Published : 23 Jan 2025, 09:46 PM
“শীতের কারণে সকালে কাজে যেতে কষ্ট হয়। একটু দেরিতে গেলে গৃহস্থের কাজে নিতে চায় না। এ জন্য প্রতিদিন কাজেও যাওয়া হয় না।”
কথাগুলো বলছিলেন পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী এলাকার দিনমজুর মোবারক আলী।
দেশের উত্তরের এ জেলায় গত কয়েকদিন ধরেই তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাসে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। রাতের মত দিনেও শিশির পড়ছে শিলা বৃষ্টির মতো। সবসময় কুয়াশাচ্ছন্ন থাকে পুরো জেলা। এ পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় বলছেন, “আকাশের উপরিভাগে মেঘ এবং ঘন কুয়াশার কারণে সূর্যের তাপ ভূ-পৃষ্ঠে আসছে না। ফলে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে। কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা বাড়লেও, ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে উত্তরের এ জেলা।”
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ে ১২ ডিগ্রি এবং বেলা ৩টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
এদিন সাারাদিন সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। কুয়াশাচ্ছন্ন দিনে সকাল ও বিকালে মাত্র ৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি তাপমাত্রার ব্যবধান লক্ষ্য করা গেছে বলে জানান এ আবহাওয়া কর্মকর্তা।
এর আগে বুধবার পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
পঞ্চগড়ে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও বিকালের পর থেকে আবারও শীত বাড়তে শুরু করে। আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছে শিশু ও বয়স্করা।
বৃহস্পতিবার সকালে জেলার কয়েকটি স্থারে ঘুরে দেখা গেছে, হাঁড়কাঁপানো শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে খড়কুটো জ্বালিয়েছেন কেউ কেউ। প্রয়োজনের বাইরে ঘর থেকে তেমন কেউ বের হয়নি। কিন্তু পেটের তাগিদে ভ্যান চালক, পাথর শ্রমিক, চা শ্রমিক, দিন মজুর থেকে নিম্নআয়ের মানুষদের সড়কে দেখা গেছে।
ঘন কুয়াশা ও বাতাসের কারণে কাজে যেতে অসুবিধা হচ্ছে বলে জানান তারা।
বোদা বাজারের রিকশা চালক এরশাদ বলেন, “শীতের কারণে সকালে বের হওয়া যায় না। আবার সন্ধ্যা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘরে ঢুকতে হয়। এছাড়া সকালে এবং সন্ধ্যার পরে শহরে লোকজনও কম থাকে। সবমিলিয়ে রোজগার কম হচ্ছে।”
অটোরিকশা চালক মাছুদ রানা বলেন, “শীতের সময় গাড়ি চালাতে কষ্ট হয়। কোনো কোনো দিন কুয়াশা বেশি থাকলে ধীরে ধীরে গাড়ি চালাতে হয়। এতে সময় বেশি লাগে। অনেক সময় কুয়াশার কারণে সকাল বেলায়ও হেডলাইট জ্বালিয়ে যাতায়াত করতে হয়।”