Published : 18 Jun 2025, 10:30 PM
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় ‘চুরির বিচারের প্রতিশোধ নিতে’ সালিসকারীর এক কিশোর ছেলেকে বিষ মিশ্রিত তরল খাইয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
কয়েক দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর কুমিল্লা সদর হাসপাতালে কিশোরের মৃত্যু হয় বলে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) রাশেদুল ইসলাম চৌধুরী জানান।
নিহত হোসাইন (১২) উপজেলার শিকারপুর গ্রামের আবু তাহের ও শাহিনা আক্তারের ছেলে। সে শিকারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
এ ঘটনায় ১২ জুন বুড়িচং থানায় হোসাইনের মা শাহিনা আক্তার একটি মামলা করেছেন। মামলায় শিকারপুর গ্রামের মো. সোলাইমানের দুই ছেলেকে আসামি করা হয়েছে। তাদের একজন আলাউদ্দিন, অন্যজন কিশোর (১৬)।
হোসাইনের বাবা আবু তাহের বলেন, সম্প্রতি শিকারপুর এলাকার মইনুল হোসেনের মুদি দোকানে চুরির ঘটনা ঘটে। এই চুরির ঘটনায় একই এলাকার অটোরিকশা চালক সোলাইমানের কিশোর ছেলেকে সন্দেহ করেন মইনুল। পরে গ্রাম্য সালিসে আরো চারজন সালিসকারীর সঙ্গে তিনিও ছিলেন। সালিসে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
আবু তাহের অভিযোগ করেন, “এর জের ধরে ৩১ মে সোলাইমানের দুই ছেলে আমার ছেলে হোসেইনকে তাদের বাড়িতে ডেকে নেয়। হোসাইনের হাত-পা বেঁধে বেধড়ক মারধর করে। এক পর্যায়ে জোরপূর্বক বিষপান করিয়ে তার অণ্ডকোষে এসিড ঢেলে দেয়।”
তিনি বলেন, তারপর হোসাইনকে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে পাঁচদিন ছিল। তারপর দুইদিন ছিল একটা বেসরকারি হাসপাতালে। হোসাইনের অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যাওয়ার কারণে তাকে আবার সদর হাসপাতালের আইসিইউতে নিয়ে আসি। সেখানে ভর্তি অবস্থায় বুধবার হোসেন মারা যায়।”
হোসাইনের মা শাহেনা বেগম বলেন, “আমার ছেলে ১২ দিন ধরে আইসিইউতে থেকে জীবন-মরণের সঙ্গে লড়াই করে মারা গেছে। চুরির বিচার করতে গিয়ে আজ আমি আমার নিষ্পাপ ছেলেকে হারিয়েছি। আমি আমার ছেলের হত্যাকারীর বিচার চাই।”
কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের চিকিৎসক অরূপ কুমার রায় বলেন, “বিষক্রিয়ায় ছেলেটির গলা ফুলে গিয়েছিল, শ্বাসকষ্টে ভোগছিল। অণ্ডকোষ ঝলসে গিয়েছিল সম্পূর্ণ। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্টেই জানা যাবে কী ধরনের বিষপ্রয়োগ কিংবা রাসায়নিক ব্যবহার হয়েছিলো।”
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) রাশেদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, হাসপাতালে মারা যাওয়া হোসাইনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।