Published : 27 Dec 2024, 03:28 PM
মান্তা রে নামের এক দৃষ্টিনন্দন পাখির মতো গতির মাছ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এমন এক রোবট ডিজাইন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা, যা পানিতে দক্ষতার সঙ্গে চলতে পারে বলে দাবি তাদের।
গবেষকরা বলছেন, জটিল ও নির্দিষ্ট কাঠামোহীন পরিবেশে কার্যকর আমাদের এই নরম ও সাঁতারের জন্য ডিজাইন করা রোবটটি। বিশেষ করে গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধান ও পানির নীচে পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করতে কার্যকর হতে পারে এটি।
নতুন এই নরম রোবটটি প্রতি সেকেন্ডে তার দেহের ৬.৮ গুন দীর্ঘ পথ পেরোতে পারে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট কসমস।
“আমাদের আগের তৈরি মডেলটি কেবল পানির উপরিভাগে সাঁতার কাটতে পারত,” বলেছেন এ গবেষণার লেখক ও ‘নর্থ ক্যারোলাইনা স্টেট ইউনিভার্সিটি’র মেকানিক্যাল অ্যান্ড অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জি ইয়িন।
“আমাদের এই নতুন রোবটটি পানির কলাম জুড়ে উপরে ও নীচে সাঁতার কাটতে পারে।”
গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’-এ।
রোবটটির পাখা মান্তা রে মাছের পাখনার মতো আকৃতির ও নমনীয়, যেটি এর সিলিকন দেহের সঙ্গে আটকে আছে। এর মধ্যে একটি চেম্বার রয়েছে, যা বাতাস ভরে পাম্প করা যায়।
একটি ছোট এয়ার টিউবের মাধ্যমে রোবটের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে পাওয়ার সাপ্লাই ও এয়ার পাম্প যন্ত্রটিকে, যা পানির পৃষ্ঠে ভাসতে থাকে।
“আমরা মান্তা রে মাছের সাঁতারের গতি পর্যবেক্ষণ করেছি। ফলে রোবটটি পানির পৃষ্ঠের দিকে সাঁতার কাটবে নাকি নীচের দিকে সাঁতার কাটবে বা পানির কলাম জুড়ে নিজের অবস্থান বজায় রাখবে– তা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি আমরা,” বলেছেন এ গবেষণার সহ-লেখক ও ‘ইউনিভার্সিটি অফ ভার্জিনিয়া’র পিএইচডি শিক্ষার্থী জিয়াচেং গুয়ো।
“মান্তা রে সাঁতারের গতি পরিবর্তন করে নিজেদের চলার গতিপথ পরিবর্তন করে। রোবটটি তৈরির ক্ষেত্রে মাছের এই ওপরনীচে গতিবিধি নিয়ন্ত্রণের কৌশল রপ্ত করেছি আমরা।”
রোবটের মাধ্যমে তৈরি পানির নিম্নগামী জেট এর ঊর্ধ্বমুখী জেটের চেয়ে বেশি শক্তিশালী, বলেছেন এ গবেষণার সহ-লেখক ও ‘ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া’র মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ইউয়ানহাং ঝু।
“রোবটটি যদি দ্রুত এর পাখা ঝাপটাতে পারে তবে এটি উপরের দিকে উঠবে। কিন্তু আমরা যদি অ্যাকচুয়েশন ফ্রিকোয়েন্সির গতি কমিয়ে দিই তাহলে এটি পাখনা ঝাপটানোর মাঝখানের সময়ে খানিকটা ডুবে যাবে, যা রোবটটিকে নিচের দিকে ডুব দিতে বা একই গভীরতায় সাঁতার কাটতে সাহায্য করে।”
গবেষকরা বলছেন, পানির ট্যাঙ্কের পৃষ্ঠ ও মেঝেতে বিভিন্ন বাধা পেরিয়ে যেতে পারে রোবটটি। নিজস্ব বাতাস ও বিদ্যুতের উৎস’সহ পানির পৃষ্ঠে একটি পেলোডও বহন করতে পারে এটি।
“এর নকশায় প্রকৌশল বিদ্যার অসম্ভব জটিল বিষয় ব্যবহৃত হয়েছে। তবে এর মৌলিক বিভিন্ন ধারণা মোটামুটি সহজ,” বলেছেন ইয়িন।
“কেবল একটি একক অ্যাকচুয়েশন ইনপুট দিয়ে পানির মধ্যে এক জটিল উল্লম্ব পরিবেশে নেভিগেট করতে পারে আমাদের এই রোবটটি।”