Published : 16 May 2025, 12:14 AM
ইউরোপে থাকার সুবাদে বলকানের নানা দেশ ভ্রমণের সৌভাগ্য হয়েছে। মাঝে মাঝে মনে হয়, ইউরোপকে জানতে হলে বলকানের দেশগুলো ঘুরে দেখা ছাড়া উপায় নেই। এ অঞ্চলের ইতিহাস ও ঐতিহ্য অপূর্ব সমৃদ্ধি নিয়ে বিরাজ করে। আমরা ভ্রমণে গিয়ে প্রায়ই দর্শনীয় স্থান, খাবার, উৎসব বা ঐতিহ্য নিয়ে লিখি, কিন্তু কোনো দেশের সংস্কৃতি বা সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে খুব কমই কলম চলে। আজ তাই আলোচনা হোক বলকানের সংস্কৃতি আর সেখানকার সাধারণ মানুষের গল্প নিয়ে।
তুরস্কের পশ্চিম প্রান্তে ইস্টার্ন থ্রেস থেকে সার্বিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের এক বিশাল অঞ্চলকে ‘বলকান’ নামে ডাকা হয়। এই অঞ্চল গড়ে উঠেছে বুলগেরিয়া, গ্রিস, উত্তর মেসিডোনিয়া, বসনিয়া, মন্টেনিগ্রো, আলবেনিয়া, ক্রোয়েশিয়া, কসোভো এবং হাঙ্গেরি ও রোমানিয়ার কিছু অংশ নিয়ে। নামটি এসেছে এখানকার বলকান পর্বতমালা থেকে, যদিও স্থানীয় স্লাভরা এই পর্বতকে ‘স্টারা প্ল্যানিনা’ বলে সম্বোধন করে।
এই অঞ্চল ইউরোপের ‘দ্বারপথ’ হিসেবে পরিচিত, কেননা এশিয়া থেকে ইউরোপে প্রবেশের প্রধান পথ এই বিস্তীর্ণ ভূমি। বলকান অঞ্চল পূর্বে কৃষ্ণসাগর, পশ্চিমে অ্যাড্রিয়াটিক সাগর আর দক্ষিণে ভূমধ্যসাগরের কোল ঘেঁষে অবস্থিত। তিন দিকে সমুদ্রের আলিঙ্গনে মোড়া এ অঞ্চলকে প্রায়ই উপদ্বীপ বা পেনিনসুলা বলে ডাকা হয়।
আমার ইউরোপ ভ্রমণ শুরু হয় ২০১৮ সালে, আলবেনিয়া ও বুলগেরিয়ার মাটিতে পা রেখে। দুটিই বলকানের গল্পে মোড়া দেশ। এমনকি ২০২২ সালে বসনিয়া অ্যান্ড হার্জেগোভিনার পথে হাঁটতে গিয়েও বলকানের টান অনুভব করি। বুলগেরিয়া, আলবেনিয়া, মেসিডোনিয়া, মন্টেনিগ্রো, সার্বিয়া—যে দেশেই গেছি, বলকানের পাহাড় আমার মনে গভীর ছাপ ফেলেছে, এক মোহনীয় মাদকতায় ভরিয়ে তুলেছে।
বলকানের দেশগুলো ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় অর্থনীতিতে পিছিয়ে, এ কথা সত্য। পরিসংখ্যান বলে, নেদারল্যান্ডসের জিডিপি একাই বলকানের সব দেশের মোট জিডিপিকে ছাড়িয়ে যায়। বিভিন্ন সামাজিক সূচকেও এ অঞ্চলের দেশগুলো অনেকটা পেছনে। ইউরোপ মানেই আমাদের চোখে ভাসে সুগঠিত রাস্তা, দ্রুতগামী মোটরওয়ে আর আকাশছোঁয়া আধুনিক অট্টালিকার ঝলক। কিন্তু এই চিরচেনা ধারণা নিয়ে বলকানের দিকে তাকালে মন খানিকটা খালি থেকে যায়। সেখানে উন্নত অবকাঠামোর দেখা মেলে না, তবে কয়েকটি শহরের অভিজাত অঞ্চলে এর স্পর্শ কিছুটা লাগে। জরাজীর্ণ রাস্তা, কমিউনিস্ট আমলের পুরোনো বাড়িঘর, আর ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা প্লাস্টিক, পলিব্যাগ, সিগারেটের ছাই বা আবর্জনা—এগুলোই যেন বলকানের পরিচয়।
