Published : 14 Jun 2025, 04:14 PM
আওয়ামী লীগ আমলে যাদের রাজপথের সংগ্রামে দেখা যায়নি, কিন্তু ৫ অগাস্ট ক্ষমতার পালাবদলের পর হঠাৎ রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন, তারা যেন বিএনপিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ না পায়, সেই আহ্বান জানিয়েছেন দলটির নেতা ও চট্টগ্রামের মেয়র শাহাদাত হোসেন।
তিনি বলেছেন, “আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যে বার্তা দিয়েছেন, ৫ অগাস্টের পরে যারা বিএনপিতে সক্রিয় হয়েছেন, সে ধরনের নেতাকর্মীরা যেন গুরুত্বপূর্ণ পদ না পায়। তারা মেম্বার হয়ত হতে পারবে। যারা ১৬টি বছর আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে, তারাই যাতে মুখ্য পদগুলো পায়।”
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর লাভ লেইনে একটি কমিউনিটি সেন্টারে মেয়র আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করছিলেন শাহাদাত হোসেন।
তিনি বলেন, “তারেক রহমানের বার্তা আমরা এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পৌঁছে দিতে চাই। উনি আরেকটি কথা বলেছেন, ইতোমধ্যে যারা বিভিন্ন পদ পেয়েছে, তাদের যদি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর সাথে কোনো ছবি থাকে, তাদের সে পদ বাদ দিতে হবে। এ ধরনের কোনো প্রমাণ থাকলে আপনারা কেন্দ্রীয় দপ্তরে এবং এখানকার দপ্তরে তা জমা দেবেন।
“১৬ বছরে যারা আন্দোলন সংগ্রাম করেছে তারাই পদ পাবে। যারা ৫ অগাস্টের পর এসে বিএনপিকে দ্বিধা বিভক্তি করতে চায়, তাদের ব্যপারে আমাদের কথা আছে। আমরা চাই ঐক্যবদ্ধ বিএনপি।”
শাহাদাত বলেন, গত ১৭ বছর বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে ‘গুম’ হয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, ‘বিচার বহির্ভূত হত্যার’ শিকার হয়েছে এবং অনেকে কারাবরণ করেছেন। অনেকে শত শত মামলার শিকার হয়ে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত কোর্টের বারান্দায় ছিলেন।
“আমরা দেখেছি গত ১৬টি বছর অনেক নেতাকর্মী তাদের পরিবারকে আহার দিতে পারেননি। ঘরে থাকতে পারেনি কিন্তু তারা রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। যে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের জন্য গত ১৬টি বছর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের একজন কর্মীও আওয়ামী লীগে যোগ দেয়নি। সে কর্মীরা হচ্ছে সাচ্চা কর্মী, নৈতিকতায় বিশ্বাসী।”
এই বিএনপি নেতা বলেন, “বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া এবং দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে তারা আস্থাশীল এবং তারা এখনো বাংলাদেশে গণতান্ত্রিকভাবে একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য, আমার ভোট আমি দেব যাকে খুশি তাকে দেব- এর অপেক্ষায় তারা আছে।”
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে বিএনপি একটি ‘জাতীয় সরকার’ গঠন করতে চায় বলেও মন্তব্য করেন শাহাদাত।
তিনি বলেন, শুক্রবার লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠকে ২০২৬ এর ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন করার যে বার্তা এসেছে, তা ‘সবার জন্য একটা সুখের বার্তা’।
“যে কথাটা আজকে জাতীয় ঐক্যের কথা বলা হচ্ছে, আমাদের দেশনায়ক তারেক রহমান বলেছেন, সমস্ত বিভেদ ভুলে গিয়ে সবাইকে নিয়ে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে আমরা একটা জাতীয় সরকার গঠন করতে চাই।
“আমরা আমাদের যে গণতান্ত্রিক অধিকার আছে যেটা আমরা হারিয়েছি। আইনের শাসন, মানবাধিকার, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ গঠিত হবে। জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে একটি জাতীয় সরকার গঠন করা হবে, জনাব তারেক রহমান সাহেব বারবার বলেছেন। আমরা কোন বিভেদ রাষ্ট্রীয়ভাবে জাতীয়ভাবে চাই না।”
অন্যদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, চট্টগ্রাম বিএনপির নেতা আবু সুফিয়ান, এনামুল হক এনাম, আবুল হাশেম বক্কর ও এরশাদ উল্লাহ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।