Published : 14 Jun 2025, 05:53 PM
পঞ্চগড়ের দুইটি সীমান্ত দিয়ে ১৬ জনকে ‘পুশইন’ করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষা বাহিনী-বিএসএফ।
শনিবার ভোরে পঞ্চগড় সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের মিস্ত্রিপাড়া ও তেতুঁলিয়া উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের পেদিয়াগছ সীমান্ত দিয়ে তাদের বাংলাদেশে পুশইন করা হয় বলে জানিয়েছেন পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনিরুল ইসলাম।
পরে বিজিবির টহল দল স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাদের আটক করে মিস্ত্রি পাড়া ও পেদিয়াগছ ক্যাম্পে নিয়ে যায়।
বিজিবি জানায়, ধাক্কামারা ইউনিয়নে বিজিবির মিস্ত্রিপাড়া বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় সীমান্তের মেইন পিলার ৪২১ এলাকা দিয়ে বিএসএফের ১৩২ ব্যাটালিয়নের ইশানগঞ্জ ক্যাম্পের সদস্যরা ১১ জনকে পুশইন করে।
পরে উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের রজলী বাজার এলাকা থেকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাদের আটক করে বিজিবি। আটকদের মধ্যে সাতজন বাংলাদেশি এবং চারজন ভারতের নাগরিক বলে দাবি করা হয়েছে।
বাংলাদেশিরা হলেন- খুলনা সিটি করপোরেশনের ফতেবাজার মুধূপুর এলাকার আয়েশা শেখ (৩৯), তার ছেলে নিশান শেখ (২২) ও মিরাজুল শেখ (২০), নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার খাশিয়াল ইউনিয়নের শুক্তক গ্রামের নিলুফা আক্তার (৩৭), এবং মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার আক্তার মোল্লার ছেলে আবু তালেব (২১)। বাকি দুজন শিশু।
অপরদিকে, যে চারজনকে ভারতীয় বলে দাবি করা হয়েছে, তারা হলেন- পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার হাবড়া থানার বালিহাটি এলাকার আজিজুল আলী মণ্ডল (৩১), স্ত্রী আজমিরা খাতুন (২৫) এবং তাদের দুই ছেলেমেয়ে।
পরে বাংলাদেশিদের সদর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং আটক ‘চার ভারতীয়কে’ মিস্ত্রিপাড়া বিজিবি ক্যাম্পে রাখা হয়েছে। তাদের পরিচয় নিশ্চিত করে বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ভারতে ফেরত পাঠানোর কাজ চলছে বলে জানিয়েছে বিজিবি।
এদিকে, পেদিয়াগছ বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় সীমান্তের মেইন পিলার ৪৩২ এর ১ নম্বর সাব পিলার এলাকা দিয়ে পাঁচ বাংলাদেশিকে ‘পুশইন’ করে বিএসএফের ১৩২ ব্যাটালিয়নের পুরোহিতগছ ক্যাম্পের সদস্যরা।
পরে তাদের ৮০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে দক্ষিণ পেদিয়াগছ এলাকা থেকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আটক করে বিজিবি।
আটককৃতরা হলেন, নড়াইল জেলার সদর উপজেলার বিরগ্রাম এলাকার ইশ্বর গোপাল চন্দ্র বিশ্বাসের মেয়ে বন্দনা রানী বিশ্বাস (৩৭), যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার শ্যামনগর এলাকার তরিকুল শেখ (৪২), শারশা উপজেলার বড় কলোনি এলাকার কোরবান আলী গাজী (৩৩), তার স্ত্রী নাজমা বেগম (২৭), কোরবানের বোন ফারজানা মারফত আলী গাজী (২৩)।
পরে তাদের তেতুঁলিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
পঞ্চগড় সদর থানার এসআই কাইয়ূম আলী বলেন, “পুশইন হওয়া ৭ বাংলাদেশিকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করে বিজিবি। পরে তাদের পঞ্চগড় সদর ইউনিয়ন পরিষদে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে। আমাদের পুলিশ তাদের পাহারা দিচ্ছে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে। আইনী প্রক্রিয়া শেষে তাদের হস্তান্তর করা হবে।”
তেতুঁলিয়া মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নজির হোসেন বলেন, “পুশইন হওয়া পাঁচ বাংলাদেশিকে আমাদের কাছে হস্তান্তরের পরে তাদের তেতুঁলিয়া ডাকবাংলোতে রাখা হয়েছে। আমাদের পুলিশ তাদের পাহারা দিচ্ছে।
“আটকদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে। আইনী প্রক্রিয়া শেষে তাদের হস্তান্তর করা হবে। ”
পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনিরুল ইসলাম বলেন, “আমরা বাংলাদেশিদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছি। আর ভারতীয়দের বিএসএফের পতাকা বৈঠকের মাধ্যেমে ভারতে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা চলছে। ”