকে যারা নিজেদেরকে জনগণের দল বলে মনে করে, তারা কেনো জাতিকে পরিকল্পিতভাবে মূর্খ করে রাখতে চেয়েছিলো?”
বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোতাহার হোসেন চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শিক্ষাদর্শন ও কর্মসূচি’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য দিচ্ছিলেন মঈন খান।
তিনি বলেন, “বিগত সরকার ১৭ বছরে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে। গ্রাম-গঞ্জের স্কুল কিন্তু সরকারি হয়েছে ঠিকই; তবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্লাসে যায় না। এজন্য তারা দায়ী নয়।
“…সরকার হয়তো চেয়েছিলো জাতিকে মূর্খ করে রাখতে। অথচ দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দেশের শিক্ষার উন্নয়নে অসংখ্য অবদান রয়েছে। তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য উপবৃত্তি চালু করেছিলেন। যার সুফল দেশবাসী পেয়েছে।”
অনুষ্ঠানে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “দেশ ও মানুষের জন্য যে অবদান তৈরি করার সেটি জিয়াউর রহমান করেছেন। মানুষকে স্বনির্ভর করতে তার ছিল মহান পরিকল্পনা। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলেন, কিন্তু কখনোই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেননি।
“তিনি বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কথা শুনেছেন, যা গণতন্ত্রের নমুনা ও বৈশিষ্ট্য। তিনি শিক্ষাকে যে গুরুত্ব দিতেন, সেটি তার কার্যক্রমেই পরিষ্কার হয়েছে। গণমুখী শিক্ষা প্রবর্তন করেছিলেন; যাতে উৎপাদনমুখী শিক্ষা ব্যবস্থার লক্ষ্যে তিনি নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছিলেন।”
রিজভী বলেন, “জিয়াউর রহমান অর্থনীতি, শিক্ষা, রাষ্ট্রনীতি থেকে শুরু করে সকল ক্ষেত্রে শৃঙ্খলার মধ্যে এনে একটি ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়েছিলেন। অথচ আজ তাকে নিয়ে নানা কথা বলা হচ্ছে। তবে বিশ্বে তাকে বলা একজন সত্যিকারের রাষ্ট্রনায়ক।
“তার দক্ষ ও গতিশীল কূটনৈতিক তৎপরতার কারণে ফারাক্কা ইস্যু জাতিসংঘে পর্যন্ত গেছে। ফলে চীনও নিন্দা জানিয়েছে। জাতিসংঘ প্রতিবাদ করেছে। জিয়াউর রহমান সবসময় নিজ দেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দিতেন।”
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান বলেন, “এ দেশ আজ যোগ্য নেতৃত্ব থেকে বঞ্চিত। বিগত ১৫ বছরে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা যেখানে দাঁড়িয়েছে, দেশ আজ বেকারত্ব সমস্যায় জর্জরিত।
“শিক্ষাকে আওয়ামীকরণ করতে করতে দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে আজ মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে।”
তিনি বলেন, “১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমান এ দেশে সকলের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করেছিলেন; যার উদ্দেশ্য ছিল এ দেশকে, এ জাতিকে একটি স্বশিক্ষিত ও কর্মনির্ভর জাতিতে পরিণত করা।
“যে নীতিকে বিগত সময়ে ভুলণ্ঠিত করেছে আওয়ামী সরকার। শিক্ষাকে তার বানিয়েছে এদেশের মানুষকে শোষণ করার হাতিয়ার।”
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান।
সাদা দল আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল। অধ্যাপক আব্দুস সালামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমদ খানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।