Published : 18 Jun 2025, 10:22 AM
আমের জাত খিরসাপাতের মৌসুম এখন শেষ দিকে। ফলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া এই আমের সরবরাহ কম গেছে। এ সুযোগে একদিনের ব্যবধানে খিরসাপাত আমের বাজার দর বেড়ে গেছে এক হাজার টাকা। এতে খুশি আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা।
মঙ্গলবার দিনভর চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট আম বাজার ঘুরে দেখা যায়, খিরসাপাত আম মণপ্রতি ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার দুইশত টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগের দিনই এই আমের বাজার দর ছিল ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা।
এ ছাড়া বাজারে গুটি ও অন্যান্য আমের দাম মণে বেড়েছে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা। প্রতি মণ গুটি আম ৯৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা ও ল্যাংড়া আম ১ হাজার ৪০০ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
কানসাট এলাকার আব্বাস বাজারের আম চাষি রবিউল আওয়াল বলেন, খিরসাপাত আমের মৌসুম এখন শেষের দিকে। সোমবার বাজারে এ আমের সরবরাহ কমে যায়। আর বৃষ্টিতে অন্যান্য আম নেমেছিল কম; বাজার ছিল বাড়তির দিকে। তাই এক লাফে দাম বেড়েছে এক হাজার টাকা।
তিনি ৪ হাজার ২০০ টাকা মণ দরে খিরসাপাত আম বিক্রি করেছেন।
বিনোদপুর ইউপির টাপ্পু গ্রাম থেকে খিরসাপাত আম নিয়ে বাজারে আসা খাইরুল ইসলাম বলেন, সোমবার যে আম ২ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি করেছি আজ (মঙ্গলবার) সে রকম আম ৪ হাজারে বিক্রি করলাম। ক্ষীরশাপাতির বাজার এরকম থাকলে আগের ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নিতে পারব।”
কানসাট বাজার থেকে খিরসাপাত আম কিনতে এসেছেন, বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরিচালক সিরাজুর রহমান।
তিনি বলেন, একটি কোম্পানির পক্ষ থেকে উপহার দেওয়ার জন্য আম কিনতে এসেছেন। এসে দেখেন বাজার চড়া। পরে ৪ হাজার ২০০ টাকা মণ দরে ৬ হাজার কেজি খিরসাপাত আম কিনেছেন তিনি।
কানসাট আম বাজারের আড়তদার মো. মুজিবুর রহমান সরকার বলেন, তার আড়তে বেশির ভাগ বেপারী অনলাইন প্লাটফর্মে খিরসাপাত আম মার্কেটিংয়ের জন্য কিনেছেন ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার টাকা মণ দরে।
এর আগে সোমবারও খিরসাপাত আমের বাজার দর নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন চাষিরা। প্রত্যাশার চেয়ে প্রায় অর্ধেক দামে এ আম বিক্রি হওয়ায় তারা লোকসানের মুখে পড়ছিলেন।
মের শেষে কানসাট বাজারে আম নামতে শুরু করে। শুরুতেই বাজারে উঠে গোপালভোগ আম। দাম ছিল এক হাজার ৮০০ থেকে তিন হাজার টাকা মণ। আর খিরসাপাত আম বিক্রি হয়েছে দুই হাজার টাকার ওপরে।
এরপর জুনের শুরুতে খিরসাপাত আম বিক্রি হয় দুই হাজার ২০০ থেকে দুই হাজার ৮০০ টাকা দরে। তবে কোরবানির ঈদের দীর্ঘ ছুটির প্রভাবে ৪ জুন থেকে আমের দাম কমে যায়। দাম নেমে আসে এক হাজার ৬০০ থেকে দুই হাজার ৪০০ টাকায়।
ঈদের পরে ভালো দামের আশায় গাছ থেকে খিরসাপাত আম পাড়া বন্ধ রাখেন চাষিরা। এর মধ্যে প্রচণ্ড গরমে বাগানের গুটি, ল্যাংড়া ও ফজলি আম পেকে যায়। ঈদের পরে সব আম একসঙ্গে নামে বাজারে। এতে আমের বাজার দর কমে যায়; চাপে পড়ে ক্ষীরশাপাতির বাজার।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো ইয়াছিন আলী জানান, গরমে দ্রুত আম পেকে যাওয়ায় চাষিরা একসঙ্গে সব আম বাজারে নামায়। এতে আমের বাজার দর কমে যায়।
তবে খিরসাপাতের মৌসুম এখন শেষের দিকে। বাজারে সরবরাহ কম, কিন্তু চাহিদা বেশি। তাই দাম ভালো। এতে আগের ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নিতে পারবেন আম চাষিরা।
আরও পড়ুন