Published : 15 Jun 2025, 06:48 PM
লক্ষ্মীপুরে চুরির মামলার জামিনকে কেন্দ্র করে আদালত বর্জনের ঘোষণার পর আইনজীবীদের সঙ্গে কর্মচারীদের হাতহাতির ঘটনা ঘটেছে।
রোববার দুপুরে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত-৩ এ এই ঘটনা ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শী আইনজীবীরা জানান।
এ সময় আদালতের স্টেনোগ্রাফার আশরাফুজ্জামান রক্তাক্ত জখম হন। ঘটনার সময় এজলাসে উত্তেজনা দেখা দিলে ভীত হয়ে পড়েন ভেতরে থাকা বিচারপ্রার্থীরা।
আদালত সূত্র জানায়, ৬ জুন সদর মডেল থানায় লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের আইনজীবী আবু তৈয়ব একটি চুরির মামলা করেন। সেই মামলায় রায়পুর প্রিন্সিপাল কাজী ফারুকী স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আহমেদ কাউসার উদ্দিন জামান এবং ট্রাক চালক রুবেল হোসেন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন।
৯ জুন তারা আদালতে জামিন প্রার্থনা করেন। সেই আবেদনে বলা হয়, মামলার বাদী একজন আইনজীবী। এজন্য আদালতে আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী জামিন শুনানিতে অংশ নেননি।
আইনজীবী না পেয়ে জামিন শুনানির জন্য আসামিরা লক্ষ্মীপুর লিগ্যাল এইড কার্যালয়ে আইনি সহায়তা চান। সেখান থেকে দুজন আইনজীবীকে শুনানি করতে বলা হয়। কিন্তু হেনস্তার ভয়ে তারা জামিন শুনানিতে অংশ নেননি।
১০ জুন জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত-৩ এর বিচারক এম সাইফুল ইসলাম আসামিদের জামিন মঞ্জুর করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বিচারপ্রার্থী জানান, দুপুরে আদালতের বিচারক এজলাসে বসা ছিলেন। এসময় সাত থেকে আটজন আইনজীবী কক্ষে ঢুকে আদালত বর্জনের ঘোষণা দেয়। এ নিয়ে তাৎক্ষণিক হট্টগোল দেখা দেয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিচারক তখন কর্মচারীদের দরজা বন্ধ করে দিতে বলেন। তখন আইনজীবী ও কর্মচারীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। আহত হন স্টেনোগ্রাফার আশরাফুজ্জামান। এতে বিচারকার্য সম্পন্ন না করেই বিচারক এম সাইফুল ইসলাম এজলাস থেকে নেমে যান।
আহত আশরাফুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, “বিচারকের নির্দেশে এজলাসের দরজা বন্ধ করতে গেলে আইনজীবীরা আমার ওপর হামলা করে। আমার শার্ট ছিঁড়ে ফেলেছে। বাম চোখের পাশে রক্তাক্ত জখম হয়েছে।”
আইনজীবী আশিকুর রহমান বলেন, “কয়েকজন আইনজীবী এজলাসে আদালত বর্জনের বিষয়টি জানাতে যান। তখন কর্মচারীরা উল্টো আমাদের ওপর হামলা করে।”
লক্ষ্মীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. রফিক উল্যাহ বলেন, “আইনজীবী আবু তৈয়বের বাসার গেইট কেটে চুরির ঘটনায় দুজন আাসামি গ্রেপ্তার ছিল। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাদের রিমান্ডের আবেদন করেন। বিচারক রিমান্ড শুনানি নামঞ্জুর করে ১০০ টাকার বন্ডে জামিন মঞ্জুর করে। তাড়াহুড়ো করে আসামিদের জামিন অন্য অর্থ বহন করে। আমাদের বিরোধিতা আমলে নেননি বিচারক। শুনানিতে আসামি পক্ষে একজন আইনজীবী ছিলেন।”
তিনি আরও বলেন, “ঘটনাটি জেলা জজসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আমরা ওই বিচারকের আদালত বর্জনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে এজলাসে গিয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়। তবে কোনো হট্টোগোল বা হামলা হয়নি।”