Published : 12 Jun 2025, 10:22 AM
ইতালিতে ভিসা ও নথিপত্র জালিয়াতির অভিযোগে তিনজন আইনজীবী, দুই পুলিশ সদস্য এবং বেশ কয়েকজন বাংলাদেশিসহ মোট ৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির বিশেষ তদন্তকারী দল।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ানতেদোসি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুক ও এক্স-এ দেওয়া এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
স্থানীয় গণমাধ্যমে পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তারকৃতরা দীর্ঘদিন ধরে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি এবং জাল নথি ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশ থেকে অভিবাসীদের ইতালিতে প্রবেশে সহায়তা করে আসছিল। অভিবাসীদের বৈধতার প্রক্রিয়াতেও তারা জালিয়াতির আশ্রয় নিত।
সরকার বিষয়টি নজরে আনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে গঠিত একটি বিশেষ তদন্তকারী দল নেপলস (নাপোলি) অঞ্চলে তদন্ত শুরু করে। তদন্তে বেশ কয়েকটি সংঘবদ্ধ চক্রের সন্ধান পাওয়া যায়।
এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার ইতালির প্রসিকিউটর নিকোলা গ্রাত্তেরি এবং পুলিশ কর্মকর্তা দেল প্রেতের নেতৃত্বে নাপোলির নোলানো এলাকায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ৩ জন আইনজীবী, ২ জন পুলিশ সদস্য এবং বাংলাদেশিসহ মোট ৪৫ জনকে আটক করা হয়।
নেপলস আদালতের নির্দেশে তৌহিদ কামালসহ মোট ১১ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া আব্দুর রাজ্জাক রিপন, মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, ফজলুল করিম, রাসেল আলী মীর ও রফিকুল শেখসহ ২১ জনকে গৃহবন্দী রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাকি ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
প্রসিকিউটর নিকোলা গ্রাত্তেরি বলেন, “আটককৃতরা বিভিন্নভাবে জাল নথিপত্র ব্যবহার করে অভিবাসীদের ইতালিতে প্রবেশ এবং বৈধতার সুযোগ করে দিত। এসব কাজের জন্য তারা মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করত।”
করোনাভাইরাস মহামারী পরবর্তী সময়ে শ্রমিক সংকট মোকাবিলায় ইতালি সরকার ২০২৩ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত তিন বছরে সাড়ে ৪ লাখ নন-ইউরোপিয়ান শ্রমিক নেওয়ার ঘোষণা দেয়। ২০২৩ সালে নির্ধারিত কোটা ছিল ১ লাখ ৩৬ হাজার, যেখানে আবেদন পড়ে প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার।
আর ২০২৪ সালে ১ লাখ ৫১ হাজার কোটার বিপরীতে আবেদন পড়ে প্রায় ৬ লাখ ৯০ হাজার, যার একটি বড় অংশ জমা পড়ে দক্ষিণ ইতালির বন্দর নগরী নাপোলি থেকে।
তদন্তকারীরা মনে করছেন, কোটা বিপর্যয়ের এই বিশাল ফারাকের সুযোগ নিয়েই গড়ে উঠেছে জালিয়াতির এই চক্র।