Published : 11 Jun 2025, 12:12 PM
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে এক ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়িয়ে নেওয়াকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল ও যুবদলের কর্মী-সমর্থকদের সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হওয়া যুবক মারা গেছেন।
মঙ্গলবার রাত সোয়া ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বলে জানান রূপগঞ্জ থানার ওসি লিয়াকত আলী।
নিহত মামুন হোসেন ভূঁইয়া (৩২) উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের মাঝিপাড়া এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে। মাঝিপাড়া এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির দোকান রয়েছে তার।
নিহতের বড় ভাই ভুলতা ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক বাদল হোসেন বলেন, মঙ্গলবার বিকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয় মামুন। মুমূর্ষ অবস্থায় তাকে প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে এবং সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, বিকালে মাঝিপাড়া এলাকায় ভুলতা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাব্বির হোসেন খোকাকে আটক করে স্থানীয়রা। সেখানে যুবদল নেতা বাদলের অনুসারী কর্মী-সমর্থকরাও ছিলেন।
পরে ছাত্রলীগ নেতাকে বাদলের বাড়ির দিকে নেওয়ার পথে হামলা চালায় জেলা ছাত্রদলের সাবেক প্রচার সম্পাদক জায়েদুল ইসলাম বাবু ও তার লোকজন। পরে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ সময় বাবু ও তার সমর্থকরা গুলি চালালে ছোটভাই মামুন গুলিবিদ্ধ হন বলে অভিযোগ করেন যুবদল নেতা বাদল হোসেন।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি বলেন, “বাবু ছাত্রলীগ নেতার পক্ষ নিয়ে আমার বাড়ির সামনে এসে ফায়ার করে। আমার ছোটভাই তখন গুলিবিদ্ধ হয়। রাতে ভাইটা মারা গেছে। তার লাশ এখনও হাসপাতালে।”
সাবেক ছাত্রদল নেতা জায়েদুল ইসলাম বাবু উপজেলা যুবদলের সভাপতি প্রার্থী। তিনি জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমানের ভাতিজা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যোগাযোগ করা হলে অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি দাবি করেন, গোলাগুলির খবর তিনি পেয়েছেন, তবে সেখানে তিনি ছিলেন না।
নারায়ণগঞ্জে ছাত্রদল-যুবদলের সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ যুবক
স্থানীয়রা জানান, রূপগঞ্জে বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে বিভক্তি রয়েছে। একটি অংশের নেতৃত্ব দেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু এবং অপরটির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির।
দিপু ভূঁইয়ার অনুসারী বাদল হোসেনের সঙ্গে কাজী মনিরের অনুসারী বাবুর স্থানীয় আধিপত্য নিয়ে পুরনো দ্বন্দ্ব রয়েছে।
ওসি লিয়াকত আলী বলেন, “গুলিবিদ্ধ ব্যক্তি মারা গেছেন বলে জেনেছি। এই ঘটনায় রাতেই একটি মামলা হয়েছে। হাসপাতাল থেকে মৃত্যুর কাগজপত্র পেলে আদালতে আবেদনের মাধ্যমে মামলাটিতে হত্যার ধারাও যুক্ত হবে।”
এদিকে, মঙলবার আটক ছাত্রলীগ নেতা সাব্বির হোসেন খোকা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে বলেও জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, “স্থানীয় লোকজন খোকাকে মারধর করে পা ভেঙে দিয়েছে। সে এখন জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন আছে। তার চিকিৎসা শেষ হলে আদালতে পাঠানো হবে।”