Published : 12 Jun 2025, 08:44 AM
শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে এ বছরের শুরুতে স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসাকে পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণের ঘোষণা দিয়েছিল কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ। সেই ঘোষণার পাঁচ মাস বাদেও জাতীয়করণের আগের ধাপ- এমপিওভুক্তিই শুরু হয়নি।
আশ্বাস বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতায় হতাশা প্রকাশ করেছেন বছরের পর বছর নামমাত্র সম্মানীতে পাঠদান করে আসা শিক্ষকরা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, এবতেদায়ী মাদ্রাসাগুলোর এমপিওভুক্তি প্রক্রিয়া অনেকটাই গুছিয়ে আনা হয়েছে। এমপিও নীতিমালার খসড়া প্রস্তুত। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের জন্য তা পাঠানো হয়েছে। এমপিওভুক্তির জন্য ইতোমধ্যে মাদ্রাসার তথ্য সংগ্রহ শুরু হয়েছে।
মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, দেশে অনুদানভুক্ত ১৫১৯টি স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা এবং সহকারী শিক্ষকরা তিন হাজার টাকা করে অনুদান পেয়ে থাকেন। এই যৎসামান্য অর্থ আবার ছাড় হয় তিন মাস অন্তর।
এর বাইরে দেশে আরও ৫ হাজার ৯৩২টি স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা রয়েছে, যেগুলো সরকারি কোনো অনুদান পায় না।
ইসলামি ও সাধারণ শিক্ষার সমন্বয়ে যে শিক্ষাব্যবস্থা রয়েছে, সেই আলিয়া মাদ্রাসা পদ্ধতিতে পঠন-পাঠন হয় এবতেদায়ী মাদ্রাসায়। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সমমান এই ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গোড়াপত্তন হয় ১৯৮৪ সালে। এরপর চার দশক কেটে গেলেও শিক্ষকরা মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।
শিক্ষকরা বলছেন, তাদের অনেকেই কর্মজীবন শেষ করেছেন রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা ছাড়াই। অথচ ১৯৭৩ সাল থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ হচ্ছে; ২০১৩ সালেও ২৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারি হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে জাতীয়করণের দাবি জানিয়ে আসা স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষকরা জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলেন দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর। এর মধ্যে তাদের এক পদযাত্রায় পুলিশ লাঠিপেটা ও জলকামান ব্যবহার করে।
বয়োজ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের পিটুনির সেই ঘটনা আলোড়ন তোলে। তারই একপর্যায়ে গত ২৮ জানুয়ারি এবতেদায়ী মাদ্রাসাকে পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণের ঘোষণা দেন মাদ্রাসা অনুবিভাগের যুগ্ম সচিব এস এম মাসুদুল হক।
অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে মাসুদুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অনুদানভুক্ত এবতেদায়ী মাদ্রাসাগুলো এমপিওভুক্ত করতে অর্থ মন্ত্রণালয়ে আমরা প্রস্তাব পাঠিয়েছি।
“এজন্য আমাদের কিছু টাকা প্রয়োজন, সেটিও অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে চাওয়া হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে আমরা শিক্ষকদের বেতন ছাড়ের প্রক্রিয়া শুরু করব।”
অনুদানভুক্ত ১৫১৯টি এবতেদায়ী মাদ্রাসার তথ্য পাঠাতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়েছে মাদ্রাসা অনুবিভাগ।
