Published : 18 Jun 2025, 08:54 PM
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনে আবেদনকারীদের ’হয়রানি ও ঘুষ লেনদেনের’ অভিযোগের পেয়ে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার দুপুরে দুদকের চট্টগ্রাম মেট্রো কার্যালয়ের একটি দল এ অভিযানে যায়। এসময় তারা পাঁচটি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ঘুষ লেনদেনের তথ্য পাওয়ার কথাও জানিয়েছেন।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ এমরান হোসেন বলেন, অভিযানে দুদক কর্মকর্তারা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ করেছেন।
অভিযান শেষে তিনি বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য ছয়জন আবেদনকারীর অভিযোগ এবং সংশোধন করতে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগের পর তারা এ অভিযান পরিচালনা করেছেন। অভিযোগ ছিল তাদের আবেদন দীর্ঘসময় ধরে আটকে ছিল।
তবে অভিযানে এসে তারা দেখতে পান এসব এনআইডি সংশোধনের কাজ ইতোমধ্যে হয়ে গেছে বলে জানান এ দুদক কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, “প্রতিটি এনআইডি সংশোধনের জন্য দালালদের মাধ্যমে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা কর্মকর্তারা নিয়ে থাকেন।”
পাঁচটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ঘুষ লেনদেনের তথ্য পাবার কথা তুলে ধরে দুদক কর্মকর্তা এমরান বলেন, পাঁচটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ঘুষ লেনদেনের বিষয় এসেছে। নির্বাচন কর্মকর্তাদের দাবি, এগুলো তাদের অ্যাকাউন্ট নয়।
”সংশ্লিষ্ট ব্যাংক থেকে এগুলো কার অ্যাকাউন্ট সেটা এবং ব্যাংক হিসাবগুলো নেব। ওই অ্যাকাউন্টের সাথে এখানকার কোনো কর্মকর্তার সংযোগ আছে কি না সেটা আমরা যাচাইবাছাই করে দেখব।”
কোন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল কিনা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে।
এদিকে আবেদন আটকে রাখাসহ বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ”একটি আবেদনের বিষয়ে আমার এক কর্মকর্তা একটি ডকুমেন্টের জন্য আবেদনকারীকে বলেছিলেন। কিন্তু উনি (আবেদনকারী) একবছর ধরে কোন ডকুমেন্ট জমা দেননি। পরে আমাদের ক্রাশ প্রোগ্রামে জেলা অফিসার সেটাকে তদন্তের জন্য উপজেলা অফিসে পাঠিয়েছিলেন।
“উপজেলা অফিস থেকে ‘সংশোধন যোগ্য’ রিপোর্ট আসার পর সেটা আমরা অনুমোদন করে দিয়েছি। এটা হলো একটা অভিযোগের বিষয়। আর তিনটা অভিযোগের বিষয়ে আমি কিছু জানি না।”
দালালের মাধ্যমে ঘুষ আদায়ে এবং ক্যাটাগরির বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমাদের দুইজন অতিরিক্ত আঞ্চলিক কর্মকর্তা আছেন। ইলেকশন কমিশনের আইডি ও পাসওয়ার্ড উনাদের দেওয়া আছে। উনারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজটা করেন।
“আমি যখন যোগদান করেছি একজন অতিরিক্ত আঞ্চলিক কর্মকর্তা ছিলেন। উনি একা কাজ করে কুলাতে পারতেন না। পরে কমিশনের আবেদন করে আরেকজনকে এনেছি। এখন কোন কাজ জমে নাই।”
নির্বাচন কর্মকর্তা বেলায়েতের দাবি, তার কার্যালয়ে কোনো কাজ আটকে থাকে না। নথির অভাবে কিছু কাজ বিলম্ব হয়।
সুনির্দিষ্ট কোন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে সেগুলোর বিষয়ে তাকে অভিযোগ জানানোর পরামর্শ দেন এ নির্বাচন কর্মকর্তা।