Published : 03 Jun 2025, 02:35 PM
গাজীপুরের শ্রীপুরে কারখানার ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যুর জেরে বিক্ষোভরত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
এ সময় কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয় পুলিশের এপিসি গাড়ি।
মঙ্গলবার সকাল ৯টায় শ্রীপুরের নয়নপুর নতুন বাজার এলাকায় জিন্নাত নিটওয়্যার লিমিটেড কারখানা সংলগ্ন এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন শিল্প পুলিশের গাজীপুরের শ্রীপুর সাবজোনের ইনচার্জ মো. আব্দুল লতিফ।
পাল্টা-ধাওয়ার এই ঘটনায় পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। বর্তমানে সেখানে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত রয়েছেন। কারখানার ভেতরে অবস্থান করছেন বিপুল সংখ্যক শ্রমিক।
এর আগে সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জিন্নাত নিটওয়্যার কারখানার ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে মারা যান শ্রমিক মো. জাকির হোসেন (৩০)। তিনি নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলার বাদেচিরাম গ্রামের মুক্তার উদ্দিনের ছেলে।
তার সহকর্মীদের দাবি, সোমবার জাকির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটি চাইতে গিয়েছিলেন। কিন্তু ছুটি না দিয়ে তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার কারণে তিনি অভিমানে আত্মহত্যা করেছেন।
ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ার পর গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রাত ৯টায় চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এনিয়ে মঙ্লবার সকালে বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকরা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের দাবি, পুলিশ পূর্বপরিকল্পিতভাবে সেখানে অবস্থান নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছেন।
কারখানার শ্রমিক মামুন বলেন, দুর্ব্যবহারের কারণে তাদের এক সহকর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় শ্রমিকরা আন্দোলন করছিলেন। এসময় অতর্কিতভাবে তাদের ওপর টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ।
অপর শ্রমিক কায়সার বলেন, আগে থেকেই কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করে। এসব বিষয় সুরাহা না করে শ্রমিকদের ওপর এভাবে হামলা করা ঠিক হয়নি।
অপরদিকে পুলিশ জানিয়েছে, ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানা ভাঙচুরের চেষ্টা চালায়। পরে তাদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার সময় শ্রমিকরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে কয়েকটি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করতে হয়েছে।
শিল্প পুলিশের গাজীপুরের শ্রীপুর সাবজোনের ইনচার্জ মো. আব্দুল লতিফ বলেন, “শ্রমিকরা আমাদের একটি এপিসি গাড়ি ভাঙচুর করে। পরে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছি।”
এদিকে শ্রমিকের মৃত্যুর বিষয়ে কারখানার এজিএম জুবায়ের বাসার বলেন, “ওই শ্রমিক ছুটি চাইতে যাননি। পারিবারিক কলহের কারণে হতাশায় ভুগছিলেন ওই শ্রমিক। হতাশা থেকেই তিনি লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।”