Published : 25 Jan 2025, 08:40 PM
পার্বত্য অঞ্চলের ১৩টি ভাষা-ভাষীর ১৪টি আদিবাসী জুম্ম জাতি নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে বলে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি-জেএসএস এর সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা।
শনিবার দুপুরে রাঙামাটি শহরের নিউমার্কেট এলাকায় আশিকা কনভেনশন হলে ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী জুম্ম জনগণের সামগ্রিক পরিস্থিতি আলোকে নাগরিক সমাজের ভূমিকা’ প্রসঙ্গে সুধী সমাবেশ ও মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান সন্তু লারমা বলেন, “পার্বত্য অঞ্চলে একটা নিরাপত্তাহীন, অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে জুম্ম জনগণ বেঁচে আছে এবং নানাভাবে তাদের বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকারগুলো আদায়ের জন্য আন্দোলন করে চলেছে।
“বাংলাদেশে বহু ভাষা ভাষী আদিবাসী জাতি আছে, তাদের সেই অস্তিত্বকে অবাঞ্ছিত করার উদ্দেশ্যে পাঠ্যবই থেকে আদিবাসী শব্দ সম্বলিত গ্রাফিতি ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। বাংলাদেশে শুধু বাঙালি জাতি বাস করে না, এখানে আরও বহু ভাষাভাষীর কমপক্ষে ৫১টি জাতিগোষ্ঠী বসবাস করেন। আজকে তাদেরকে অস্বীকার করা হচ্ছে।”
বাংলাদেশকে এক জাতি, এক রাষ্ট্র, এক ধর্মের দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে মনে করেন জেএসএস সভাপতি।
সভায় বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম পার্বত্য অঞ্চলের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমার সভাপতিত্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কে এস, মং মারমা, আদিবাসী ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বান্দরবান শাখার প্রতিনিধি অংচ মং মারমা, সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের সাংগঠনিক সম্পাদক থোয়াঅং মারমা, আদিবাসী ফোরামের ছাত্র ও যু্ব বিষয়ক সম্পাদক লেলুং খুমি এবং আদিবাসী ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার প্রতিনিধি ও সদস্য নমিতা চাকমা বক্তব্য দেন।
এ ছাড়া তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায় থেকে দীননাথ তঞ্চঙ্গ্যা, গুর্খা সম্প্রদায় থেকে মনোজ বাহাদুর গুর্খা, সাঁওতাল সম্প্রদায় থেকে মনু মুরমু সাঁওতাল, অহমিয়া সম্প্রদায় থেকে অনুপ কুমার আসামসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তাদের অভিযোগ, নিজেদের অতিত্ব রক্ষায় পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির আলোকে ভূমি কমিশন গঠনসহ অন্যান্য বিষয়গুলো বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের বৈষম্যের শিকার হতে হবে এবং হচ্ছি। যে সরকার ক্ষমতায় আসুক না কেন, আদিবাসীদের ক্ষেত্রে সবাই একই মনোভাব নিয়ে আমাদের দমিয়ে রাখার জন্য চেষ্টা করেন।
‘আদিবাসীদের’ অস্তিত্ব রক্ষার পাশাপাশি পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই বলে মনে করেন বক্তারা।
সভায় রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি থেকে আদিবাসী ফোরামের নেতা ও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।