Published : 18 Jun 2025, 08:01 PM
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের রোগী ও লাশ পরিবহনে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া নিয়ে কোন ‘মাস্তানি’ বরদাস্ত করা হবে না বলে হুঁশিয়ার করেছেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
বুধবার দুপুরে ‘চমেক হাসপাতালের রোগী ও লাশ পরিবহন নীতিমালায় বর্ণিত অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া পুনঃমূল্যায়ণপূর্বক যৌক্তিকরণ’ সভায় তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
পরে চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসন, পুলিশ, বিআরটিএ ও অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমিতি বৈঠক করে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া পুর্ননির্ধারণ করে ১০ শতাংশ বাড়াতে সম্মত হয়।
তবে নতুন ভাড়া কবে থেকে এবং কতদিনের জন্য কার্যকর হবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
রোগী ও লাশ পরিবহনে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে অনিয়ম, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, মালিক সমিতির বাইরের অ্যাম্বুলেন্স চমেকে ঢুকতে বাধা দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ আসছিল।
সবশেষ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমবায় সমিতির কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
এরপর বুধবার আয়োজিত এ সভায় মেয়র শাহাদাত বলেন, “এখানে কোনো ধরনের মাস্তানি বরদাস্ত করব না। আমার গাড়িতেই নিতে হবে। ওই গাড়ি কেন এসেছে? তাকে মারো, তাকে ঢুকতে দিব না, তা হবে না। যেখানে রোগী কমফোর্ট ফিল করবে সেখানে যাবে। এ ব্যপারে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে কোনো অজুহাত শুনব না।
“কোন ধরনের অনিয়ম-শোষণ সহ্য করব না। এটার বিরুদ্ধে যতদূর যেতে হয় যেতে রাজি আছি। কোন ছাড় দেব না।”
মেয়র শাহাদাত হোসেনের অভিযোগ এ সমস্যা দীর্ঘদিনের। যারা অ্যাম্বুলেন্স চালায় এদের সাথে ওয়ার্ড বয়দের যোগাযোগ আছে। যখন কোনো রোগী মারা যাবে দেখবেন ওয়ার্ড বয় তৎপর হয়ে যাবে।
“অনেক কিছু চালক ও ওয়ার্ড বয়রা মিলে করে ফেলে। সেটা হয়ত মালিক জানতে পারে না। আমরা যদি ওখানে সংস্কার করতে না পারি তাহলে হবে না। ওই জায়গা থেকে রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়ে।”
চমেক হাসপাতালের পরিচালকের ওয়ার্ড বয়, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী, ইন্টার্নি চিকিৎসক এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে সভা করার আহ্বানও জানান মেয়র।
পরে সভার শেষে সংশ্লিষ্টরা বসে ভাড়ার নতুন হার নির্ধারণে আলোচনা করেন।
সভায় মেয়র গাড়ির ফিটনেস, পরিবহন কোম্পানির তথ্য, মালিক ও চালকের নাম-ফোন নম্বর, গাড়িতে রোগী ও লাশ পরিবহন নীতিমালা ও ভাড়ার হার বই সংরক্ষণ, রোগীর ও যাত্রীদের সিটের মান এবং চালক উপযোগী কি না তা নিশ্চিত করতে হবে বলেও তুলে ধরেন।
চট্টগ্রাম অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমান উল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা সর্বশেষ বলেছিলাম আগের চেয়ে ৩০ শতাংশ বাড়িয়ে ভাড়া নির্ধারণের জন্য। কিন্তু সেটা ১০ শতাংশ বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে।
“তবে কখন থেকে এবং কতদিনের জন্য এই ভাড়া কার্যকর হবে তা মেয়র মহোদয় চূড়ান্তভাবে অনুমোদনের পর ঠিক হবে। আমরা সভার সিদ্ধান্তে সম্মতি দিয়েছি। কিন্তু আমাদের সমিতির সদস্যদের সাথেও এখন বসতে হবে।”