Published : 24 May 2025, 04:49 PM
ভিয়েতনামে মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রাম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
দেশটির সরকারি এক নথি বলছে, বিভিন্ন টেলিযোগাযোগ কোম্পানিকে টেলিগ্রাম বন্ধ করে দিতে বলেছে ভিয়েতনামের প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। কারণ অ্যাপটির ব্যবহারকারীরা অপরাধ করলে সেটা ঠেকাতে সাহায্য করছে না টেলিগ্রাম।
ভিয়েতনামের প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের টেলিযোগাযোগ বিভাগের উপ-প্রধানের স্বাক্ষরিত ২১ মে’র এই নথিতে দেশটির বিভিন্ন টেলিকম সেবাদাতা কোম্পানিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে টেলিগ্রাম বন্ধে ব্যবস্থা নিতে এবং সেই ব্যবস্থার রিপোর্ট ২ জুনের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে।
মন্ত্রণালয় টেলিযোগাযোগ পরিষেবা প্রদানকারীদের “ভিয়েতনামে টেলিগ্রামের কার্যকলাপ বন্ধে ব্যবস্থা ও সমাধান নিতে” বলেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।
নথিতে বলা হয়েছে, দেশের সাইবার নিরাপত্তা বিভাগের পক্ষ থেকে এই পদক্ষেপ নিচ্ছে মন্ত্রণালয়। দেশটির পুলিশ বলেছে, ভিয়েতনামে থাকা টেলিগ্রামের ৯ হাজার ছয়শ চ্যানেল ও গ্রুপের মধ্যে ৬৮ শতাংশই আইন ভঙ্গ করেছে। এসব অবৈধ কার্যকলাপের মধ্যে রয়েছে প্রতারণা, মাদক পাচার ও “সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সন্দেহভাজন নানা ঘটনা”।
প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নথির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, ফৌজদারি তদন্তের অংশ হিসেবে টেলিগ্রামের কাছে ব্যবহারকারীর তথ্য চাইলে তা সরকারের কাছে দিতে অস্বীকার করেছে তারা। এ কারণেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছে মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধে কোনও সাড়া দেয়নি টেলিগ্রাম ও ভিয়েতনামের প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।
ভিয়েতনামের পুলিশ ও রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম বারবার সতর্ক করে বলেছে, অপরাধ, প্রতারণা ও তথ্য চুরির ঝুঁকি রয়েছে অ্যাপটির চ্যানেল ও গ্রুপে।
গোটা বিশ্বে ফেইসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও উইচ্যাটের মতো অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অ্যাপের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে চলেছে টেলিগ্রাম, যার ব্যবহার এখনও চলছে ভিয়েতনামে।
রয়টার্স লিখেছে, মিডিয়ার উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ চালায় ও বিরোধিতা খুব কমই মেনে নেয় ভিয়েতনামের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি। তারা বারবার ফেইসবুক, গুগলের ইউটিউব ও টিকটকের মতো বিভিন্ন কোম্পানিকে অনুরোধ করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা করতে, যাতে ‘টক্সিক’ বা ক্ষতিকর, আপত্তিকর, মিথ্যা ও রাষ্ট্রবিরোধী নানা কনটেন্ট বন্ধ করা যায়।
নথিতে বলা হয়েছে, পুলিশের তথ্য অনুসারে টেলিগ্রামে “এমন অনেক গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে, যেখানে হাজার হাজার সদস্য রয়েছেন, যেগুলো বিরোধী ও সরকারবিরোধী ব্যক্তিরা চালাচ্ছে ও সরকারবিরোধী তথ্য ছড়াচ্ছেন তারা।”
গোটা বিশ্বে প্রায় একশ কোটি ব্যবহারকারী রয়েছে টেলিগ্রামের। সম্প্রতি নিরাপত্তা ও তথ্য ফাঁস নিয়ে নানা দেশে বিতর্কের মুখে পড়েছে অ্যাপটি। টেলিগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা পাভেল দুরভকে গত বছর কিছু সময়ের জন্য আটক করেছিল ফ্রান্স।