Published : 19 Jun 2025, 10:21 AM
কোচ পরিবর্তন হলেও রেয়াল মাদ্রিদের পারফরম্যান্সে পরিবর্তন নেই। শাবি আলোন্সোর কোচিংয়ে প্রথম ম্যাচে হারাতে পারল না তারা সৌদি আরবের ক্লাব আল-হিলালকে। হতাশাজনক শুরুর পর রেয়ালের নতুন কোচ বলছেন, গুছিয়ে নিতে তার সময় লাগবে কিছু, রাতারাতি পরিবর্তন সম্ভব নয়।
ক্লাব বিশ্বকাপে ‘এইচ’ গ্রুপের ম্যাচে বুধবার ১-১ গোলে ড্র করেছে রেয়াল মাদ্রিদ ও আল-হিলাল।
আলোন্সোর মতো প্রতিপক্ষ কোচ সিমোনো ইনজাগিরও এটি ছিল আল-হিলালের দায়িত্বে প্রথম ম্যাচ।
দুটি গোলই হয় প্রথমার্ধে। ম্যাচের একদম শেষ সময় জেতার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিল রেয়াল। কিন্তু ম্যাচজুড়ে বিবর্ণ থাকা ফেদে ভালভের্দে ব্যর্থ হন পেনাল্টিতেও। তার শট ডানদিকে ঝাঁপিয়ে ঠেকান আল-হিলালের গোলকিপার ইয়াসিন বোনু।
জ্বরের কারণে মাঠে নামতে পারেননি কিলিয়ান এমবাপে। তার বদলে তরুণ অনভিজ্ঞ ফরোয়ার্ড গন্সালো গার্সিয়াকে বেছে নেন কোচ আলোন্সো। দলকে এগিয়ে দেন তিনিই।
মায়ামির হার্ড রক স্টেডিয়ামে ৩৪তম মিনিটে গোল করেন রেয়ালের একাডেমি থেকে উঠে আসা এই ফুটবলার। দুর্দান্ত একটি পাল্টা আক্রমণ থেকে রদ্রিগোর দারুণ পাস ধরে গোলকিপারের ওপর দিয়ে আলতো করে জালে পাঠান ২১ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড।
সাত মিনিট পর সমতায় ফেরে আল-হিলাল। তাদের ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড মাহকুজ লেওনাহদুকে বক্সের ভেতর ফেলে দেন রেয়ালের ডিফেন্ডার রাউল আসেন্সিও। পেনাল্টি থেকে সমতা ফেরান রুবেন নেভেস।
মাঝ বিরতির পর শুরুতেই গোলের কাছাকাছি গিয়েছিল রেয়াল। ভিনিসিউস জুনিয়রের পাস থেকে বদলি নামা আর্দা গিলেরের শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। আল-হিলাল পারেনি বল ক্লিয়ার করতে। আবার ভিনিসিউসের ক্রস থেকে হেড করেন গন্সালো। কোনোরকেম তা ঠেকান গোলকিপার বোনু।
শেষ সময়ে রেয়াল গোল করতে পারেনি পেনাল্টি থেকেও।
রেয়ালের হয়ে অভিষেকে এ দিন দারুণ খেলতে পারেননি লিভারপুল থেকে আসা ডিফেন্ডার ট্রেন্ট অ্যালেকজ্যান্ডার-আর্নল্ড। পরে তাকে তুলেও নেওয়া হয়। আরেক অভিষিক্ত ডিফেন্ডার ডিন হাউসেন অবশ্য ভালো খেলে উজ্জ্বল সম্ভাবনার আভাস দিয়েছেন।
ম্যাচজুড়ে বেশির ভাগ সময় রেয়ালকে ছন্নছাড়া ও ধারহীন মনে হয়েছে। কার্লো আনচেলত্তির কোচিংয়ে হতাশাজনক মৌসুমের ছায়া যেন সরেনি এখনও। ম্যাচ শেষে কোচ আলোন্সো বললেন, এত দ্রুত সবকিছু হয়ে যাবে না।
"প্রথমার্ধের চেয়ে দ্বিতীয়ার্ধে অনেক ভালো খেলেছি আমরা। প্রথমার্ধে অনেক ঘাটতি ছিল। সমন্বয় ছিল না। এটা নিয়ে কথা বলেছি আমরা। এরপর দল যেভাবে সাড়া দিয়েছে (দ্বিতীয়ার্ধে), আমার তা ভালো লেগেছে। ছন্দ ভালো ছিল, নিয়ন্ত্রণ রাখতে পেরেছি, প্রতিপক্ষের অর্ধে বেশি খেলতে পেরেছি। ইতিবাচক দিকগুলো সঙ্গী করে সামনে তাকিয়ে উন্নতি করতে হবে আমাদের। এটা একটা প্রক্রিয়া।"
“আমি জানতাম, সময় কিছুটা লাগবেই। সবকিছুর জন্য সময় লাগে। কিছু ব্যাপার বদলাতে হবে আমাদের, কিছু শোধ হবে এবং আমরা তা করে যাব। সবকিছুর জন্য সময় লাগে। স্রেফ ৯ দিন কাজ করেছি এখানে, কিছু ফুটবলারকে পেয়েছি স্রেফ ৩টি ট্রেনিং সেশনে। এত দ্রুতই সবকিছু হয়ে যাবে না।”
গোলকিপার থিবো কর্তোয়া বললেন, আনচেলত্তির কোচিংয়ের ঘরানা থেকে দলের বেরিয়ে আসতে সময় লাগবে কিছুটা।
"নতুন কোচ অবশ্যই চান তার মতো করে দলকে খেলাতে, রক্ষণ সামলানো ও আক্রমণের ধরন তার ভিন্ন। আমরা আনচেলত্তির কোচিংয়ে চার বছর খেলেছি, স্বয়ংক্রিয়ভাবেই তা কিছুটা থাকবে এখনও। সেটাকে আমাদের বদলাতে হবে নতুন কোচের চাওয়া অনুযায়ী।"
"সেটা চার দিনেই সম্ভব নয়। আমরা চেষ্টা করছি। ভিডিও দেখছি, অনেক কথা বলছি এবং অবশ্যই আরও ভালো করব। প্রথম ম্যাচ থেকে আমরা শিখব অনেক কিছু।"
প্রতিপক্ষ কোচ ইনজাগি স্বাভাবিকভাবেই ছিলেন উচ্ছ্বসিত।
“খুব ভালো একটি ম্যাচ ছিল। ছেলেরা দারুণ গোছানো ফুটবল খেলেছে এবং দারুণ মানসিকতা মেলে ধরেছে এমন একটি দলের বিপক্ষে, যাদেরকে আমি মনে করি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী তিন দলের একটি। ছেলেদের কাছে এর চেয়ে বেশি কিছু আর চাইতে পারতাম না।”
রেয়াল মাদ্রিদের পরের ম্যাচ রোববার মেক্সিকোর ক্লাব পাচুকার সঙ্গে। আল-হিলাল একই দিনে খেলবে সালসবুর্কের বিপক্ষে।