Published : 15 Jun 2025, 01:03 AM
কোরবানির ঈদের টানা ছুটিতে চট্টগ্রাম বন্দর সচল থাকলেও তৈরি হয়েছে কন্টেইনার জট। অন্য সময়ে প্রতিদিন গড়ে চার হাজার কন্টেইনার খালাস হলেও ঈদের ছুটিতে তা নেমে আসে দুই হাজারের নিচে।
বন্দর ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কোম্পানির কর্মকর্তারা বলছেন, লম্বা ছুটি শেষে রোববার থেকে ধীরে ধীরে জমে থাকা আমদানি পণ্যবাহী কন্টেইনারের পরিমাণ অনেকটাই কমে আসবে।
টানা ১০ দিনের ঈদের ছুটির শেষ দিন শনিবার সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশের প্রধান এ সমুদ্রবন্দরের ইয়ার্ডে জমে থাকা কন্টেইনারের পরিমাণ ছিল ৪২ হাজার ৪১৬ টিইইউস (প্রতিটি ২০ ফুট দৈর্ঘ্যের কন্টেইনার একক হিসাবে)। সে হিসাবে বন্দরের ধারণক্ষমতার ৮০ শতাংশ জায়গায় কন্টেইনার জমে গেছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডে সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা ৫৩ হাজার ৫১৮ টিইইউস হলেও ৩০ থেকে ৩২ হাজার টিইইউস কন্টেইনার থাকলে সেটিকে স্বাভাবিক পরিস্থিতি হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।
শুক্রবারে জমে থাকা কন্টেইনারের পরিমাণ ছিল ৪০ হাজার ৯৫৪ টিইইউস, বৃহস্পতিবারে তা ছিল আরও বেশি; ৪২ হাজার ৭১২ টিইইউস। আগের দিন বুধবার এ সংখ্যা ছিল ৪০ হাজার ৬৬১ কন্টেইনার।
শনিবার বন্দর থেকে খালাস (সরবরাহ) হয়েছে ১৯৩৫ কন্টেইনার পণ্য। শুক্রবারে ২৫৪১ টিইইউস এবং বৃহস্পতিবার খালাস হয় ২০১১টি কন্টেইনার।
বন্দরে আমদানি-রপ্তানির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলেন, শুরুতে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কলমবিরতির কারণে বন্দরে কন্টেইনার জট তৈরি হয়। পরে গত ৫ জুন থেকে শুরু হয় কোরবানির ঈদের টানা আট দিনের সরকারি ছুটি; সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটি দুদিন।
এ সময়ে চট্টগ্রাম বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম সচল থাকলেও আমদানি-রপ্তানির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কোম্পানি, শিল্প কারখানা, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগ বন্ধ থাকায় কন্টেইনার খালাস কম হয়েছে।
শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে সামনের কর্মদিবসগুলোতে সব স্টেকহোল্ডাররা কাজে ফিরলে সরবরাহ বাড়বে এবং বন্দরে জমে থাকা কন্টেইনারের পরিমাণ কমে আসবে।
চট্টগ্রাম বন্দরের সদস্য (হারবার ও মেরিন) ক্যাপ্টেন আহমেদ আমিন আবদুল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অতীতের অভিজ্ঞতায় এবার ঈদের ছুটিকে সামনে রেখে আগেই বন্দরের ইয়ার্ড খালি করার চেষ্টা ছিল। বিভিন্ন স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে সভা করে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।
সেকারণে এবারের ঈদের বন্ধে অন্যান্যবারের তুলনায় ভালো অবস্থায় ছিল দাবি তার।
তিনি বলেন, শনিবার জেটিতে ভেড়ার অপেক্ষায় থাকা কন্টেইনার জাহাজের সংখ্যা ছিল ছয়টি।
জমে থাকা কন্টেইনার এবং অপেক্ষমান জাহাজের সংখ্যার হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দরের বর্তমান পরিস্থিতি অনেকটাই ভালো দাবি করে তিনি বলেন, “সঠিক ব্যবস্থাপনার কারণে আমরা এ অবস্থান রাখতে পেরেছি। রোববার থেকে পুরোদমে সকল স্টেকহোল্ডাররা কাজে ফিরবে এবং এবং বন্দরেরে কন্টেইনার পরিস্থিতি আরও ভোলো অবস্থানে যাবে আশা করছি।”