Published : 03 Mar 2025, 07:57 PM
বগুড়ার আলোচিত তুফান সরকারকে আদালতের নারী হাজতখানায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আদালত পুলিশের এক এসআইকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
সোমবার বিকালে বগুড়ার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের দ্বিতীয় তলায় এ ঘটনা ঘটে বলে বগুড়ার আদালত পুলিশের ওসি মোসাদ্দেক হোসেন জানান।
তুফান সরকার বগুড়া শহর শ্রমিক লীগের সাবেক আহ্বায়ক। তিনি বগুড়া শহরের চকসুত্রাপুর এলাকার মজিবর সরকারের ছেলে। তিনি যুবলীগ নেতা ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর আবদুল মতিন সরকারের ভাই।
কিশোরীকে ধর্ষণ ও মা-মেয়ের মাথা মুণ্ডন করে দেওয়ার অভিযোগে আলোচনায় আসার পর তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। তার বিরুদ্ধে হত্যা, মাদক, ধর্ষণ, ছিনতাইসহ ১৭টি মামলা রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে নারী হাজতখানার দরজা কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। তখন ভেতরে তুফান সরকার, তার স্ত্রী, ছোটবোন, শাশুড়ি, স্ত্রীর বড় বোন এবং একজন আইনজীবী সহকারী ছিলেন। ঘটনাটি জানাজানি হলে আদালত চত্বরে হইচই শুরু হয়।
পরে তাড়াহুড়া করে তুফান সরকারকে প্রিজনভ্যানে কারাগারে পাঠানো হয় এবং তার পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
বগুড়ায় শ্রমিক লীগের আলোচিত তুফান সরকার গ্রেপ্তার
ওসি মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, “সকালে তুফান সরকারকে বিদ্যুৎ আদালতে হাজিরার জন্য কারাগার থেকে আনা হয়। দুপুরের মধ্যেই কারাগার থেকে আনা সব হাজতিকে প্রিজনভ্যানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। হাজতখানার চাবি এসআই জয়নাল আবেদিনের কাছে থাকে।
“তুফান সরকারকে কারাগারে না পাঠিয়ে তাকে নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সুযোগ করে দেন এসআই জয়নাল আবেদিন। আদালতের সবার অগচোরে ঘটনাটি ঘটেছে।”
ঘটনার পর পরই একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জানিয়ে বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা সাংবাদিকদের বলেন, “পুরুষ আসামিকে নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে এসআই জয়নাল আবেদিনকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। পুলিশের আরো যাদের গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
২০১৭ সালে এক কলেজছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে তুফান সরকারের বিরুদ্ধে। পরে সালিশ ডেকে ওই ছাত্রী ও মাকে মারধর করে তাদের মাথা ন্যাড়া করে দেয় তুফান সরকার। সেই ঘটনায় দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হলে তুফান সরকারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এর মধ্যে ২০২২ সালের ১০ জানুয়ারি তিনি জামিনে কারাগার থেকে বের হন তুফান সরকার। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান। ২৪ ডিসেম্বর তাকে ফের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর দুদকের করা মামলায় তার ১৩ বছরের কারাদণ্ডের সাজা দেয় আদালত।
পুরানো খবর
বগুড়ায় শ্রমিক লীগের আলোচিত তুফান সরকারের ১৩ বছরের কারাদণ্ড
তুফানের ফাঁসি, তার স্বজনদের মাথা ন্যাড়া করার দাবি
ধর্ষণ ও মুণ্ডন: বগুড়ার সেই ছাত্রী অভিভাবকের জিম্মায়
বগুড়ায় তুফানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র
'কারাগারে' তুফানের মাদক সেবন: তদন্ত শুরু