Published : 02 Jun 2025, 04:18 PM
জেমস অ্যান্ডারসন সবশেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছিলেন যখন, তারও এক বছরের বেশি সময় পর ২০ ওভারের ক্রিকেটে অভিষেক হয় রাশিদ খানের। প্রায় সাড়ে ছয়শ উইকেট নিয়ে এখন এই সংস্করণে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি আফগানিস্তানের লেগ স্পিনার। ক্রিকেটে আরও কত কিছুই না হয়ে গেছে এই সময়ের মধ্যে। প্রায় ১১ বছর পর, ৪৩ ছুঁইছুঁই বয়সে পুনরুজ্জীবিত হলো অ্যান্ডারসনের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার। ফেরার উপলক্ষটা ইংলিশ পেসার রাঙালেন ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে।
ভাইটালিটি ব্লাস্টে ল্যাঙ্কাশায়ারের হয়ে ডারহামের বিপক্ষে ৪ ওভারে স্রেফ ১৭ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন অ্যান্ডারসন। তার দল জিতেছে ৪ উইকেটে।
চেস্টার-লি-স্ট্রিটে রোববার ম্যাচের প্রথম ওভারে অ্যান্ডারসন দেন স্রেফ ৩ রান। পরের ওভারে প্রথম তিন বলে একটি করে ছক্কা ও চার হজম করেন তিনি। তবে পঞ্চম বলে প্রথম উইকেটের স্বাদ পেয়ে যান গ্রাহাম ক্লার্ককে ফিরিয়ে। এই ওভারে দেন ১১ রান।
পাওয়ার প্লেতেই আরেক ওভার বোলিং করে আরেকটি উইকেট নেন তিনি। এই ওভারে একটি লেগ বাইসহ আসে মাত্র ২ রান। নিজের কোটার শেষ ওভারটি তিনি করেন একাদশ ওভারে, এবার নেন আরেকটি উইকেট। একটি লেগ বাইসহ এই ওভারে খরচ ৩ রান।
ডারহামকে ১৫০ রানে আটকে রেখে শেষ বলে লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে ল্যাঙ্কাশায়ার।
এই ম্যাচের আগে অ্যান্ডারসন সবশেষ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে খেলেছিলেন ২০১৪ সালের ২৩ অগাস্ট, টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টের ফাইনালে ল্যাঙ্কাশায়ারের হয়ে ওয়ারউইকশায়ারের বিপক্ষে ৪ ওভারে ৫২ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন তিনি।
৩ হাজার ৯৩৫ দিন পর আবার কুড়ি ওভারের ম্যাচ খেলতে নেমে চমৎকার বোলিং উপহার দিলেন টেস্ট ইতিহাসের সফলতম পেসার। টি-টোয়েন্টিতে তার আগের সেরা বোলিং ছিল ২৩ রানে ৩ উইকেট, ২০০৯ সালের বিশ্বকাপে লর্ডসে ইংল্যান্ডের হয়ে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে।
এখন পর্যন্ত ৪৫টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ওভারপ্রতি ৮.৩৬ করে রান দিয়ে তার শিকার ৪৪ উইকেট।
গত বছরের জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে লর্ডস টেস্ট দিয়ে বর্ণাঢ্য টেস্ট ক্যারিয়ারের ইতি টানেন অ্যান্ডারসন। বিদায়ী ম্যাচে চার উইকেট শিকার করে টেস্ট ইতিহাসের সফলতম পেসার থেমে যান ৭০৪ উইকেট নিয়ে। পরের টেস্ট থেকেই শুরু হয় তার নতুন অধ্যায়। বোলিং পরামর্শক হিসেবে যোগ দেন তিনি ইংল্যান্ডের কোচিং স্টাফে। সোজাসুজি বলা যায়, পেস বোলিং কোচ।
শুরুতে শুধু ইংলিশ গ্রীষ্মের জন্যই ছিল তার দায়িত্ব। সেখানে তার কার্যকারিতা দেখে পরে পাকিস্তান ও নিউ জিল্যান্ড সফরেও তাকে ধরে রাখা হয় কোচিং স্টাফে। এর মধ্যে টি-টোয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে ফেরার চেষ্টা করেন তিনি, নাম লেখান আইপিএলের নিলামেও। কিন্তু দল পাননি।
তার খেলোয়াড়ি জীবন তখন শেষ বলেই মনে করা হচ্ছিল। কোচিংয়ের পাশাপাশি টিভিতে ধারাভাষ্যকার ও বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করছিলেন। কিন্তু গত জানুয়ারিতে জানা যায়, মাঠে ফেরা নিয়ে ল্যাঙ্কাশায়ারের সঙ্গে আলোচনা চলছে তার। কদিন পরই হয়ে যায় নতুন চুক্তি।
গত মাসের মাঝামাঝি কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে ডার্বিশায়ারের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ১০ মাসের বেশি সময় পর মাঠে ফিরে দুই ইনিংস মিলিয়ে তিনি নেন ৫ উইকেট। এবার টি-টোয়েন্টি খেলতে নেমেও বল হাতে দারুণ উজ্জ্বল আগামী জুলাইয়ে ৪৩ বছর পূর্ণ করতে যাওয়া অ্যান্ডারসন।