Published : 30 May 2025, 12:51 PM
সুনামগঞ্জে প্রেমিকার বিয়ের খবর পেয়ে তাকে ছুরিকাঘাত করার অভিযোগ উঠেছে সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। হামলার পর ওই তরুণ নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। পরে তাকে আটক করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জ পৌর শহরের হাসননগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে সুনামগঞ্জ সদর থানার ওসি (তদন্ত) মনিবুর রহমান জানান।
এ ঘটনায় অভিযোগের মুখে থাকা সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থ (২৮) সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের নৌকাখালি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি সিলেট শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি।
গত ৫ অগাস্টের পর একাধিক মামলায় সঞ্জীবন পলাতক ছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। ছুরিকাঘাতে আহত ওই তরুণী (২৬) একই উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা।
সঞ্জীবন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং মেয়েটি জেলার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও আহত তরুণীর স্বজনরা বলছেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই তরুণী সুনামগঞ্জ পৌর শহরের হাসননগর এলাকা দিয়ে ভাবি ও ছোট বোনকে নিয়ে পার্লারে যাচ্ছিলেন। এ সময় সঞ্জীবন মেয়েটিকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। পরে বোন, ভাবি এবং এলাকার লোকজন মেয়েটিকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে সঞ্জীবন সেখান থেকে পালিয়ে গিয়ে শহরের ধোপাখালি শ্মশানে গিয়ে নিজের শরীরেও ছুরিকাঘাত করেন।
তখন প্রত্যক্ষদর্শীরা সঞ্জীবনকে ধরে পুলিশে দেন। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন উন্নত চিকিৎসার জন্য। সেখানে পুলিশের পাহাড়ায় তার চিকিৎসা চলছে।
সঞ্জীবনের স্বজনদের বরাতে মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও নৌকাখালি গ্রামের বাসিন্দা বাচ্চু মিয়া বলেন, “মেয়েটি সিলেট শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সঞ্জীবনের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্প্রতি তাদের প্রেম ভেঙে যায়।
“গত ৫ অগাস্টের পর একাধিক মামলায় সঞ্জীবন আসামি হয়ে পালিয়ে বেড়াছিলেন। এখন মেয়েটির বিয়ের খবর পেয়ে তাকে আক্রমণ করেছে এবং নিজেকেও ছুরিকাঘাত করেছে। রোববার মেয়েটির বিয়ের পিঁড়িতে বসার কথা ছিল।”
পেশায় চিকিৎসক মেয়েটির এক চাচাতো ভাই বলেন, তার বোনের শরীরে ধারালো অস্ত্রের অন্তত ১০টি আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। যার নয়টিই গভীর ক্ষত। তাৎক্ষণিক অস্ত্রোপচার করা হলেও বোনের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক।
মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কিছুদিন ধরে সঞ্জীবন মেয়েটিকে বিয়ের জন্য চাপ এবং বিভিন্ন হুমকিও দিচ্ছিলো। বিষয়টি সঞ্জীবনের পরিবারকে জানানো হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি। এ কারণে এই ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটেছে।
সুনামগঞ্জ সদর থানার (তদন্ত) মনিবুর রহমান বলেন, “সঞ্জীবনকে আটক করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এখন সে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে।”