Published : 18 Oct 2024, 10:30 PM
শোষণ-বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যয়ে 'দ্রোহ-দাহ-স্বপ্নযাত্রা' নামে সমাবেশ করেছেন সাংস্কৃতিক কর্মীরা।
শুক্রবার ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্যর’ এ সমাবেশ থেকে সংস্কৃতিচর্চার অবাধ ও মুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং সাইবার নিরাপত্তাসহ নিপীড়নমূলক আইন বাতিলের দাবি জানানো হয়।
ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে প্রাণ হারানো ফারহান ফাইয়াজের বাবা শহিদুল ইসলাম ভুঁইয়া এবং প্রবীণ কৃষকনেতা ও লোকসংগীতশিল্পী রণজিৎ বাওয়ালী সমাবেশ উদ্বোধন করেন।
শুরুতে জুলাইয়ের গণআন্দোলনে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর উদীচীর শিল্পীরা সম্মেলক কণ্ঠে পরিবেশন করেন ‘এমন দেশে জনম মোদের বলিব কী আর ভাই’ গান। চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের শিল্পীরা গান ‘কারার ওই লৌহ কপাট’ গানটি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে শহিদুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, “ছাত্ররা বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছে। সেই সংগ্রাম করতে গিয়ে আমার একমাত্র সন্তান নিহত হয়েছে। তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের দায়িত্ব আপনাদের। আপনারা তার স্বপ্নকে সার্থক করে তুলবেন সেটাই আমার প্রত্যাশা।”
সমাবেশে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সহ-সভাপতি জামসেদ আনোয়ার তপন সভাপতিত্ব করেন। বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান লাল্টু ঘোষণাপত্র পাঠ করেন।
ঘোষণাপত্রে ‘মব ভায়োলেন্সের’ মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে পিটিয়ে হত্যা, পাহাড়ে অশান্ত পরিবেশ, সংঘাত ও সহিংসতার ঘটনায় নিন্দা জানানো হয়। সংস্কৃতিচর্চার অবাধ ও মুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা, সাইবার নিরাপত্তা আইনসহ সকল নিপীড়নমূলক আইন অবিলম্বে বাতিলেরও দাবি জানানো হয়।
লাল্টু বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের ‘নতজানু নীতির কারণে’ দেশে ‘ধর্মীয় ফ্যাসিবাদী অপশক্তির আস্ফালন’ জনমনে ভীতি ও আতঙ্কজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। দ্রুত শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।”
সমাবেশে আলোচনায় অংশ নেন শহীদ আসাদ পরিষদের শামসুজ্জামান মিলন, গণসংস্কৃতি কেন্দ্রের জাকির হোসেন, প্রগতি লেখক সংঘের দীনবন্ধু দাশ এবং চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের জাকির হোসেন।
খন্দকার শাহ্ আলম ও সুস্মিতা সুপ্তর সঞ্চালনায় আলোচনা পর্বের পর বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীরা লাঠি খেলা, মূকাভিনয়, নৃত্য, আবৃত্তি ও সংগীত পরিবেশন করেন।
গত দুই বছর ধরে ৩১টি সাংস্কৃতিক সংগঠন আন্দোলন-সংগ্রামে সরব ছিল 'প্রতিবাদী সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহ' নামে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন থেকে শুরু করে নিবর্তনমূলক আইন বাতিল, ভোটাধিকার ও জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নানা বিষয়ে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করেছে সংগঠনটি।
তবে গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর 'প্রতিবাদী সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহ' প্লাটফর্মটি নাম পরিবর্তন করে হয়েছে 'গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্য'।