Published : 04 Jun 2025, 06:33 PM
আদালতের আদেশের পর জামায়াতের নিবন্ধন ও দাঁড়িপাল্লা প্রতীক ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
বুধবার বিকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে কমিশন সভায় নীতিগত এ সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশন নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে জামায়াতে ইসলামী দলীয় নিবন্ধন ও প্রতীক ফেরত পাবে। তবে দলীয় প্রতীকটি ফেরতের ক্ষেত্রে দাপ্তরিক প্রক্রিয়া শেষ করতে সময় লাগবে।”
এখন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শেষ হলে এক যুগ পর রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন ও নির্বাচনি প্রতীক দাঁড়িপাল্লা ফেরত পাবে দলটি।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিলের যে রায় হাই কোর্ট দিয়েছিল, এক যুগ পর গত ১ জুন তা বাতিল করে দেয় আপিল বিভাগ।
সর্বোচ্চ আদালত বলেছে, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে এখন নির্বাচন কমিশন জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ও প্রতীকের বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর আপিল শুনানি করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার বিচারকের বেঞ্চ ১ জুন এ রায় দিয়েছিল।
এরপর এ বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে বুধবার বিকাল ৩টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সভায় বসে ইসি। এতে চার কমিশনার উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে জামায়াত ও ইশরাক ইস্যু নিষ্পত্তিতে বৈঠকে আদালতের সাম্প্রতিক আদেশ বা নির্দেশনার উপর কার্যব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে পর্যালোচনা করা হয়।
২০১৩ সালের ১ অগাস্ট সংবিধানের সঙ্গে গঠনতন্ত্র ‘সাংঘর্ষিক হওয়ার কারণ দেখিয়ে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করা হয়।
এর তিন বছর পর ২০১৬ সালের ১২ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ‘দাঁড়িপাল্লা’ ন্যায় বিচারের প্রতীক হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের মনোগ্রামে ব্যবহৃত হবে এবং কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও দলের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।
ওই সিদ্ধান্ত ইসি সচিবালয়ে পাঠানোর পর নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা ২০০৮ এর বিধি ৯ এর উপবিধি (১) এর ৩২ নম্বর ক্রমিক থেকে ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীক বাতিল করার প্রস্তাব কমিশন সভায় অনুমোদিত হয়। তারপর আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত নিয়ে জামায়াতের জন্য বরাদ্দ মার্কা দাঁড়িপাল্লা নির্বাচনি প্রতীকের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে ২০১৭ সালের ৮ মার্চ গেজেট জারি করে ইসি।
এক যুগ বাদে গত রোববার তা বাতিল করে দেয় আপিল বিভাগ।
সেদিনই নির্বাচন কমিশন বলেছিল, রায়ের অনুলিপি হাতে পাওয়ার পরই জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ও প্রতীক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বুধবার কমিশন সব কিছু পযালোচনা করে নিবন্ধন ও প্রতীক দেওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন।
এখন নির্বাচনবিধিমালা সংশোধন করে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর গেজট প্রকাশ করা হবে।
নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, “জামায়াতের দলীয় নিবন্ধন এবং দলীয় প্রতীক দুটি ফেরত পাবেন। তবে দলীয় প্রতীকটি এখন যেহেতু আমাদের এসআরও করতে হবে। এটা একটা দাপ্তরিক প্রক্রিয়া আছে। একটু সময় লাগবে।”
পাশাপাশি অতিরিক্ত বেশ কিছু প্রতীক সন্নিবেশ করা হবে তুলে ধরে তিনি বলেন, “ইসির সংরক্ষিত প্রতীকের সংখ্যাটাকে বর্তমানে আমাদের ৬৯ টি প্রতীক আছে। এটাকে আমরা ১০০তে উন্নীত করব। এই পুরোকাজ একসাথে সম্পন্ন হবে।”
হাই কোর্টের রায় বাতিল, এক যুগ পর নিবন্ধন ফিরে পাচ্ছে জামায়াত
নিবন্ধনের সঙ্গে ফিরবে দাঁড়িপাল্লা, সিইসির সঙ্গে বৈঠকের পর আযাদ
রায়ের কপি পেলে জামায়াতের নিবন্ধন-প্রতীক নিয়ে সিদ্ধান্ত: ইসি সচিব