সেখানকার অতিরিক্ত সচিব সাইফুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মাদ্রাসাগুলোর তথ্য সংগ্রহ চলছে। সরকারের সিদ্ধান্ত পেলে দ্রুততম সময় যাতে তাদের এমপিওভুক্তির কাজ শুরু করা যায়, সেজন্যই তথ্য সংগ্রহ করে রাখা হচ্ছে।”
নীতিমালার খসড়া প্রস্তুত
এবতেদায়ী মাদ্রাসাগুলোর জনবল কাঠামো ও বেতনভাতার জন্য ২০১৮ সালে প্রথম নীতিমালা করেছিল কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ। যদিও সেই নীতিমালা অনুযায়ী শিক্ষকরা সুযোগ-সুবিধা পাননি।
এখন নতুন করে যে নীতিমালার খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাদ্রাসা বিভাগের যুগ্ম সচিব এস এম মাসুদুল হক।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নীতিমালাটি অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়া গেলে নীতিমালাটি জারি হবে।”
এ নীতিমালায় এবতেদায়ী প্রধানদের বেতন ১১তম গ্রেডে এবং এবতেদায়ী শিক্ষক, ক্বারী ও মৌলভী পদের বেতন ১৩তম গ্রেডে বেতন দেওয়ার প্রস্তাব করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
মাসুদুল হক জানান, প্রতিটি এবতেদায়ী মাদ্রাসায় সাতটি পদ থাকবে। এর মধ্যে একটি পদ এবতেদায়ী প্রধানের এবং সহকারী শিক্ষকের পদ পাঁচটি। তার মধ্যে দুজনের পদবি শিক্ষক, একজনের মৌলভী এবং আরেকটি পদের নাম ক্বারী। বাকি পদটি অফিস সহায়কের, যার বেতন হবে ২০তম গ্রেডে।
তথ্য সংগ্রহ শুরু
বর্তমানে যেসব এবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকরা যৎসামান্য অনুদান পেয়ে থাকেন, সেই ১৫১৯টি প্রতিষ্ঠানের তথ্য পাঠাতে গত ৫ মে জেলা প্রশাসকদের চিঠি দিয়েছে মাদ্রসা অনুবিভাগ।
সেখানকার সিনিয়র সহকারী সচিব আসগর আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ মাদ্রাসাগুলো জন্য কিছু করার চেষ্টা করা হচ্ছে, সেজন্যই তথ্য সংগ্রহ। মাদ্রাসাগুলোর খুব বেশি তথ্য তো আমাদের কাছে নেই।”
অতিরিক্ত সচিব সাইফুল ইসলাম বলেন, “তাদের এমপিও নীতিমালায়- এমপিওভুক্তির ক্রাইটেরিয়া বা শর্ত ঠিক করা হবে। কোন কোন ক্রাইটেরিয়া পূরণে তাদের এমপিওভুক্ত করা যায়, সে বিষয় নির্ধারণ করতেও মাদ্রাসাগুলোর তথ্য প্রয়োজন।”
জেলা প্রশাসকদের কাছে পাঠানো চিঠিতে মাদ্রাসাগুলোর এডুকেশনাল ইনস্টিটিউট আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (ইআইআইএন), প্রথম অনুদান পাওয়ার তারিখ, জমির পরিমাণ, এলাকা, শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, শ্রেণিভিত্তিক তিন বছরের শিক্ষার্থীর তথ্য, নিকটতম মাদ্রাসার দূরত্ব, ব্যাংক হিসাবের তথ্য, সংরক্ষিত তহবিল ও অবকাঠামোর তথ্য চাওয়া হয়েছে চিঠিতে।
বিলম্বে ক্ষোভ শিক্ষক নেতাদের
গত ৫ মার্চ দায়িত্ব ছাড়ার আগে এবতেদায়ী মাদ্রাসাগুলো এমপিওভুক্তির প্রস্তাবে অনুমোদন দেন সাবেক শিক্ষা ও বর্তমান পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। এরপর সেই প্রস্তাব প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো হয়।
শিক্ষক সংগঠন এবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষা উন্নয়ন বাংলাদেশের মহাসচিব রেজাউল হক গত ২৬ এপ্রিল ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বলেন, “গত ২৮ জানুয়ারি এবতেদায়ী মাদ্রাসা সরকারিকরণের যে ঘোষণা তা বাস্তবায়ন করতে হবে। গত ৫ মার্চ সাবেক শিক্ষা উপদেষ্টা এবতেদায়ী মাদ্রাসা এমপিওভুক্ত করার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছেন।
“এমপিওভুক্ত (স্কুল-কলেজের) শিক্ষকদের সুবিধা বাড়ানোর কথাও বলেছিলেন। সেটির কাজ এগিয়ে গেলেও এবতেদায়ী মাদ্রাসা এমপিওভুক্তির কাজ হয়নি কেন? ৩১ মার্চের মধ্যে এবতেদায়ী মাদ্রাসার নীতিমালা জারির কথা ছিল, কিন্তু তা হল না কেন?”
