Published : 02 Jun 2025, 04:26 PM
চট্টগ্রাম নগরীর খাল ও নালা পরিষ্কার রাখতে যন্ত্রপাতি কেনার জন্য প্রস্তাবিত প্রকল্পে ঋণ নয়, সরকারি অর্থ বরাদ্দ চান সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেন।
সোমবার দুপুরে নগরীর কালামিয়া বাজার ইছাকের পুল এলাকায় বির্জা খালের পরিস্থিতি পরিদর্শনে গিয়ে কথা বলছিলেন তিনি।
শাহাদাত হোসেন জানিয়েছেন, ২০২২ সালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন প্রস্তাবিত ওই প্রকল্পে এখন ১৬০ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
মেয়র শাহাদাত বলেন, “ময়লাগুলো চলমান প্রক্রিয়ায় আমাদের পরিষ্কার করতে হবে। ৫৭টা খাল ও ১৬০০ কিলোমিটার নালা পরিষ্কারের জন্য দৈনন্দিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য আমাদের একটা প্রজেক্ট ২০২২ সালে আমাদের আগে যারা দায়িত্বে ছিল তারা দিয়েছিল মন্ত্রণালয়ে।
“খাল-নালা পরিষ্কার রাখার জন্য যন্ত্রপাতির কোন বিকল্প নেই। ইতিমধ্যে আমাদের যে মেশিনগুলো আছে সেগুলো ১৫ থেকে ২০ বছরের পুরনো হয়ে গেছে। কাজ করতে গিয়ে ভেঙে গেছে। এবং সেগুলো ঠিক করতে গিয়ে আমাদের যে পরিমাণ খরচ হচ্ছে সেজন্য আমি ৩৯৮ কোটি টাকার যে প্রজেক্ট সেটা বারবার মন্ত্রণালয়ে কথা বলে আপগ্রেড করেছি। এখন অর্থ মন্ত্রণালয়ে সেটা ছাড় দিয়েছে।”
মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, “রিসেন্টলি আমরা দেখেছি সেটা ১০০ কোটি টাকা কমিয়ে দিয়েছে। সেটা এখন ২৯৮ কোটি টাকা। তাও ১৬০ কোটি টাকা তারা বলছে ৫ শতাংশ সুদে আমাদেরকে লোন দেবে। আমরা একটা সেবাদানকারী সংস্থা। তারা যদি আমাদের লোন হিসেবে দেয় তাহলে পরে এটা আমাদের জন্য বোঝা হয়ে যাবে।
“যেটা অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ছাড় দিয়েছে ২৯৮ কোটি টাকা এটা পুরোপুরি বরাদ্দ হিসেবে সিটি করপোরেশনকে দেয়া হোক। যদি বিনা সুদে বিনা ঋণে আমাদের বরাদ্দ দেয়া হয় জনগণ উপকৃত হবে।”
সোমবারও ভারি বর্ষণে নগরীর বেশিরভাগ এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি না হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মেয়র।
তিনি বলেন, “মেজর স্থানগুলোতে আগে পানি জমা থাকত চকবাজার, বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, জিইসির মোড়, বাদুরতলা, কাপাসগোলা, বাকলিয়া, আগ্রাবাদ এসব এলাকায় এখন ঘুরে এসেছি। সকাল থেকে ভারি বর্ষণ হয়েছে। পানি নেই। যেখানে কিছু অংশ নিচু সেখানে পানি জমেছে, যেমন দামপাড়ায়।
“জিইসি মোড়ে গত ৭দিন ধরে কাজ করেছি। আগে যে পানি জমে থাকত আজ নেই। খুব ভারি বৃষ্টি যখন হয় কিছু পানি হয়, সেটা সরে যেতে সময় দিতে হবে। এক দেড় ঘণ্টায় নেমে যাচ্ছে।”
বির্জা খাল ফের পরিষ্কার করবে সিসিসি
এপ্রিলের শেষ দিকে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে নিজস্ব অর্থায়নে নগরীর বির্জা খালের অর্ধেক পরিষ্কারের উদ্যোগ নিয়েছিল জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগর। তখন খালটির ওই অংশ কচুরিপানা, মাটি ও আবর্জনা জমে ছিল।
সোমবার সেখানে পরিদর্শনে গিয়ে মেয়র দেখতে পান খালের একাংশে আবর্জনা জমে পানি চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পাশে পাড়ে পরে আছে খাল থেকে আগে তোলা আবর্জনা।
এ নিয়ে স্থানীয়দের উদ্দেশে শাহাদাত হোসেন বলেন, “আমরা যাকেই দায়িত্ব দিই না কেন এখন দায়িত্ব আমাদের। জনগণকে ময়লা থেকে পরিত্রাণ দেয়ার দায়িত্ব আমাদের। যাদেরকে আমরা দায়িত্ব দিয়েছিলাম সম্পূর্ণভাবে ময়লাগুলো আসলে ক্লিন হয়নি। এখন আমাদের এটা পরিষ্কার করতে হবে।
“আগামীকাল থেকে আমাদের সিটি করপোরেশনের স্পেশাল দল আবার কাজ শুরু করবে। কারণ এখানে যে পরিমাণ আমাদের চিন্তা ছিল পরিষ্কার হবে, সেটা হয়নি।“
এই কাজের দায়িত্ব নিয়ে শাহাদাত বলেন, “এটা জামায়াতে ইসলাম আমাদের কাছে চেয়েছে আমরা দিয়েছি। তারপরও যে পরিমাণ ক্লিন হওয়ার কথা, সেখানে আজকে দেখতে পাচ্ছি প্রচুর পরিমাণে ময়লা এখানে পড়ে আছে। সেটা আবার আমাদের ক্লিন করতে হবে।“
ইতিমধ্যে ইজিপির মাধ্যমে সিসিসি ১০ কোটি টাকা খরচ করে নগরীর ২৪টা খাল পরিষ্কার করেছে বলে জানিয়েছেন মেয়র।
তিনি বলেন, “১৬০০ কিলোমিটার ড্রেনে প্রায় ৮-১০ কোটি টাকা আমাদের খরচ হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অগাস্ট পর্যন্ত আরো ৮-১০ কোটি টাকার কাজ আমরা করব।”
এসময় উপস্থিত ছিলেন সিসিসির প্রধান পরিছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার ইফতেফার চৌধুরী, প্রকৌশলী সাফকাত, মেয়রের ব্যক্তিগত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরী মারুফসহ আরো অনেকে।