Published : 15 Dec 2024, 04:53 PM
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় মোবাইল চার্জ দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুজনের কাটাকাটির জেরে সংঘর্ষ দুই গ্রামবাসীর মধ্যে ছড়িয়েছে। এতে অন্তত ৬০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি উজায়ের আল মাহমুদ আদনান জানান, উপজেলার বর্ণি ও কাঠাঁলবাড়ী গ্রামবাসীর মধ্যে শনিবার রাতে প্রথমে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এরপর রোববার সকাল থেকে দুই পক্ষের মধ্যে আবারও সংঘর্ষ বাধে; যা চলে দুপুর পর্যন্ত।
সংঘর্ষ চলাকালে উপজেলা সদর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ সড়ক দিয়ে সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রে আসা-যাওয়ার গাড়িগুলো আটকা পড়ে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। বেলা ২টার পর সংষর্ষ থামলেও রাস্তাঘাটে ইটপাটকেলের স্তুপ পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
রোববার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার প্রভাকর রায় বলেন, মারামারির ঘটনায় আহত হয়ে রোববার বেলা ৩টা পর্যন্ত ৬০ জন চিকিৎসা নিয়েছেন । আর গুরুতর আহত তিনজনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”
এছাড়া আহত ‘আরও অনেকে’ আছে, যারা চিকিৎসা নিয়েছেন কিন্তু রেজিস্ট্রার খাতায় তারা এন্ট্রি করেননি বলে এই চিকিৎসকের ভাষ্য।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে ওসি উজায়ের আল মাহমুদ বলেন, ‘‘শনিবার বিকালে বর্ণি গ্রামের এক ব্যক্তির সঙ্গে মোবাইলে চার্জ দেওয়া নিয়ে কাঠাঁলবাড়ী গ্রামের এক ব্যক্তির বাকবিতণ্ডা হয়। সেখানে কাঠাঁলবাড়ী গ্রামের এক ব্যক্তিকে মারধরের ঘটনায় বর্ণি গ্রামের লোকজন সড়কে গাড়ি আটকে অবরোধ করেন। পরে থানা সদরে কোম্পানীগঞ্জ, বর্ণি ও কাঁঠালবাড়ী তিন গ্রামের লোকজনের মধ্যে দেশি অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয় এবং পরে তা সংঘর্ষে গড়ায়। সংঘর্ষ চলে রাত ৯টা পর্যন্ত।
“এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোববার সকাল ১০টার দিকে বর্ণি গ্রামের বাসিন্দারা মাইকে ঘোষণা দিয়ে দেশি অস্ত্র নিয়ে কাঁঠালবাড়ী গ্রামের দিকে এগিয়ে যায়। পরে উপজেলা সদরে দুই পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। বেলা ২টা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলে।”
তিনি বলেন, “সংঘর্ষ চলাকালে সড়কের দুইপাশে গাড়ি আটকা পড়ে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ও সেনাবাহিনীর দুই পক্ষকে সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করেন। বর্তমানে বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’’
এর আগে শনিবার রাতে কোম্পানীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার শাকেরা খাতুন রুপি বলেন, “রাত ১১টা ৫০মিনিট ৫০ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
“একজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। বাকিরা প্রথিমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন।’’
কোম্পানীগঞ্জের বাসিন্দারা বলছেন, বোববারর সকাল থেকে সংঘর্ষের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেন বর্ণি ও কাঁঠালবাড়ী গ্রামের লোকজন। সিএনজি চালিত অটেরিকশায় মাইক বেঁধে গ্রামের লোকজনকে সংঘর্ষের জন্য বেরিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়। এরপর দুই গ্রামের লোকজন উপজেলার থানা বাজার পয়েন্টে দফায়-দফায় সংঘর্ষে জড়ান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও এলাকায় থমথমে ভাব বিরাজ করছে।