মে মাস এবতেদায়ী মাদ্রাসা এমপিওভুক্তি শুরু করার কথা ছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, “পরে জুন ও জুলাই মাসে সব নিবন্ধিত মাদ্রাসা এমপিওভুক্ত হওয়ার কথা ছিল; কিন্তু তা হয়নি। ২৮ জানুয়ারি স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণের ঘোষণা এসেছিল। কিন্তু তার সঙ্গে সংযুক্ত এবতেদায়ী মাদ্রাসা যুক্ত করা হয়েছে।
“তাই মোট ২৭ হাজার মাদ্রাসা জাতীয়করণে সরকার গড়িমসি করছেন। স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসার সঙ্গে জাতীয়করণের প্রস্তাবে সংযুক্ত এবতেদায়ী মাদ্রাসা কারা যুক্ত করলো, তা আমরা জানতে চাই।”
যে এবতেদায়ী মাদ্রাসার সঙ্গে একই নামে, একই ক্যাম্পাসে দাখিল (মাধ্যমিক পর্যায়) কিংবা আলিম বা ফাজিল (উচ্চ পর্যায়ের) মাদ্রাসা রয়েছে, সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংযুক্ত এবতেদায়ী মাদ্রাসা হিসেবে পরিচিত।
স্বতন্ত্র এবতেদায়ীর শিক্ষক সংগঠনগুলোর মোর্চা স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক ঐক্যজোটের মহাসচিব শামসুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রথমে যখন প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়, সেখানে সংযুক্ত এবতেদায়ী মাদ্রাসাগুলোর তথ্যও পাঠানো হয়।
“কিন্তু প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে ফাইল কোয়ারি দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। এ প্রক্রিয়ায় অনেকটা সময় লেগে যায়। পরে শুধু স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসার ফাইল পাঠানো হয়।”
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা এমপিওভুক্তি ও ধাপে ধাপে সরকারিকরণে সরকার আশ্বাস দিলেও সংযুক্ত মাদ্রাসা নিয়ে কোনো ঘোষণা ছিল না।
“কিন্তু কোনো কোনো আমলা সংযুক্ত এবতেদায়ী মাদ্রাসাগুলোকে তার সঙ্গে যোগ করে, ফলে টাকার অংক অনেক বড় হয়ে যায়, ফাইল অনুমোদনের প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হয়। এমনটা না হলে মে মাসের শুরুতেই আমরা এমপিও পেতাম।”
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে যুগ্ম সচিব এস এম মাসুদুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “স্বতন্ত্র ও সংযুক্ত এবতেদায়ী মাদ্রাসাগুলো এমপিওভুক্ত করতে প্রস্তাব প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো হয়।
“সেটি ফেরত পাঠিয়ে বলা হয়েছে, উপদেষ্টার অনুমোদন নিয়ে তা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর জন্য। সেভাবেই কাজ চলছে।”
মে মাসের বেতন থেকেই পাবেন শিক্ষকরা
স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক ঐক্যজোটের মহাসচিব শামসুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা আমাদের আশ্বাস দিয়েছিল- মে মাস থেকে জাতীয় বেতন স্কেলে বেতন দেওয়ার। কিন্তু মে মাস চলে গেছে শিক্ষকরা বেতন পাননি।
“দীর্ঘ ৪০ বছর বঞ্চিত এ মাদ্রাসাগুলোর শিক্ষকরা। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষকরা যে অনুদান পান, তাতে কিছুই হয় না। আমরা চাই- মে মাস থেকেই যেন শিক্ষকদের বেতন দেওয়া হয়।”
শিক্ষকরা মে মাস থেকেই সুযোগ-সুবিধা পাবেন জানিয়ে যুগ্ম সচিব এস এম মাসুদুল হক বলেন, “একটু দেরি হলেও মে মাসের বেতন থেকেই শিক্ষকদের দেওয়ার চেষ্টা করছি আমরা। শিক্ষকদের বেতন দিতে ৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা লাগবে।
