Published : 01 Jun 2025, 07:41 PM
টানা ভারী বর্ষণে রাঙামাটির বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে।
রোববার সকাল থেকে অন্তত তিনটি স্থানে পাহাড় ধসের পর ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে ৬৭২ জনকে সরিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। এ ছাড়া লোকজনকে ঝুকিপূর্ণ পাহাড় থেকে সরে যেতে লাগাতার মাইকিং করা হচ্ছে।
এ ছাড়া উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ডুবে গেছে রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ফসলি জমি। সওজ বলছে, বিভিন্ন রাস্তায় ছোট-বড় অন্তত ১৫টি স্থানে ধসে হয়েছে।
রাস্তায় এরই মধ্য জেলা সদর, বাঘাইছড়ি, জুরাছড়ি, বিলাইছড়ি, বরকল, নানিয়ারচর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় রাঙামাটির জেলায় ২৪৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আসা দুর্গতদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
সকালে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মঘাছড়ি এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া লংগদু উপজেলার করল্যাছড়িতে পাহাড় ধসে ঘটনা ঘটেছে।
তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় প্রশাসন, সড়ক বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস সড়ক থেকে মাটি সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।
এ ছাড়া জুরাছড়ি উপজেলায় গ্রামীণ সড়ক ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।
এদিকে খাগড়াছড়ির দীঘিনালার মাইনী নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এরই মধ্যে দীঘিনালার মেরুং ইউনিয়নের হেডকোয়ার্টার এলাকা সড়ক ডুবে গেছে।
এর ফলে রাঙামাটি লংগদুর সঙ্গে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
সদর উপজেলার সাপছড়ি ইউনিয়নে পাহাড়ি ঢলে প্রায় ২০০টি পরিবার প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক সংযোগ বন্ধ রয়েছে বেশ কিছু কিছু এলাকায়।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরীন আক্তার বলেন, “পৌর এলাকার আশপাশে কয়েকটি গ্রামে পানি ওঠেছে। উপজেলায় ৫৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা রাখা হয়েছে। তবে আশ্রয়কেন্দ্রে লোকজনের উপস্থিতি কম।”
রাঙামাটি সদরের ইউএনও রিফাত আসমা বলেন, “সদর উপজেলায় সাপছড়ি ইউনিয়নে অতি বৃষ্টি এবং পাহাড়ি ঢলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়েছে। প্রায় ২০০ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”
সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর রাঙামাটি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা বলেন, জেলার সড়কগুলোতে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে ছোট-খাটো ১৫টি ধসের ঘটনা হলেও সেগুলো অপসারণ করা হয়েছে। সড়কে যান চলাচল সচল রাখতে টিম সবসময় কাজ করছে।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রশাসনের পক্ষ হতে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। জেলায় মোট ২৪৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আমাদের জরুরি টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ হতে মাইকিং করে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে আসার আহ্বান করা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আসা লোকজনদের পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।