তবু বলকান আমার হৃদয়ে আলো জ্বালায়, তার মানুষের জন্য। আমাদের দেশের মানুষের মতোই তারা জানে কীভাবে প্রতিকূলতার মধ্যেও হাসি খুঁজে নিতে হয়। একটু অবসর পেলেই তারা বন্ধু-আত্মীয় নিয়ে আনন্দে মেতে ওঠে। সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেড তো এখন পার্টির শহর হিসেবে বিশ্বজুড়ে নাম কুড়িয়েছে। প্রায় চারশো থেকে পাঁচশো বছর ধরে উসমানি সাম্রাজ্য বলকানের নানা দেশ শাসন করেছে। গ্রিস ছাড়া এ অঞ্চলের সব দেশ একসময় কমিউনিস্ট শাসনের অধীনে ছিল। এছাড়া অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান সাম্রাজ্যের প্রভাবও এখানে পড়েছে।
উসমানি শাসনের আগে, ক্রোয়েশিয়া ছাড়া বলকানের প্রতিটি দেশে বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের গভীর ছাপ ছিল। গ্রিসকে পাশ্চাত্য সভ্যতার প্রাণকেন্দ্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। আলবেনিয়ানদের সম্পর্কে খুব বেশি জানা যায় না, তবে তারা প্রাচীন ইলিরিয়ান জাতির উত্তরাধিকারী বলে মনে করা হয়। বুলগেরিয়া, মেসিডোনিয়া, সার্বিয়া, বসনিয়া, মন্টেনিগ্রো ও ক্রোয়েশিয়ার অধিবাসীরা স্লাভ জাতির গৌরব বহন করে। রোমানিয়ার মানুষ রোমানিয়ান ভাষায় মনের ভাব ফুটিয়ে তোলে, যা ল্যাটিন ভাষার কোল থেকে জন্ম নিয়েছে এবং দূরের ইতালিয়ান ভাষার এ ভাষার সঙ্গে মিল খুঁজে পায়।
এ অঞ্চলে তুর্কি জাতির ছাপও স্পষ্ট। এভাবে নানা জাতির মিলনমেলায় বলকান প্রাণচঞ্চল হয়ে ওঠে। বিভিন্ন সাম্রাজ্যের শাসন আর জাতিগোষ্ঠীর সহাবস্থান এ অঞ্চলের ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে বর্ণিল সমৃদ্ধি দিয়েছে। সার্বিয়া, বুলগেরিয়া, রোমানিয়া, মেসিডোনিয়া, গ্রিস ও মন্টেনিগ্রোর অধিকাংশ মানুষ অর্থোডক্স খ্রিস্টান ধর্মে আলোকিত। বসনিয়া, আলবেনিয়া ও কসোভোর বেশিরভাগ মানুষ ইসলামের শান্তির ছায়ায় বিশ্বাসী। ক্রোয়েশিয়া ও হাঙ্গেরির অধিবাসীরা ক্যাথলিক খ্রিস্টান ধর্মের পথে চলে। এভাবে নানা ধর্মের সম্মিলনে এ ভূখণ্ড বৈচিত্র্যের অপূর্ব ছবি এঁকে চলেছে।
