Published : 01 Jan 2025, 08:45 PM
সারা দেশের ন্যায় পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতেও সাধারণ বইয়ের পাশাপাশি পাহাড়ের চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের মাঝে স্ব স্ব মাতৃভাষার বই বিতরণ করা হয়েছে।
বুধবার সকালে জেলা শহরের বনরুপা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণ করেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সীমা চাকমা।
এ ছাড়া জেলার ১০ উপজেলার চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর ৩০ হাজার ৫৩৪ শিক্ষার্থীর মাঝে শতভাগ নিজস্ব মাতৃভাষার বই বিতরণ করার কথা জানিয়েছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।
নতুন বছরের প্রথম দিন নিজেদের মাতৃভাষায় বই পেয়ে উচ্ছ্বাসিত পাহাড়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা।
অভিভাবকরা জানান, ছেলে-মেয়েরা নিজেদের ভাষায় বই পেয়েছে, এতে তারাও অনেক খুশি। কিন্তু স্কুলগুলোতে এখনও ভালো করে পড়ানোর শিক্ষক নেই। নিজেদের মাতৃভাষা শিক্ষার বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ। অনেক অভিভাবক মাতৃভাষাটা ঠিকমত বলতে এবং লিখতে পারেন না, তাই এটা শেখার অবশ্যই প্রয়োজন আছে।
২০১৭ সাল থেকে পার্বত্য এলাকায় চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের মাঝে নিজস্ব ভাষার বই বিতরণ করছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
রাঙামাটি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস জানিয়েছে, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে জেলার ১০ উপজেলার ৩০ হাজার ৫৩৪ জন চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের ৬৯ হাজার ২২১টি বই বিতরণ করা হয়েছে।
এর মধ্যে প্রাক প্রাথমিকে সাত হাজার ৬৩৫ জন, প্রথম শ্রেণিতে সাত হাজার ৬১০ জন, দ্বিতীয় শ্রেণিতে সাত হাজার ৯১৬ ও তৃতীয় শ্রেণিতে সাত হাজার ৩৭৩ জন শিক্ষার্থী।
রাঙামাটি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হৃষীকেষ শীল বলেন, “পার্বত্য জেলার জন্য মাতৃভাষায় যে বইটি সরকার চালু করেছে, সেই বইগুলো শতভাগ আমাদের কাছে চলে এসেছে। ইতিমধ্যে আমরা স্ব স্ব বিদ্যালয়ে বই পৌঁছে দিয়েছি। আজকে পাহাড়ের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী শিক্ষার্থীদের মাঝে শতভাগ বই বিতরণ করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, পার্বত্য জেলা পরিষদের সহায়তায় পাহাড়ের শিক্ষার্থীদের মাতৃভাষায় শিক্ষা দেওয়ার লক্ষ্যে স্ব স্ব মাতৃভাষার শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে; যা প্রায় শেষ দিকে।
প্রশিক্ষণ শেষ হলে পাহাড়ের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী শিক্ষার্থীদের নিজেদের মাতৃভাষার পাঠদান শুরু করা হবে বলে জানান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।