Published : 15 Jun 2025, 08:32 PM
ঈদের ছুটি শেষে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-কুয়েট খুললেও অচলাবস্থা কাটেনি। ক্লাস নিয়ে অনিশ্চয়তার পাশাপাশি স্থবির হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক এবং উন্নয়ন কার্যক্রম।
৪ থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত কোরবানির ঈদের ছুটি থাকায় বন্ধ ছিল বিশ্ববিদ্যালয়। রোববার ক্যাম্পাস খুললেও শিক্ষকরা ক্লাসে না ফেরায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধই রয়েছে।
দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, ক্যাম্পাস অনেকটাই নীরব। কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসের সড়কগুলোতে চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দাপ্তরিক কাজ করছেন।
কুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক আবদুল্লাহ ইলিয়াছ আক্তার বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়, হল সব খোলা আছে। তবে ঈদের আগে শিক্ষার্থী যারা গেছে, তারা বুঝতে পারছে যে, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পরপরই ক্যাম্পাসে ক্লাস হচ্ছে না। তাই এখন শিক্ষার্থীরাও তেমন ক্যাম্পাসে নেই।”
কুয়েট শিক্ষক সমিতি জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষ ও শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচারের জন্য শিক্ষক সমিতি বা শিক্ষকদের যে দাবি ছিল, এখনো তারা সেই অবস্থানেই আছেন।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. সাহিদুল ইসলাম বলেন, “আমরা এখনো আগের অবস্থানেই আছি। শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে ঢাকায় গিয়ে কথা বলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এরপর আমরা একটা সাধারণ সভা করব। এরপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়; এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এরপর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় কার্যত অচল। সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তে ৭৫ দিন পর ৪ মে শিক্ষা কার্যক্রম চালু হলেও ক্লাস-পরীক্ষা সেই ফেব্রুয়ারি থেকেই বন্ধ আছে।
সংঘর্ষের ঘটনার পর শিক্ষার্থীদের লাগাতার আন্দোলনের মুখে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে অপসারণ করে সরকার। পরে ১ মে চুয়েটের অধ্যাপক মো. হজরত আলীকে অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলেও শিক্ষকদের বিরোধিতার মুখে তিন সপ্তাহের মাথায় ২২ মে তিনি পদত্যাগ করেন।
কুয়েটের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ভর্তি হয়ে প্রায় দেড় বছরের সেশনজট পোহাতে হয়েছে। এখন আবার একই শঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রায় চার মাস হয়ে যাচ্ছে। এখনো ক্লাসে ফিরতে পারেননি তারা। দ্রুত তারা ক্লাসে ফিরতে চান।
কুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক আবদুল্লাহ ইলিয়াছ আক্তার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের আর্থিক ক্ষমতা উপাচার্যের হাতে। উপাচার্য না থাকায় সবকিছু বন্ধ হয়ে গেছে। শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন-ভাতা, বিল সবই আটকে আছে। উপাচার্যের স্বাক্ষরের অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান ৬০০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজও থমকে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
ছাত্র কল্যাণ পরিচালক বলেন, “আমাদের একটা প্রতিনিধিদল অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেলে শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলতে যাবেন। বিশেষ করে জুন মাস হওয়ায় বরাদ্দ হওয়া অর্থ এই মাসের মধ্যে খরচ করতে না পারলে আর্থিক জটিলতা তৈরির শঙ্কা রয়েছে। এ জন্য অন্তর্বর্তীকালীন হলেও একজন উপাচার্য দরকার।”