রোমান সাম্রাজ্যের কথা বললে আমাদের চোখে রোম বা ইতালি ভেসে ওঠে, অথচ সবচেয়ে বেশি (প্রায় ১৭ জন) রোমান সম্রাট জন্মেছিলেন সার্বিয়ায়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সূচনা হয়েছিল বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার রাজধানী সারায়েভো থেকে, যা পরে সমগ্র ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে। বলকান এমনই বৈচিত্র্যে ভরা। প্রাচ্যের ছোঁয়া এর সংস্কৃতিতে মিশেছে, আবার পাশ্চাত্যের প্রভাবও এখানে স্পষ্ট।
আমাদের দেশে কারও বাড়িতে পা রাখার আগে জুতো খুলে নিই, তারপর হালকা পায়ে ঘরে প্রবেশ করি। কখনও কখনও জুতো হাতে নিয়েই অন্যের আঙিনায় ঢুকি। বলকানের মানুষরাও এমনটিই করেন—জুতো খুলে, হাতে নিয়ে ঘরে যান। ইউরোপে এই রীতি দেখে প্রথমে অবাক হয়েছিলাম। পরে আমার সার্বিয়ান বন্ধু নেনান্দ জানাল, তুরস্ক ও পারস্যের সংস্কৃতির ছোঁয়া বলকানের দেশগুলোয় মিশে আছে। তাই তারা জুতো পায়ে কারও ঘরে পা রাখেন না।
আমাদের দেশে বড়দের নাম ধরে ডাকার সাহস হয় না। তাদের সঙ্গে কথা বলি শ্রদ্ধার সুরে। বলকানের মানুষেরাও বয়োজ্যেষ্ঠদের সঙ্গে কথায় ও আচরণে সম্মান ফুটিয়ে তোলেন। সুইডেন, নরওয়ে, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, জার্মানি ও নেদারল্যান্ডসের সমাজে নারী-পুরুষকে একই দৃষ্টিতে দেখা হয়, সমান মর্যাদা দেওয়া হয়। কিন্তু বলকানের দেশগুলোতে নারীদের পুরুষের সমকক্ষ হিসেবে পুরোপুরি গণ্য করা হয় না। সেখানকার সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি প্রাচ্যের দেশগুলোর মতোই কিছুটা রক্ষণশীল। তাই রেস্তোরাঁ, ক্যাফে কিংবা অন্য কোনো স্থানে কোনো নারী উপস্থিত থাকলে, পুরুষেরা প্রায়শই তার বিল পরিশোধ করে দেওয়ার চেষ্টা করেন, একটি সৌজন্যের হাসি নিয়ে।
বলকানের মানুষের আন্তরিকতা আর অতিথিপরায়ণতা ইউরোপে অতুলনীয়। আলবেনিয়ায় প্রায়ই বলা হয়, আতিথেয়তা আমাদের সংস্কৃতির হৃদয়। বুলগেরিয়া, গ্রিস, সার্বিয়া, রোমানিয়া, কসোভো, বসনিয়া, মন্টেনিগ্রো—যে দেশেই গেছি, সেখানকার মানুষ আমাকে উষ্ণ আপ্যায়নে মুগ্ধ করেছে। এক গ্লাস ওয়াইন, এক কাপ কফি, রাকিয়ার ছোঁয়া, কিংবা এক বেলার খাবার—তাদের সৌজন্যে কখনো কমতি ছিল না। গ্রিক, সার্বো-ক্রোয়েশিয়ান, বুলগেরিয়ান কিংবা মেসিডোনিয়ান ভাষায় আমি সাবলীল নই, তবু তাদের সঙ্গে মিশতে কখনো বেগ পেতে হয়নি। অতিথি এলে তাদের দরজা কখনো খালি হাতে ফেরে না। তবে, সাম্প্রতিক সময়ে কট্টর ও দক্ষিণপন্থি রাজনীতির উত্থানে এই সোনালি ঐতিহ্যে কিছুটা ছায়া পড়েছে।
