Published : 20 Feb 2025, 08:20 PM
তাওহিদ হৃদয় ও জাকের আলির জুটি তখন ভারতের প্রবল মাথাব্যথা হয়ে উঠেছে। নতুন বলে জোড়া ছোবল দেওয়া মোহাম্মদ শামি ফিরলেন পুরোনো বলে। অধিনায়কের চাওয়াও পূরণ করলেন দারুণভাবে। দেড়শ ছাড়ানো ঝুটি ভাঙলেন তিনি জাকের আলিকে ফিরিয়ে। দলকে স্বস্তি দিয়ে নিজে পৌঁছে গেলেন ইতিহাসের ঠিকানায়।
শামির ২০০তম ওয়ানডে উইকেট সেটি। ৫০ ওভারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এই মাইলফলকের স্বাদ পেয়েছেন তার আগে আরও ৪২ বোলার। তবে একটি জায়গায় শামিই সবার ওপরে, আরেকটিতে তিনি আছেন দুইয়ে।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দুবাইয়ে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে দুইশ উইকেট পূর্ণ হয় তার। তিন উইকেটের দূরত্বে ম্যাচটি শুরু করেছিলেন অভিজ্ঞ পেসার। ম্যাচের প্রথম ওভারে তিনি ফেরান সৌম্য সরকারকে। প্রথম স্পেলেই বিদায় করেন মেহেদী হাসান মিরাজকে। ৪০ ওভারের পর ফিরে জাকের আলির উইকেট নিয়ে পা রাখেন তিনি দুইশতে।
২০০ শিকার ধরতে ৫ হাজার ১২৬ ডেলিভারি লাগল শামির। ওয়ানডে ইতিহাসে যা দ্রুততম। পেরিয়ে গেলেন তিনি মিচেল স্টার্ককে। অস্ট্রেলিয়ার বাঁহাতি পেসারের লেগেছিল ৫ হাজার ২৪০ ডেলিভারি।
উইকেটের মাইলফলকে দ্রুততম রেকর্ডগুলি বিবেচনার স্বীকৃত মানদণ্ড অবশ্য ম্যাচ খেলার হিসাব। এখানে আবার এগিয়ে স্টার্ক। ১০২ ম্যাচে ২০০ উইকেট হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ান গ্রেটের।
শামির লাগল দুটি ম্যাচ বেশি। তার মতো ১০৪ ম্যাচ লেগেছিল পাকিস্তানি অফ স্পিনিং গ্রেট সাকলায়েন মুশতাকের।
শামির এই মাইলফলকটি ধরা দিতে পারত অনেক আগেই। ২০২৩ বিশ্বকাপে স্বপ্নের মতো পারফরম্যান্সে দুইশর কাছে চলে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বিশ্বকাপের পর এমন এক চোটে পড়েন, যা তাকে মাঠের বাইরে রাখে এক বছরের বেশি সময়। দীর্ঘ লড়াই আর ধৈর্যের পরীক্ষা দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরেন তিনি মাত্র কদিন আগে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দুটি ম্যাচের পর ওয়ানডে সিরিজেও খেলেন দুটি ম্যাচ।
এই চার ম্যাচের কোনোটিতেই তাকে চেনা চেহারায় দেখা যায়নি। গতি ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে বেশ কম। বোলিংয়ে ছিল অনেক আড়ষ্ঠতা। ধার ছিল কম। তবে একটু একটু করে নিজেকে ফিরে পাওয়ার ছাপও ছিল পারফরম্যান্সে।
এরপর বিশ্বমঞ্চে পা রাখতেই আবার দেখা মিলল সেই শামির। গতি যদিও এখনও কিছুটা কম। চেনা ছন্দও শতভাগ ফেরেনি এখনও। তবে বড় মঞ্চে আলো ছড়ানোর অভ্যাস হারাননি। সেটি ফুটিয়ে তুললেন বাংলাদেশের বিপক্ষে এই ম্যাচে।
থেমে থাকেননি কেবল দুইশ ছুঁয়েই। বরং দিনটি আরও স্মরণীয় করে রাখেন ৫ উইকেট শিকার করে। ওয়ানডেতে এই স্বাদ পেলেন তিনি ষষ্ঠবার। ভারতের হয়ে তিনবারের বেশি ৫ উইকেট নিতে পারেননি আর কেউ।