Published : 25 Jan 2025, 03:33 PM
দেশের হয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ধারাবাহিকভাবে আলো ছড়িয়েই যাচ্ছেন সিকান্দার রাজা। পরপর দুই বছর এই সংস্করণের বর্ষসেরা দলে জায়গা করে নিয়েছেন জিম্বাবুয়ের এই অলরাউন্ডার। রাজাসহ ২০২৩ সালের সেরা দল থেকে এবার আছেন চারজন।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতা ভারত থেকে ২০২৪ সালের সেরা দলে আছেন সর্বোচ্চ চারজন। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও জিম্বাবুয়ে থেকে রাখা হয়েছে একজন করে ক্রিকেটার।
রাজার পাশাপাশি গত বছরের সেরা দল থেকে আছেন ইংল্যান্ডের ফিল সল্ট, ওয়েস্ট ইন্ডিজের নিকোলাস পুরান ও ভারতের আর্শদিপ সিং।
গত বছর জিম্বাবুয়ের হয়ে ২৪ টি-টোয়েন্টি খেলেন রাজা। ২৮.৬৫ গড়ে করেন ৫৭৩ রান। ক্যারিয়ার সেরা ১৩৩ রানের ইনিংস খেলেন তিনি এই বছরই, আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আফ্রিকার উপ-আঞ্চলিক বাছাইপর্বে গাম্বিয়ার বিপক্ষে।
পাশাপাশি স্পিন বোলিংয়ে নেন ২৪ উইকেট। রুয়ান্ডার বিপক্ষে গত অক্টোবরে ১৮ রানে ৫ উইকেট নেন তিনি, যা টি-টোয়েন্টিতে তার সেরা বোলিং। টানা তৃতীয় বছর টি-টোয়েন্টির সেরা ক্রিকেটারের লড়াইয়েও আছেন রাজা।
একাদশের অধিনায়ক ও ওপেনার ভারতের রোহিত শার্মা। গত বছর তার নেতৃত্বে নিজেদের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছিল এশিয়ার দলটি। এরপরই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিকে বিদায় বলে দেন তারকা ব্যাটসম্যান।
গত বছর দেশের হয়ে এই সংস্করণে ১১ ম্যাচে খেলে ৪২ গড় ও ১৬০.১৬ স্ট্রাইক রেটে ৩৭৮ রান করেন রোহিত। এই সময়ে একটি সেঞ্চুরি ও ৩ ফিফটি করেন তিনি। তিনটি ফিফটিই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে।
ওপেনিংয়ে রোহিতের সঙ্গী ট্রাভিস হেড। অস্ট্রেলিয়ার বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান ১৫ টি-টোয়েন্টি খেলে ৩৮.৫০ গড় ও ১৭৮.৪৭ স্ট্রাইক রেটে করেন ৫৩৯ রান। এই সংস্করণে অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানদের মধ্যে এক পঞ্জিকাবর্ষে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও ব্যাট হাতে দ্যুতি ছড়ান হেড; অস্ট্রেলিয়ান বিস্ফোরক ব্যাটসম্যান ১৫৮.৩৮ গড়ে করেন ২৫৫ রান। আসরে তার চেয়ে বেশি রান করতে পারেন আর কেবল দুইজন। আইসিসির বর্ষসেরা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটারের লড়াইয়েও আছেন হেড।
টপ অর্ডারের আরেকজন ইংলিশ বিস্ফোরক ব্যাটসম্যান ফিল সল্ট। গত বছর ১৭ টি-টোয়েন্টি খেলে এক সেঞ্চুরি ও ২ ফিফটিতে ৪৬৭ রান করেন তিনি। ব্যাটিং গড় ৩৮.৯১ ও স্ট্রাইক রেট ১৬৪.৪৩।
২০২৪ সালে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বাবর আজমের চেয়ে বেশি রান করতে পারেননি পাকিস্তানের আর কেউ। ২৪ টি-টোয়েন্টি খেলে ৬ ফিফটিতে ৩৩.৫৪ গড় ও ১৩৩.২১ স্ট্রাইক রেটে করেন ৭৩৮ রান। তিনিও আছেন বর্ষসেরা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটারের সংক্ষিপ্ত তালিকায়।
দলের উইকেটরক্ষক ক্যারিবিয়ান বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান পুরান ২১ ম্যাচে দুই ফিফটিতে ৪৬৪ রান করেন গত বছর। ব্যাটিং গড় ২৫.৭৭ ও স্ট্রাইক রেট ১৪২.৩৩। পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে আছেন ভারতের হার্দিক পান্ডিয়া। ১৭ টি-টোয়েন্টিতে ৩৫২ রান করার পাশাপাশি ১৬ উইকেট নেন তিনি।
আফগানিস্তানে তারকা লেগ স্পিনার রাশিদ খান ১৪ ম্যাচে ৩১ শিকার ধরেন ৯.৫৮ গড়েন। ম্যাচে ৪ উইকেট নেন চারবার। লঙ্কান লেগ স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাও আছেন বছর সেরা দলে। ২০ ম্যাচে তার শিকার ৩৮টি। ব্যাটিংয়ে কার্যকর ভূমিকা রেখে করেন ১৭৯ রান।
একাদশের দুই বিশেষজ্ঞ পেসারই ভারতের, জাসপ্রিত বুমরাহ ও আর্শদিপ। গত বছর স্রেফ ৮ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেন বুমরাহ। সবগুলোয় বৈশ্বিক আসরে। ভারতের শিরোপা জয়ে বড় অবদান রাখেন তিনি ১৫ উইকেট নিয়ে। বর্ষসেরা ক্রিকেটারের লড়াইয়েও আছেন তারকা এই বোলার।
২০২৩ সালের মতো ২০২৪ সালটাও টি-টোয়েন্টিতে দুর্দান্ত কাটে আর্শদিপের। দেশের হয়ে ১৮ টি-টোয়েন্টি খেলে ৩৬ উইকেট নেন তিনি সাড়ে ১৩ গড়ে। ৯ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে, যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে।
টি-টোয়েন্টিতে এক পঞ্জিকাবর্ষে আর্শদিপের ৩৬ উইকেট ভারতীয়দের মধ্যে দ্বিতীয় সেরা। ২০২২ সালে ৩২ ম্যাচে ভুবনেশ্বরের নেওয়া ৩৭ উইকেট সবার ওপরে। সেবার ৩৩ উইকেট নিয়ে তৃতীয় ছিলেন আর্শদিপ। গত বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেরও তার ছিল বড় ভূমিকা। যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত আসরে ৮ ম্যাচে ১৭ উইকেট নেন তিনি ১২.৬৪ গড়ে।
আইসিসি বর্ষসেরা পুরুষ টি-টোয়েন্টি একাদশ: রোহিত শার্মা (অধিনায়ক) (ভারত), ট্রাভিস হেড (অস্ট্রেলিয়া), ফিল সল্ট (ইংল্যান্ড), বাবর আজম (পাকিস্তান), নিকোলাস পুরান (উইকেটরক্ষক) (ওয়েস্ট ইন্ডিজ), সিকান্দার রাজা (জিম্বাবুয়ে), হার্দিক পান্ডিয়া (ভারত), রাশিদ খান (আফগানিস্তান), ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা (শ্রীলঙ্কা), জাসপ্রিত বুমরাহ (ভারত), আর্শদিপ সিং (ভারত)।