রাকিয়া আর গ্রিল করা মাংস বলকানবাসীর হৃদয়ের স্পন্দন। রাকিয়া, এক ফলের নির্যাস থেকে তৈরি তীব্র পানীয়, যাতে অ্যালকোহল থাকে ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ। বলকানের মানুষ এই পানীয়কে শুধু তৃষ্ণা মেটানোর সঙ্গী নয়, ওষুধ হিসেবেও গ্রহণ করে। অনেকে ভোরে উঠে খালি পেটে রাকিয়া পান করে, বিশ্বাস করে এটি রোগজীবাণু থেকে রক্ষা করে। কাটা-ছেঁড়ায় ইনফেকশন রোধেও তারা এটি ব্যবহার করে।
বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায় অধিকাংশ মানুষ ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী, তবে তাদের ধর্মীয় অনুশাসন মূলত শুকরের মাংস এড়ানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ। রাকিয়া আর সিগারেটের টান তাদেরও ছাড়ে না। এমনকি কোনো কোনো ইসলামি পণ্ডিতকেও ধূমপানে মগ্ন দেখা যায়। গ্রিলে মাংস রান্নায় বলকানবাসীর দক্ষতা অতুলনীয়। আমাদের মতো ঝাল-মশলার তীব্র স্বাদ তারা পছন্দ করেন না। কয়লার নরম আঁচে, সামান্য লবণ আর গোলমরিচের ছিটেফোঁটা দিয়ে তারা মাংসের স্বাদকে স্বর্গীয় করে তোলে। আর সকালের নাস্তায় ইয়োগার্টের সঙ্গে বুরেক ছাড়া অনেকের দিন শুরুই হয় না। এই সহজ খাবারে তাদের জীবনের রস গভীরভাবে মিশে আছে।
বলকানের অধিবাসীদের হৃদয়ে থাকে পরিবারের প্রতি গভীর টান। গ্রাম কিংবা শহর, সর্বত্রই যৌথ পরিবারের উষ্ণতা ছড়িয়ে থাকে। অর্থনীতির নাজুকতার কারণে সার্বিয়া, বসনিয়া, আলবেনিয়া, কসোভো, বুলগেরিয়া, রোমানিয়া, মন্টেনিগ্রো ও গ্রিসের অনেকে উন্নত জীবনের স্বপ্ন নিয়ে জার্মানি, অস্ট্রিয়া, সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, ইতালি বা নেদারল্যান্ডসে পাড়ি জমান। বিশেষ দিন এলে তারা একত্র হয়, হাসি-আনন্দে ঘর মুখরিত করে।
বলকানের নারীরা? তাদের সৌন্দর্য যেন ইউরোপের গল্পে আলাদা রঙ ছড়ায়। হলিউডের তারকারাও তাদের কাছে ম্লান। পোশাক, মেকআপ আর লিপস্টিকের ছোঁয়ায় তারা ঝলমল করে, যদিও তাদের সৌন্দর্য জন্মগতভাবেই মুগ্ধকর। পুরুষেরা অবশ্য পোশাকে ততটা যত্নশীল নন। অনেকে গলায় ঝলমলে, ভারী চেইন পরেন। চুলে থাকে নজরকাড়া, অনন্য হেয়ার কাট। ইউরোপের বর্ণিল জনগোষ্ঠীর মাঝে তাদের আলাদা করে চেনা যায়, একঝলকে।
