Published : 18 Jun 2025, 08:06 PM
টানা ভারি বৃষ্টির কারেণে পাহাড় ধসের আশঙ্কা এবং পর্যটকদের ঝুঁকি এড়াতে বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার পর্যটনকেন্দ্র ‘দেবতাখুম’ বন্ধ ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
বুধবার বিকালে রোয়াংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি বান্দরবান পার্বত্য জেলায় টানা ভারি বর্ষণের ফলে নদী, ছড়া, ঝিরি পানির প্রবাহ আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধসের ঝুঁকিও দেখা দিয়েছে। এমতাবস্থায়, রোয়াংছড়ি উপজেলার অন্তর্গত জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র ‘দেবতাখুম’ এ পর্যটকদের চলাচল অত্যন্ত ঝু্ঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
“স্থানীয় প্রশাসনের নিরাপত্তা মূল্যায়নে দেখা গেছে যে, বর্তমান পরিস্থিতে দেবতাখুমে যাতায়াত ও অবস্থান কোনোভাবেই নিরপদ নয়। তার কারণে পর্যটক ও স্থানীয় জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পর্যটকদের ১৮ জুন থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত দেবতাখুমে ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করা হল।”
এ ছাড়া দুর্ঘটনা বা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে যার যার ক্ষেত্রে স্থানীয় পর্যায়ে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং প্রয়োজনীয় তদারকি কার্যক্রম জোরদার করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
দেবতাখুম পর্যটককেন্দ্রের অবস্থান রোয়াংছড়ি উপজেলায়। বান্দরবান সদর থেকে এর দূরত্ব ৩০-৩৫ কিলোমিটার। খোলা জিপ (চাঁদের গাড়ি) অথবা অটোরিকশায় রোয়াংছড়ি উপজেলার কচ্ছপতলি পর্যন্ত যেতে হয়। এরপর চল্লিশ থেকে এক ঘণ্টার মত হাঁটা পথ।
নিরাপত্তাজনিত কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর চলতি বছর ১১ ফেব্রুয়ারি দেবতাখুম পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়। তখন থেকে বেড়াতে আসা পর্যটকদের ভিড়ে প্রতিদিন মুখর থাকে দেবতাখুম।
দেবতাখুম পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সব পর্যটক, গাইড এবং স্থানীয় লোকজনকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আলেক্ষ্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিশ্বনাথ তঞ্চঙ্গ্যা।
তিনি বলেন, “এই সময়ে এমনিতে পর্যটক কম থাকে। তারপরও যারা আসে তাও কম নয়। ১০ তারিখ একটা বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। একটুর জন্য সবাই বেঁচে গেছে। সেদিন উজানের দিকে বৃষ্টি হয়েছিল মনে হয়। হঠাৎ করে দেবতাখুমের উপর ১২ ফুটের উঁচু সমান পাহাড়ি ঢল আসা শুরু করেছিল। সবাই দ্রুত নিরাপদে চলে যেতে পেরেছিল বলে রক্ষা পেয়েছিল। বন্ধের ঘোষণা ভাল সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
এদিকে বান্দরবান আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সনাতন কুমার মণ্ডল জানান, বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বান্দরানে মোট ৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া কয়েক দিন যাবৎ ভারি বৃষ্টিপাত এবং তার ফলে পাহাড় ধসের অশঙ্কাও রয়েছে।