Published : 17 May 2025, 05:26 PM
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলায় পুকুর খননকারীর কাছে ‘চাঁদা চাইতে গিয়ে’ গণপিটুনীর শিকার হওয়া যুবদল ও কৃষক দলের পাঁচ নেতাকর্মীকে চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার বিকালে উপজেলার ধুবিল ইউনিয়নের নইপাড়া গ্রামের এ ঘটনায় শনিবার সকালে থানায় মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সলঙ্গা থানার ওসি হুমায়ুন কবির।
নইপাড়া গ্রামের মৃত বানু সেখের ছেলে সায়েদ আলী আটজনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির এ মামলা করেছেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন, সলঙ্গা থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল মোমিন (৪০), সদস্য রোকনুজ্জামান খোকন (৪৫) ও সলঙ্গা থানা কৃষক দলের সদস্য সচিব আব্দুস সোবহান (৪৭), তাদের সহযোগী ও দলীয় কর্মী সলঙ্গার চৌধুরী ঘুঘাট গ্রামের আশরাফ আলী (৩০) এবং মালতিনগর গ্রামের মামুন সরকার (৪০)।
এর আগে শুক্রবার বিকালে নইপাড়া এলাকায় চাঁদা চাইতে গিয়ে বিক্ষুব্ধ লোকজনের গণপিটুনির শিকার হন এই নেতাকর্মীরা।
স্থানীয় শহিদুল ইসলাম ও আরব আলী বলেন, বিকালে তিন-চারটি মোটরসাইকেলে ৮-৯ জন নইপাড়ায় এসে গ্রামের পুকুর খননকারী শহিদুল ইসলামের কাছে চাঁদা দাবি করেন।
তখন এলাকার বিক্ষুব্ধ নারী-পুরুষ কয়েকজনকে আটকে রেখে পিটুনি দেন। বাকিরা পালিয়ে যায়।
এ সংক্রান্ত কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছে। এতে বেশকিছু বিক্ষুব্ধ নারী-পুরুষকে ওই নেতাদের আটকে রেখে মারধর করতে দেখা গেছে।
সংবাদ পেয়ে শুক্রবার রাত ১০টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে পাঁচ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।
এ ঘটনায় শনিবার সকালে চাঁদাবাজির মামলা করেন ভুক্তভোগী সায়েদ আলী।
মামলার এজাহারে তিনি বলেন, নইপাড়া মৌজায় ১৩ বিঘা জমিতে পুকুর খনন করার সময় মাসখানেক আগে প্রশাসন তা বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে সেখানে থাকা ভেকু মেশিন দিয়ে স্থানীয় হোসেন আলীর বাড়িতে মাটি ভরাটের কাজ চলছিল।
এ অবস্থায় বিভিন্ন সময়ে মামলায় আসামিরা বাদীর কাছে দেড় লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। তার জের ধরে শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে যুবদল ও কৃষক দলের নেতাকর্মীরা মটরসাইকেলে ঘটনাস্থলে পৌছেন।
সেসময় তারা বলেন- ‘এখানে ব্যবসা করতে চাইলে আমাদের দেড় লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে।’ চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তারা সায়েদ আলীকে গালমন্দ করলে তার বড় ভাই আব্দুল মোন্নাফ প্রতিবাদ করেন।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আসামিরা সায়েদ আলী ও তার ভাইকে মারধর করেন এবং ভেকু মেশিন ভাঙচুর করেন বলে মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে।
বিষয়টি টের পেয়ে বিক্ষুব্দ গ্রামবাসী ঘটনাস্থলে পৌছে পাঁচজনকে আটকে রেখে মারধর করেন এবং তাদের তিন-চারটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। এ সময় বাকিরা পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে সলঙ্গা থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম সরকার বলেন, “ধানের জমিতে পুকুর খনন সরকারিভাবে অবৈধ। এছাড়াও ওই এলাকায় পুকুর খননের মাটি পরিবহনের কারণে রাস্তাঘাট নষ্ট হচ্ছে। যে কারণে দলের নেতাকর্মীরা জনস্বার্থে পুকুর খনন বন্ধ করতে সেখানে গিয়েছিল, চাঁদাবাজি করতে যায়নি।”
সলঙ্গা থানার ওসি হুমায়ুন কবির বলেন, “আটকদের রাতেই জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে ভুক্তভোগীর মামলার পর শনিবার দুপুরে গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।”
পুরানো খবর
সিরাজগঞ্জে 'চাঁদা চাইতে গিয়ে' পিটুনির শিকার যুবদল-কৃষক দলের ৩ নেতা