Published : 24 Jun 2024, 04:46 PM
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাচ্ছেন বলেই তিনি ‘সুস্থ আছেন’।
তবে যেসব রোগে তিনি ভুগছেন সেগুলোর কয়েকটি ‘নিরাময়যোগ্য নয়’ জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, তার শারীরিক সমস্যা কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আমি এটুকু বলব, বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার যে চিকিৎসা প্রয়োজন তিনি যে হাসপাতালে আছেন সে হাসপাতাল থেকে সেটা পাচ্ছেন বলেই এখন পর্যন্ত সুস্থ আছেন।”
হঠাৎ অসুস্থতা বেড়ে গেলে শুক্রবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসনকে অ্যাম্বুলেন্সে করে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারপর তাকে সিসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়।
এরপর অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল কয়েক দফা বৈঠকের করে খালেদা জিয়ার শরীরে পেসমেকার বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও মেডিকেল বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন রোববার রাতে বলেন, “ম্যাডামের হার্টে পারমানেন্ট পেসমেকার বসানো হয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টার জন্য উনাকে সিসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। চিকিৎসার ব্যাপারে মেডিকেল বোর্ড পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।
শরীরে পেসমেকার স্থাপনের পর খালেদা জিয়া ‘যথেষ্ট সুস্থ আছেন’ বলেই আইনমন্ত্রীর ভাষ্য।
তিনি বলেন, “ এখানকার চিকিৎসকরা মনে করেছিলেন, বাইরে থেকে চিকিৎসক এনে তার কিছু চিকিৎসা করা প্রয়োজন সে ক্ষেত্রে সরকার অনুমতি দিতে কার্পণ্য করেনি। আমি সঙ্গে সঙ্গে অনুমতি দিয়েছি। যারা এই কথা বলছেন যে আমার জন্য চিকিৎসা পাচ্ছেন না তারা নিজেকে হাস্যসকর করছেন।”
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ব্যাপারে আইনমন্ত্রীর ‘আন্তরিকতা’ আর ‘মানবিকতা’ নিয়ে বিএনপি যে প্রশ্ন তুলেছে, সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আনিসুল হক বলেন, “উনাদের এখন ভারসাম্য সঠিক আছে কিনা সেটা একটু দেখতে হবে। এই ভারসাম্য ঠিক নাই বলেই তারা এসব কথা বলছেন।”
আইনমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতারা চাইলে সংবাদ সম্মেলন করেও তার বিষয়ে উষ্ম প্রকাশ করতে পারেন।
“তবে আশা করব তারা সত্য কথা বলবেন, ব্যক্তিগত আক্রমণ করবেন না।”
৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া ডায়াবেটিস, আর্থারাইটিস ছাড়াও হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন। গত চার বছরে বেশ কয়েকবার তাকে হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালে কারাগারে যেতে হয়েছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে। করোনাভাইরাস মহামারীর শুরুতে তার পরিবারের আবেদনে সরকার নির্বাহী আদেশে দুই শর্তে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। শর্ত হল, তাকে নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে এবং তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না।
গত তিন বছরে পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে কয়েক দফা অনুমতি চাইলেও ওই শর্তের যুক্তি দেখিয়ে প্রতিবারই তা নাকচ করেছে সরকার।