“আমাদের আগের বাজেটের উদ্বৃত্ত কিছু আছে। আর মে মাসের বেতনের জন্য ৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে চাওয়া হয়েছে।”
এমপিওভুক্তির জন্য নতুন আবেদন লাগবে না
এমপিওভুক্ত হতে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা বা কারিগরি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের নতুন করে আবেদন করার যে বিধান রয়েছে, তা অনুদানভুক্ত এবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষকদের বেলায় দরকার নেই বলে জানিয়েছেন যুগ্ম সচিব এস এম মাসুদুল হক।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অনুদানভুক্ত মাদ্রাসাগুলোর বেতন পাঠানোর তথ্য অধিদপ্তরের (মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর) কাছে আছে। সেক্ষেত্রে শিক্ষকদের নতুন করে আবেদন পাঠাতে হবে না।
“আমরা মাদ্রাসাগুলোর তথ্য সংগ্রহ করছি। সেগুলো ক্রস চেক করে শিক্ষকদের বেতন পাঠিয়ে দেওয়া হবে।”
মাসে লাগবে ১০ কোটি টাকা
অনুদানভুক্ত স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসার সংখ্যা ১৫১৯টি হলেও বর্তমানে অনুদান পাচ্ছেন ১৩৩৮টি মাদ্রাসার চার হাজার ৪৩৭ জন শিক্ষক। ১৮১টি স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকরা অনুদান নেন না এবং সেগুলোর বেশিরভাগই নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত হয়ে থাকে।
বর্তমানে চার হাজার ৪৩৭ জন শিক্ষককে অনুদান দিতে মাসে ১ কোটি ৪৮ লাখ ৩৭ হাজার টাকার প্রয়োজন হয়। এমপিওভুক্ত হলে সরকারকে প্রতিমাসে গুনতে হবে ৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।
জাতীয়করণ কবে?
স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান কাজী মোখলেছুর রহমান সম্প্রতি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলন করেছিলাম। মন্ত্রণালয়ও বলেছিল, মাদ্রাসাগুলো এমপিওভুক্ত করে পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণ করা হবে।
“অর্থবছরের মাঝামাঝি এসে তারা মাদ্রাসাগুলো এমপিওভুক্তির যে উদ্যোগ নিয়েছেন, সেজন্য সাধুবাদ জানাই। তবে আমাদের দাবি জাতীয়করণই থাকবে। সরকার যেন পর্যায়ক্রমে মাদ্রাসাগুলো জাতীয়করণের উদ্যোগ নেয়, সে দাবি জানাচ্ছি।”
এ বিষয়ে যুগ্ম সচিব এস এম মাসুদুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা মাদ্রাসাগুলোকে এমপিওভুক্ত করতে চাচ্ছি। তাহলে জবাবদিহিতা আসবে। এখন তো (স্বতন্ত্র এবতেদায়ী) মাদ্রাসাগুলোতে তেমন তদারকি নেই, কিছু কিছুর অস্তিত্ব নেই। ধাপে ধাপে এমপিওভুক্তির পর এ মাদ্রাসাগুলো জাতীয়করণের প্রস্তাব পাঠানো হবে উপদেষ্টা পরিষদে।
“এ জন্য আমাদের একটা আইন করা লাগতে পারে। আমরা ইতোমধ্যে ২০১৩ সালে একযোগে ২৬ হাজার প্রাইমারি স্কুল সরকারিকরণের নথি সংগ্রহ করেছি। ওই অনুযায়ী, আমাদের হয়তো দুই পৃষ্ঠার একটা আইন করা লাগবে।”
এক প্রশ্নের উত্তরে মাসুদুল হক বলেন, প্রথমে এমপিওভুক্ত করা হবে অনুদানভুক্ত ১৫১৯টি এবতেদায়ী মাদ্রাসাকে। এরপর এসব প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণের প্রক্রিয়া শুরু হবে।
আরও খবর-
এবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণের ঘোষণা দ্রুত বাস্তবায়ন দাবি
এমপিওভুক্ত হচ্ছে দেড় হাজার এবতেদায়ী মাদ্রাসা, কত বেতন পাবেন শিক্ষকরা?