Published : 19 Jun 2025, 07:14 PM
চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে যে পতন শুরু হয়েছে, তা থেকে এখনও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি দেশের প্রধান পুঁজিবাজার— ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)।
এই চার মাসের বেশির ভাগ কার্যদিবসেই লেনদেন ছিল ৪০০ কোটি টাকার নিচে; আর সূচক ঘুরপাক খাচ্ছে চার হাজার পয়েন্টের ঘরে।
বৃহস্পতিবার সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে প্রধান সূচক— ডিএসইএক্স কমেছে ২২ পয়েন্ট। লেনদেন কমেছে প্রায় ২৩ কোটি টাকা।
আগের দিন সূচক ছিল ৪ হাজার ৭৭৬ পয়েন্ট। শেয়ার হাতবদল হয় ৩২৭ কোটি ৮৩ লাখ টাকার।
পুঁজিবাজারে এর আগে বড় পতন দেখা যায় কোভিড মহামারীর সময়। ওই সময় শেয়ারের ওপর ‘ফ্লোর প্রাইস’ আরোপ করে মহামারীর প্রভাব সামলানোর চেষ্টা করে বিএসইসির তৎকালীন চেয়ারম্যান।
ফ্লোর প্রাইস থাকায় সূচক না কমলেও লেনদেন খরায় ভুগতে থাকে পুঁজিবাজার। ধীরে ধীরে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার পরও লেনদেনের খরা কাটেনি।
এর মধ্যে বাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যায় গত বছরের ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর। তবে মাস খানেক পরেই নিম্নমুখী প্রবণতায় চলে যায় পুঁজিবাজার, যা এখনও ঠিক হয়নি।
এর মধ্যে লেনদেনের পরিমাণ কমতে কমতে গত ১০ এপ্রিল তিনশ কোটি টাকার ঘরে নেমে যায়।
সূচকও কমতে কমতে গত ২৪ এপ্রিল পাঁচ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে যায়। তারপর থেকে সূচক আর পাঁচ হাজারের ঘরে ফিরতে পারেনি।
টানা পতন হলেও বাজার আর নিচে নামার সুযোগ নেই বলে মনে করেন ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, ‘‘অর্থনীতির অনেক সূচকই এখন ভালো। নির্বাচনের বিষয়টি সুরাহা হয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে।
“বাজার পতনের বটম লাইনে চলে গেছে, আর কত যাবে। যাওয়ার সুযোগ নেই। এখন টার্ন এরাউন্ড করবে। আমরা আশাবাদী বাজার ভালো হতে শুরু করেছে।’’
তার মতে, দীর্ঘ সময় পতনের ধারায় থাকায় লেনদেনও কমছিল। এখন সূচক বৃদ্ধির সঙ্গে লেনদেনের পরিমাণও একটু একটু করে বাড়ছে।
বৃহস্পতিবার সকালে বড় উত্থান দিয়ে শুরু হওয়া লেনদেন ২৬ মিনিটে মূল্য সূচকে ২৭ পয়েন্ট যোগ করেছিল আগের দিনের চেয়ে।
এরপরই বিক্রয় চাপ বাড়লে বাড়তি সূচকের সবটাই হারাতে শুরু করে। শেষ বেলায় আগের দিনের চেয়ে ২২ পয়েন্ট হারিয়ে সূচক ঠেকে ৪ হাজার ৭৫৪ পয়েন্টে।
এদিন ৩৯৮টি কোম্পানির মধ্যে দর বাড়ে ৭১টির, কমে ২৫৮টির। আগের দরে হাতবদল হয় ৬৯টি কোম্পানির শেয়ার।
একক খাত হিসেবে বস্ত্র খাতের কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে সবচেয়ে বেশি।
সবচেয়ে বেশি শেয়ার হাতবদল হয় খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে; ৪৬ কোটি ২০ লাখ টাকা (১৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ)।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ব্যাংক খাতে লেনদেন হয় ১২ দশমিক ৩৪ শতাংশ। ১২ দশমিক ১৪ শতাংশ লেনদেন হয় ওষুধ ও রসায়ন খাতে।
এদিন সবচেয়ে বেশি দর বাড়ে সেন্ট্রাল দেশ গার্মেন্টস, স্টাইল ক্র্যাফট ও আলহাজ টেক্সটাইলের। সবচেয়ে বেশি দর হারায় শ্যামপুর সুগার, আনলিমা ইয়ার্ন ও সিলকো ফার্মাসিউটিক্যালস।