বলকানের মানুষদের নিয়ে কিছু কথা মুখরোচক, কিছু কলঙ্কের। আমাদের মতো তারা আবেগে ভাসে, সামান্য কারণেই উত্তেজনার আগুনে জ্বলে ওঠে। পুরুষদের কণ্ঠ উচ্চ, কথার ঝড়ে মুখর। ধর্ম তাদের কাছে পরিচয়ের একটি রঙ, যদিও সবাই তা হৃদয়ে ধারণ করে না। কয়েক বছর আগেও ভিন্ন ধর্মের মিলন তাদের কল্পনায় ছিল অচিন্ত্য। আমার এক বন্ধু বসনিয়ার এক তরুণীর প্রেমে পড়েছিল। কিন্তু তার পরিবারের কাছে গিয়ে শুনল, ধর্ম বদলাতে হবে।
সার্বিয়া, ক্রোয়েশিয়া, মন্টেনিগ্রো, বসনিয়া—এ চার দেশের মানুষ ধর্ম ছাড়া প্রায় একই সুরে বাঁধা। তবু ধর্মীয় পরিচয় এখন তাদের মাঝে গভীর দাগ কেটেছে। জাতীয়তাবাদের আগুন তাদের হৃদয়ে প্রজ্বলিত। সার্বিয়া আর ক্রোয়েশিয়ার সম্পর্ক সাপ-নেউলের মতো। গ্রিস আর তুরস্কের মাঝেও দ্বন্দ্বের ছায়া। বুলগেরিয়ানরা প্রায়ই মেসিডোনিয়ানদের আলাদা জাতি হিসেবে মানতে নারাজ, আর মেসিডোনিয়ানদেরও বুলগেরিয়ানদের প্রতি তেমন মমতা নেই। প্রবাসেও জাতীয়তার আগুন জ্বলে, তর্ক-বিতর্কে মেতে ওঠে তারা। নিকোলা টেসলা সার্বিয়ান না ক্রোয়েশিয়ান—এ নিয়ে দুই জাতির মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকে।
যুগোস্লাভিয়ার পতনের পেছনে অন্যতম কারণ ছিল উগ্র জাতীয়তাবাদ। সার্বিয়ান, বসনিয়ান, ক্রোয়েশিয়ান, মন্টিনিগ্রিন—এ ভাষাগুলো প্রায় কাছাকাছি, বুলগেরিয়ান আর মেসিডোনিয়ানের মধ্যেও তেমন ফারাক নেই। তবু প্রতিটি দেশ এখন নিজের পতাকার ছায়ায় নিজের ভাষাকে আলাদা রঙে রাঙাতে চায়। বলকানের মানুষদের মধ্যে আরেকটি রঙিন অভ্যাস—স্পোর্টস বেটের নেশা। সার্বিয়া, আলবেনিয়া, ক্রোয়েশিয়া, মন্টেনিগ্রো—রাস্তায় হাঁটলেই চোখে পড়বে বেটের দোকান। অনেকে মাসের কষ্টের উপার্জন একদিনে উড়িয়ে দেন। আইনের বাঁধন এখানে ঢিলেঢালা, বাংলাদেশের মতোই। ফুটপাতে মোটরবাইকের দৌরাত্ম্য, ট্র্যাফিক সিগন্যাল অগ্রাহ্য করা, জেব্রা ক্রসিং ছাড়া রাস্তা পার—এসব এখানে নিত্যদিনের চিত্র। এভাবে বলকানের জীবন এক রঙিন ক্যানভাস, যেখানে আবেগ, পরিচয় আর স্বপ্ন একসঙ্গে নাচে।
নেতিবাচকতার ধূসর পর্দা সরিয়ে বলকান যেন এক ঝলমলে ক্যানভাস। স্টারা প্ল্যানিনার সবুজ শ্যামলিমা, ইতিহাসের পাতায় জড়ানো গৌরব, আর এখানকার মানুষের হৃদয়ের উষ্ণতা মনকে আলোড়িত করে। আমাদের দেশের মানুষের সঙ্গে তাদের আত্মার সাদৃশ্য যেন দূরের এই ভূখণ্ডকে কাছের করে তোলে। বলকান শুধু একটি স্থান নয়, এ যেন প্রকৃতি, ইতিহাস আর মানবতার এক অপূর্ব সংশ্লেষ, যা হৃদয়ের গভীরে চিরস্থায়ী ছাপ রেখে যায়।