Published : 22 May 2025, 09:35 PM
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার ১৩০টি গ্রামে ১৭ ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ ফিরেছে।
বুধবার গভীর রাত থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত উপজেলার পুরো এলাকাই বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন ছিল।
তবে সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে এবং বাকি এলাকায় পর্যায়ক্রমে চালু হয় যাবে বলে জানিয়েছেন নাসিরনগর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) প্রকৌশলী মো. আমজাদ হোসেন।
দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎবিহীন থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সরকারি-বেসরকারি অফিস, বৃদ্ধ ও শিশু, শিক্ষার্থী, দোকানি ও সাধারণ মানুষ।
বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে খবর নিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ দোকান খোলা থাকলেও ফ্রিজ, এসি, সেলাই মেশিন কাজ করছিল না। এতে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
চাতলপাড় ইউনিয়নের ব্যবসায়ী হরিমন বলেন, “দোকানের ফ্রিজে থাকা ১০ হাজার টাকা মূল্যের আইসক্রিম সব নষ্ট হয়ে গেছে।”
ভলাকুট ইউনিয়নে বাসিন্দা শামীম মিয়া বলেন, “সারাদিনে দুই ঘণ্টাও বিদ্যুৎ পাই না। এর মধ্যে ১২ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন। বাড়ির ফ্রিজে থাকা সব কিছু নষ্ট হয়ে গেছে।”
হরিপুর গ্রামের সাদিয়া আক্তার বলেন, “আজ আমার অনলাইন ক্লাস ছিল। বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল চার্জ দিতে পারিনি। বাসায় গরম, আলো নেই, ফ্যান চলে না, কীভাবে পড়াশোনা করব?”
নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক কর্মী জানান, বিদ্যুৎ না থাকায় চিকিৎসা সরঞ্জাম চালাতে সমস্যা হচ্ছে। জরুরি রোগীদের অক্সিজেন কিংবা শিশু ওয়ার্ডে গরমে রোগীর কষ্ট বেড়েছে। বিদ্যুৎ অফিস বলছে, যান্ত্রিক ত্রুটি।
চাতলপার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, “গতকাল থেকে বিদ্যুৎ নেই। সকাল ১০টায় এসে ১২টায় চলে যায়; সন্ধ্যা ৬টা বাজলেও বিদ্যুৎ নাই। বিদ্যুৎ না থাকায় জনজীবনে অনেক সমস্যা হচ্ছে।”
এ বিষয়ে নাসিরনগর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) প্রকৌশলী মো. আমজাদ হোসেন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বলেন, “বুধবার রাতের দিকে নাসিরনগর ফিডারে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। আমাদের টেকনিক্যাল টিম রাতেই কাজ শুরু করে। সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ চালু হয়েছে।”
পর্যায়ক্রমে বাকিগুলো চালু হয়ে যাবে জানিয়ে তিনি বলেন, যেহেতু এলাকাটি বিস্তীর্ণ, এজন্য সময় একটু বেশি লাগছে।
তবে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, আগাম কোনো ঘোষণা ছাড়াই প্রায়ই বিদ্যুৎ চলে যায় এবং একবার গেলে দীর্ঘসময় থাকে না।